Narendra Modi: ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠে’ সশরীরে উপস্থিত না থাকলেও বিশেষ বার্তা পাঠালেন প্রধানমন্ত্রী, কী জানিয়েছেন?
ব্রিগেডে ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠের’ প্রস্তুতি। ছবি-সংগৃহীত।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আর কিছুক্ষণের অপেক্ষা। তার পরেই শহরের আকাশ মুখরিত হবে শঙ্খধ্বনিতে। বাতাসে ভেসে আসবে লক্ষ মানুষের সমবেত কণ্ঠে গীতার শ্লোক-বাণী। আজ, রবিবার ব্রিগেডে হতে চলেছে ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতা পাঠ’ (Gita Mass Recitation)। যাকে ঘিরে গোটা শহর তো বটেই, সমগ্র রাজ্যে তীব্র উৎসাহ ও উদ্দীপনার পারদ চড়ছে। এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য বাংলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ভিড় জমাতে শুরু করেছেন কলকাতায়। রবিবার ভোর থেকেই ব্রিগেডে জমায়েত শুরু হয়ে গিয়েছে। একটু পরেই সমস্বরে গীতা পাঠে মেতে উঠবেন সকলে।
এই অনুষ্ঠানের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। কিন্তু, বিশেষ প্রয়োজনে শেষ মুহূর্তে তাঁর এই সফর বাতিল করতে হয়েছে। তবে, স্বয়ং হাজির না হতে পারলেও, কর্মসূচির আগে বিশেষ বার্তা পাঠালেন তিনি। শনিবার রাতে আয়োজকদের হাতে চলে আসে প্রধানমন্ত্রীর চিঠি। তাতে মোদি লিখেছেন, ‘‘সনাতন সংস্কৃতি সংসদ, মতিলাল ভারততীর্থ সেবা মিশন আশ্রম এবং অখিল ভারতীয় সংস্কৃত পরিষদের উদ্যোগে কলকাতায় ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ (Gita Mass Recitation) কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এক লক্ষ মানুষের সমবেত গীতা পাঠের কর্মসূচি সত্যিই প্রশংসনীয়। দীর্ঘ পরম্পরা, অগাধ জ্ঞান ও দার্শনিক-আধ্যাত্মিক বুদ্ধির মেলবন্ধনের দ্বারা গঠিত আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও সম্প্রীতি আমাদের শক্তি। মহাভারতের সময় থেকে ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন, বর্তমান সময়েও গীতা সকলকে অনুপ্রাণিত করে। ভারতের সংস্কৃতি অনুযায়ী জীবনযাপনের এবং অগ্রগতির বহু পরস্পর সংযুক্ত পথ দেখায় গীতা। আমি নিশ্চিত, একসঙ্গে এত মানুষের কণ্ঠে গীতাপাঠ আমাদের সামাজিক সম্প্রীতিকে আরও জোরদার করবে। একইসঙ্গে দেশের উন্নয়ন-যাত্রার ক্ষেত্রেও প্রয়োজনীয় শক্তি প্রদান করবে। উন্নত, শক্তিশালী ভারত গড়ে তোলার জন্য ২০৪৭ সাল পর্যন্ত সুযোগ আছে। ‘লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’ সকলের জন্য শান্তি নিয়ে আসুক। আয়োজকদের আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’’ সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর (Narendra Modi) এই বার্তা ব্রিগেডে পাঠ করা হতে পারে।
এদিকে, ব্রিগেডে এখন সাজো সাজো রব। এক লক্ষ জমায়েতকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ব্রিগেড ময়দানকে ২০টি ব্লকে ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি ভাগে ৫ হাজার করে মানুষের গীতা পাঠের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ব্রিগেডে উপস্থিত থাকবেন দ্বারকার শঙ্কারাচার্য সদানন্দ সরস্বতী এবং পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের দ্বৈতাপতি। গীতাপাঠের জন্য ব্রিগেডে তৈরি হয়েছে বিশাল মঞ্চ। দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে মঞ্চকে। বড় মঞ্চটি উঁচু। সেখানে থাকবেন সাধু-সন্তরা। বড় মঞ্চের নিচে যে ছোট মঞ্চ তৈরি হয়েছে, সেখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। বাংলা ছাড়াও, অন্যান্য রাজ্যের থেকে প্রায় ১৫০০ সাধু-সন্তের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ১ লক্ষ ৩০ হাজারের উপর ফর্মরেজিস্ট্রেশন হয়ে গিয়েছে।
আয়োজকদের তরফে জানানো হয়েছে, সকাল ১০টা থেকে মূল অনুষ্ঠানটি শুরু হবে। শঙ্খধ্বনির মাধ্যমে অনুষ্ঠানের (Gita Mass Recitation) সূচনা হবে। এর সঙ্গে সঙ্গীত পরিবেশন হওয়ার কথা। ১০টা থেকে শুরু হবে ভজন। সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হবে শোভাযাত্রা। এরপর শোভাযাত্রা শেষ হলেই আরতি শুরু হবে ১১টা ৫ মিনিট থেকে। ১০ মিনিট হবে আরতি। এরপর শুরু হবে বেদ পাঠ। সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বেদপাঠ চলবে। পৌনে ১২টায় স্বাগত ভাষণ শুরু হবে। ভাষণ শেষ হলে ফের শুরু হবে গীতাপাঠ। মোটামুটি ১২টা ১০ থেকে শুরু হবে গীতাপাঠ। এক ঘণ্টা ধরে চলবে গীতাপাঠ। সেখানে গীতাপাঠে গলা মেলাতে পারবেন ভক্তরা। সওয়া ১টা নাগাদ গীতাপাঠ শেষ হওয়ার পরে বক্তব্য রাখবেন দ্বৈতাপতিজি। এরপরই শেষ হবে গীতাপাঠের আসর।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।