কল্পতরু উৎসবে সেজে উঠেছে ঠাকুরের স্মৃতিধন্য মন্দিরগুলি...
কাশীপুর উদ্যানবাটিতে কল্পতরু উৎসব পালন। নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ কল্পতরু উৎসব। আজকের দিনেই ঠাকুর রামকৃষ্ণ তাঁর ভক্তদের বলেছিলেন, ‘চৈতন্য হোক’। তাই ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত মন্দিরগুলিতে ভক্তদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেল। দক্ষিণেশ্বর, কাশীপুর উদ্যানবাটি, বেলুড় মঠ, কামারপুকুর, জয়রামবাটি এবং তারাপীঠে ব্যাপক ভক্তের সমাগম হয়েছে। ঠাকুর রামকৃষ্ণকে তাঁর ভক্তরা ঈশ্বরের অবতার বলে থাকেন। আজ কল্পতরু উৎসবে (Kalpataru Utsab) সেজে উঠেছে মায়ের মন্দিরগুলিও।
সময়টা ছিল ১৮৮৫-র শেষ। ঠাকুর রামকৃষ্ণের শরীর খুব একটা ভালো ছিল না। শীতে একেবারে কাবু হয়ে গিয়েছিলেন। চিকিৎসার জন্য শ্রী গোপাল ঘোষের বাগানবাড়িতে নিয়ে গিয়ে রাখা হয় তাঁকে। চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল সরকারের কড়া নিষেধ ছিল, কথা বলা যাবে না। কথা বললেই গলায় যন্ত্রণা বাড়বে। ছিলেন কড়া নজরদারিতে। ভক্তদের মনে ঠাকুরকে ঘিরে দারুণ আশঙ্কা। তাঁকে দেখেতে আগ্রহী ছিলেন ভক্তরা। এরপর বছরের প্রথম দিনেই ১৮৮৬ সালে ভক্তরা দেখতে এলে, তাঁদের ঠাকুর বলেন ‘তোমাদের চৈতন্য হোক’। এরপর থেকেই পালিত হয় ‘কল্পতরু উৎসব’ (Kalpataru Utsab)। কাশীপুর উদ্যানবাটীতে আজ ভোর ৪ টে থেকে পুজো দিয়ে শুরু হয় মঙ্গলারতি। এরপর সকাল ৭ টা থেকে শুরু হয় বিশেষ পুজো। সেই সঙ্গে চলছে ভক্তিগীতি এবং কীর্তন। বেলুড় মঠেও একই ভাবে পুজো অনুষ্ঠিত হয়। বছরের প্রথম দিনেই মা কালী, ঠাকুর রামকৃষ্ণ, মা সারদা এবং স্বামী বিবেকান্দের চরণকমলে ভক্তি, পুজা-অর্চনা করে ভক্তরা নতুন বছরের দিনটিকে শুরু করলেন।
১ জানুয়ারি কল্পতরু (Kalpataru Utsab) উৎসব উপলক্ষে কামারপুকুর, বেলুড়ের পাশাপাশি মা সারদার বাঁকুড়ার জয়রামবাটিতেও বিশেষ পুজো এবং উৎসব পালন করা হয়। প্রতি বছরের মতো এই বছরেও ভক্তদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গিয়েছে। মন্দিরে সকাল থেকেই পুজো অনুষ্ঠিত হয়। ভক্তদের মধ্যে বিশ্বাস, মন থেকে যা চাইবে, ঠাকুরের আশীর্বাদে সেই ইচ্ছাপূরণ হয় কল্পতরু উৎসবে।
দক্ষিণেশ্বরে সেজে উঠেছেন মা ভবতারিণী। কল্পতরু উৎসবকে (Kalpataru Utsab) ঘিরে ভক্তদের ব্যাপক সমাগম হয়েছে। মাকে নতুন বেনারসি, গহনা দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। মন্দিরে এদিন এসেছেন ভিন রাজ্য থেকে ভক্তরা। অতিরিক্ত চাপ সামলাতে প্রশাসন থেকে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা।
কল্পতরু উৎসবকে (Kalpataru Utsab) ঘিরে তারাপীঠে ভাক্তদের ব্যাপক ঢল লক্ষ্য করা গেল। সকাল থেকেই মন্দির চত্বরে চলছে পুজো। নতুন বছর ভালোভাবে কাটুক, এই কামনায় তারামায়ের কাছে গিয়ে প্রার্থনা করতে দেখা গিয়েছে ভক্তদের। মন্দিরে রয়েছে ব্যাপক ভিড়। তাই গর্ভগৃহে যাতে কেউ ঢুকে ছবি না তোলে, সেই দিকে কড়া নজরদারি রাখা হয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।