Kamduni Gang Rape: "ব্যর্থ মমতার সরকার, টাকার বিনিময়ে উকিল বিক্রি হয়ে গিয়েছে", দাবি মৌসুমী-টুম্পার
শুভেন্দু অধিকারী।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কামদুনি গণধর্ষণ ও খুনের (Kamduni Gang Rape) মামলায় নির্যাতিতার পরিবারকে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার ক্ষেত্রে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। কামদুনিকাণ্ডে হাইকোর্টের রায় 'সামগ্রিকভাবে প্রত্যাশিত নয়', বলে জানালেন শুভেন্দু। নির্যাতিতার পরিবারের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে নিরাপত্তা দাবি করলেন তিনি।
শুভেন্দু (Suvendu Adhikari) বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের একজন নাগরিক হিসাবে এই রায়কে স্বাগত জানানোর কোনও প্রশ্ন নেই। এই রায় অপ্রত্যাশিত। আমি কামদুনির (Kamduni Gang Rape) বোনেদের বলব, রায়ের কপি তুলে তাদের সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া উচিত। সেক্ষেত্রে তাঁরা যদি রাজ্যের বিরোধী দলনেতার আইনি বা আর্থিক সাহায্য যদি চান, আমি সম্পূর্ণ তৈরি। অনেক প্রবীণ আইনজীবীর সঙ্গে আমার যোগাযোগ রয়েছে, অনুরোধ করলে তাঁরাও বিনা পারিশ্রমিকে এই মামলা লড়তে পারেন।’’ রাজ্য সরকারের কাছে বিরোধী দলনেতার অনুরোধ, ‘‘অবিলম্বে নির্যাতিতার পরিবারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হোক। কারণ খালাস পেয়ে যাওয়ার পরে এই অপরাধীরা, বোনদের পরিবারের সার্বিক ক্ষতি করবে না, এই গ্য়ারান্টি কেউ দিতে পারে না। তাদের আচরণ কোনও সভ্য, সুস্থ মানুষের মতো নয়।’’
আরও পড়ুন: সিকিম বিপর্যয়ের পর খোঁজ নেই তথ্য প্রযুক্তি কর্মী সহ তিন বন্ধুর, দুশ্চিন্তায় পরিবার
প্রসঙ্গত, কামদুনিকাণ্ডে (Kamduni Gang Rape) 'লঘু দণ্ড' দিয়েছে আদালত, বলে দাবি অভিজ্ঞ মহলের। নিম্ন আদালতে দোষীর ফাঁসির সাজা হয়েছিল, তাকে বেকসুর খালাস করার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। ফাঁসির বদলে আমৃত্যু কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বাকি দু'জনকে। এই রায় প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দাবি, বিচারের নামে প্রহসন হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া অপরাধীর বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্য প্রমাণ আদালতে পেশ করা পুলিশের কাজ। তা ঠিকমতো হয়নি। মহিলা মোর্চার তরফে আন্দোলনে নামার পাশাপাশি সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার চিন্তাভাবনার কথাও শোনান সুকান্ত।
বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের বক্তব্য, দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তিই অনেকে চেয়েছিলেন। ফলে এই রায়ে সকলে খুশি হবেন না। শঙ্কর ঘোষ বলেন, “আদালতের রায় যেহেতু, এ নিয়ে কিছু না বলে শুধু বলতে চাই বিচার প্রক্রিয়া বিশেষ করে পুলিশি তদন্তের ক্ষেত্রে কোনও সক্রিয়তার অভাব রয়ে গিয়েছিল কি? যার কারণে আজকে এই ধরনের নৃশংস অপরাধ সংগঠিত করার পরও কেউ কেউ খালাস হচ্ছে? এটা মানুষের মনে নিশ্চিতভাবে প্রশ্ন তুলবে।”
আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির কথায়, “পুলিশের এক প্রকার নিষ্ক্রিয়তার কারণেই এই রায়টা হল। তৃণমূল যে অভিযুক্তদের পক্ষে মিছিল করেছে, পুলিশের কি আর সাহস হবে তাদের বিরুদ্ধেই ঠিকমতো চার্জশিট গঠন করার, প্রমাণ ঠিকমতো দাখিল করার। পুলিশের ভিতরে ঢুকলে অনেক কিছুই বোঝা যায়। আমি তো ৪২ দিন জেলে ছিলাম। লকআপে থেকে অনেক জ্ঞানই অর্জন করেছি। পুলিশ চাইলে অনেক কিছুই করতে পারে।”
টুম্পা কয়াল বলেন, 'এখনও পর্যন্ত ১৪ জন আইনজীবী আমাদের মামলা থেকে সরে গিয়েছেন। তখনই আমরা আন্দাজ করেছিলাম এমন কিছু হবে। সরকার আমাদের কথা দিয়েছিল যে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে। একদিকে সরকার আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, অন্যদিকে দোষীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছে। কারণ সরকারি আইনজীবী একের পর এক টাকা নিয়ে তাঁরা বিক্রি হয়ে গিয়েছেন।'
চিৎকার করে মৌসুমী বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আপনি শুনতে পাচ্ছেন, আপনিই কামদুনি গিয়ে বলেছিলেন, ১৫ দিনে চার্জশিট আর ৩০ দিনে সাজা ঘোষণা, সরকারি উকিল এই মামলা লড়বে! রেপ কেসকে আপনি দরদাম করেছিলেন! কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে আপনার সেই রেটের দামের মূল্য আজকে দিতে হল! সরকারি উকিল, পুলিশ প্রশাসন সব টাকার বিনিময়ে বিক্রি হয়ে গেছে। বিচার দিতে পারলেন না আপনি!”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।