TMC Ministers Defeated: জেলবন্দি চার বিধায়কের এলাকায় দুটিতে হার তৃণমূলের! কী যুক্তি দিচ্ছে তৃণমূল?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, সংগৃহীত চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সদ্য শেষ হয়েছে ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election Results)। সেই নির্বাচনের ফলাফলে রাজ্যে তৃণমূল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও একাধিক বিধানসভায় হার হয়েছে তৃণমূলের। রিপোর্ট অনুযায়ী জানা গিয়েছে, রাজ্যে তৃণমূলের আট মন্ত্রী হেরেছেন তাঁদের বিধানসভা কেন্দ্রে। একইসঙ্গে নির্বাচনকালে জেলবন্দি চার বিধায়কের (TMC Ministers Defeated) এলাকায় দুটিতে হার হয়েছে তৃণমূলের।
রাজ্যের এই মন্ত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলেন শিল্পমন্ত্রী শশী পাঁজা এবং দমকলের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী সুজিত বসু। রিপোর্ট অনুযায়ী শশী পাঁজার বিধানসভা কেন্দ্র শ্যামপুকুরে (TMC Ministers Defeated) এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। শ্যামপুকুর পড়ে উত্তর কলকাতা লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে। উত্তর কলকাতা লোকসভায় তৃণমূল প্রার্থী সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জিতলেও শশীর শ্যামপুকুরে এগিয়ে রয়েছেন বিজেপির তাপস রায়। অন্যদিকে, কলকাতা লাগোয়া বিধাননগর বিধানসভাতেও পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল। সেখানকার বিধায়ক রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসু। বারাসত লোকসভার মধ্যে অন্তর্গত বিধাননগর। বারাসত লোকসভা থেকে নির্বাচিত হয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তিনি ওই কেন্দ্রে এই নিয়ে টানা চার বার জিতলেন। কিন্তু কাকলি লোকসভায় জিতলেও সুজিত বসুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল ১১ হাজার ভোটে পিছিয়ে।
এছাড়াও কৃষ্ণনগর লোকসভায় (Lok Sabha Election Results) জিতেছেন তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র। কিন্তু দেখা যাচ্ছে কৃষ্ণনগর দক্ষিণ বিধানসভায় তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে ৯ হাজার ভোটে। কৃষ্ণনগর দক্ষিণের বিধায়ক উজ্জ্বল বিশ্বাস রাজ্যের বিজ্ঞান-প্রযুক্তিমন্ত্রী। অন্যদিকে রাজ্যের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সত্যজিৎ বর্মনের বিধানসভা কেন্দ্র হেমতাবাদে ৮ হাজার ভোটে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল (TMC Ministers Defeated)। উত্তরবঙ্গের মালদহে দুই মন্ত্রী তাজমুল হোসেন এবং সাবিনা ইয়াসমিনের বিধানসভা কেন্দ্রেও পিছিয়ে তৃণমূল। একইসঙ্গে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার দুই মন্ত্রী অখিল গিরি এবং বিপ্লব রায়চৌধুরির বিধানসভাতেও পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ জেতায় ছিটকে গেল শ্রীলঙ্কা, আফগানদের জয়ে নিউজিল্যান্ডের বিদায়
এই আট মন্ত্রীর পাশাপাশি জেলবন্দি চার বিধায়কের এলাকাতেও দুটিতে হার হয়েছে তৃণমূলের (Lok Sabha Election Results) । রাজ্যের নিয়োগ ও রেশন দুর্নীতি মামলায় জেলে যেতে হয়েছে তৃণমূলের চার জন বিধায়ককে। এক জন অবশ্য তাঁর এলাকায় ভোটের পরেই জামিন পেয়েছেন। তিনি বড়ঞার বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। কিন্তু এখনও জেলবন্দি (Arrested TMC MLA) রয়েছেন তিন জন। তাঁরা হলেন- পার্থ চট্টোপাধ্যায়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এবং মানিক ভট্টাচার্য। এই চার বিধায়কের বিধানসভাতে লোকসভার ফলাফল খতিয়ে দেখলে দেখা যাচ্ছে, চার জনের মধ্যে দুজন বিধায়কের বিধানসভায় তৃণমূল পিছিয়ে রয়েছে।
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক হাবরার বিধায়ক। হাবরা বারাসত লোকসভার অন্তর্গত। বারাসত লোকসভায় এ বার নিয়ে টানা চার বার জিতলেন তৃণমূলের কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তবে জ্যোতিপ্রিয় তথা বালুর হাবরায় কাকলি পিছিয়ে রয়েছেন ২০ হাজার ভোটে (TMC Ministers Defeated)। আর এই একই ছবি বড়ঞাতেও। কারন, জীবনকৃষ্ণের বড়ঞা পড়ে বহরমপুর লোকসভার মধ্যে। এই লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেসের অধীর চৌধুরীকে হারিয়ে এ বারই প্রথম সেখানে জয় পেয়েছে তৃণমূল। বহরমপুর লোকসভায় (Lok Sabha Election Results) এবারের তৃণমূল প্রার্থী ছিল প্রাক্তন ক্রিকেটার ইউসুফ পাঠান। তবে লোকসভা কেন্দ্রে জিতলেও দেখা যাচ্ছে বড়ঞায় ৫০০ ভোটে পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল।
কেন ধরে রাখতে পারলেন না নিজেদের বিধানসভা, সেই প্রশ্নে একেক জন মন্ত্রী একেক রকম যুক্তি দিয়েছেন। হেমতাবাদের সত্যজিৎ এ প্রসঙ্গে সরাসরিই বলেছেন, ‘‘আমাদের জেলা পরিষদের সভাধিপতিকে নিয়ে বিস্তর ক্ষোভ রয়েছে। এসসি সংরক্ষিত পদে এসটি-কে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ক্ষোভের কারণে রাজবংশী ভোট আমরা পাইনি।’’ আবার মোথাবাড়ির সাবিনার বক্তব্য, ‘‘ভোটের (Lok Sabha Election Results) দুদিন আগে সংখ্যালঘু ভোটের মন বদল হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কোথাও দিদি (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) বা তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ নেই। মালদহ দক্ষিণে কংগ্রেসের পক্ষে কোতোয়ালি বাড়ির আবেগ কাজ করেছে।’’ অন্যদিকে কৃষ্ণনগর দক্ষিণের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বলের বক্তব্য, ‘‘আগের লোকসভাতেও কৃষ্ণনগর দক্ষিণে আমরা পিছিয়ে ছিলাম। সে সব মেরামত করেই আমাকে বিধানসভায় জিততে হয়েছিল।’’ একইসঙ্গে এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী তথা রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরি স্পষ্টই জানিয়েছেন, এই হারের ‘কারণ’ খুঁজতে রবিবার তিনি পর্যালোচনা বৈঠক করবেন। সেই বৈঠকে ডাকা হয়েছে বুথ স্তরের নেতাদেরও। অতএব গোটা রাজ্যের ফলাফল (TMC Ministers Defeated) গভীর ভাবে বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে ওপর ওপর তৃণমূল নিজেদের যতই শক্তিশালী ভাবুক না কেন তাদের ভিত বহু জায়গায় এখনও নড়বড়ে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।