শীতের শুরুতেই বায়ুদূষণের এই সূচক ভয় ধরাচ্ছে বিশেষজ্ঞদের
দূষণে ঢেকেছে আকাশ।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: শীতের শুরুতেই শহরে বাড়ছে দূষণের পরিমাণ। বায়ুদূষণে এবার দিল্লিকে ছুঁতে বসেছে কলকাতা। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, কলকাতার কিছু এলাকায় দূষণের মাত্রা রাজধানীর থেকেও বেশি। বাতাসে দূষণের পরিমাণ কতটা তা দেখা হয় এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স দিয়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে,এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা AQI শূন্য থেকে ৫০ হলে, সেখানকার বাতাসের মান ভাল। AQI ৫১ থেকে ১০০-র মধ্যে হলে তা satisfactory বা সন্তোষজনক। ১০১ থেকে ২০০ হলে তা মডারেট বা পরিমিত। AQI ২০০ থেকে ৩০০ পর্যন্ত থাকলে সেখানকার বাষুদূষণ poor বা খারাপ। এই বাতাসে বেশিক্ষণ থাকলে ফুসফুসের সমস্যা বা শ্বাসকষ্ট হতে পারে। ৩০১ থেকে ৪০০ পর্যন্ত পৌঁছে গেলে তা ভীষণই উদ্বেগের। এরকম জায়গায় বেশিক্ষণ নিঃশ্বাস নিলে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা হতে পারে। আর AQI ৪০১- ৫০০ হলে তা সিভিয়ার, মারাত্মক উদ্বেগের। সারা বছর AQI ২০০-র আশপাশে ঘোরাফেরা করলেও, শীতের সময় দূষণের মাত্রা বাড়ে। গত ২ দিনে, কলকাতার অধিকাংশ জায়গায় দেখা যাচ্ছে, AQI ৩০০-র ওপরে।
ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের মাপ অনুযায়ী, বালিগঞ্জ, ভিক্টোরিয়া, ফোর্ট উইলিয়াম, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর, রবীন্দ্র সরোবর এলাকায় দূষণের মাপ ধরা পড়েছে অনেকটাই বেশি। বাতাসে ভাসমান সূক্ষ্ম ধূলিকণার এই বেড়ে যাওয়া নিয়ে চিন্তায় পরিবেশবিদ ও চিকিৎসকরা। দীপাবলিতে মহানগরে যে পরিমাণ দূষণ ছিল ডিসেম্বরের প্রথম রবিবার তা ছাপিয়ে গেল৷ ন্যাশনাল এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্সের মাপ অনুযায়ী, রবিবার শহরে দূষণের সূচক ছিল ৩০১ থেকে ৪০০ একিউআই-এর মধ্যে। এখানে সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত দূষণের সূচক ছিল ৩২৮ একিউআই। যাদবপুরে ৩১৩, সল্টলেকে ৩০২, বালিগঞ্জে ২৯৯ এবং আরবিইউতে ছিল ২৯১ একিউআই। এই অবস্থায় বয়স্ক মানুষ এবং শিশুদের শারীরিক সমস্যা বাড়ার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরা। বায়ুদূষণ নিয়ে বোস ইনস্টিটিউটের পূর্বাভাস, ২০১৯ সালের তুলনায় এবছর শীতে কলকাতায় বায়ুদূষণ ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
আরও পড়ুন: মাত্রা ছাড়া বায়ুদূষণ দেশের রাজধানীতে, স্কুল বন্ধের নির্দেশ দিলেন কেজরিওয়াল
বোস ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, গত দুই বছর করোনা অতিমারির কারণে দূষণ কম ছিল৷ কিন্তু, করোনা কাটার পরেই দূষণও বেড়েছে। এই অবস্থায় দূষণ রোধে কঠোর পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, ওই ইনস্টিটিউটের মতে, ২০২৩ সালে রাজ্যে এরোসল দূষণ ৮% বৃদ্ধি পাবে। যা এরোসল দূষণের মানচিত্রে পশ্চিমবঙ্গ সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অর্থাৎ রেড জোনে ঢুকে পড়বে। দেশে এরোসল দূষণের ক্ষেত্রে বিহারের পরেই পশ্চিমবঙ্গ দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করবে। গবেষণাপত্রে পশ্চিমবঙ্গের এরোসল দূষণের পরিমাণ কমানোর জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করা হয়েছে। চিরাচরিত জ্বালানির পদ্ধতি থেকে তৈরি হওয়া দূষণ এরোসেল দূষণের প্রধান কারণ। সম্প্রতি এলপিজি দাম বৃদ্ধির ফলে গরিব মানুষেরা আবার চিরাচরিত কাঠ, কয়লা দিয়ে রান্নার পদ্ধতিতে ফিরে গেছে। পাশাপাশি রাস্তার ধারে খাবারের দোকানগুলির সংখ্যাও দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এগুলি বন্ধ করতে হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।