হাতির তাণ্ডবে বেঘোরে প্রাণ গেল দুজনের, কেন জানেন?
মৃত হস্তিশাবক (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: চতুর্থীর দিনই বিষাদের সুর জঙ্গলমহলের ঝাড়গ্রাম (Jhargram) জেলা। এক হস্তি শাবকের মৃত্যুর পর হাতির হানায় মৃত্যু হল দুজনের। হাতির দল সুবর্ণরেখা নদী পার হওয়ার সময় বালিখাদানের গর্তে পড়ে জলে ডুবে মৃত্যু হল এক হস্তি শাবকের। শাবক হারা মা হাতির আক্রমণে মৃত্যু হল দু'জন গ্রামবাসীরও। ঘটনাটি বুধবার সকালে ঝাড়গ্রাম জেলার নয়াগ্রাম থানার দেউলবাড় এলাকায় রামেশ্বর মন্দির সংলগ্ন এলাকার ঘটনা।
স্থানীয় ও বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, বুধবার ভোর রাতে ২ টি শাবক সহ ১৪ টা হাতির একটি দল খড়গপুর বন বিভাগের সাঁকরাইল রেঞ্জের রোহিনীর দিক থেকে সুবর্ণরেখা নদী পেরিয়ে নয়াগ্রাম এলাকার চাঁদাবিলা রেঞ্জে ঢোকে। সেই সময় একটি ছোট্ট হস্তি শাবক বালিখাদানের গর্তে পড়ে যায়। প্রচুর জল থাকায় জলে ডুবে মারা যায় হস্তি শাবকটি। দীর্ঘ চেষ্টার পর মা হাতি শাবককে উদ্ধার করে ডাঙ্গায় নিয়ে আসে। ঝাড়গ্রামের (Jhargram) রামেশ্বর মন্দির সংলগ্ন এলাকায় মৃত হস্তি শাবকটিকে কোনওক্রমে নিয়ে যায় মা হাতিটি। অন্যান্য হাতিগুলি সেখান থেকে এগিয়ে গিয়ে তপবনের জঙ্গলের দিকে চলে যায়। কিন্তু, মা হাতি তার সন্তানকে ছেড়ে যেতে চায়নি। সন্তান হারানোর দুঃখে পাগলের মত গর্জন করে বিক্ষিপ্তভাবে ছোটাছুটি করতে থাকে মা হাতিটি। এই অবস্থায় হাতি মৃত্যুর খবর চাউর হতেই বহু মানুষ হাতি দেখার জন্য জমায়েত করে রামেশ্বর মন্দির সংলগ্ন এলাকায়। সেই সময় হঠাৎ করে মা হাতি গ্রামবাসীদের তাড়া করে। ঘটনায় দু'জন গ্রামবাসী কে ধরে ফেলে এবং শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে। ঘটনাস্থলেই তাদের দু'জনের মৃত্যু হয়। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দেউলবাড় গ্রামের আনন্দ জানা (৭৩) এবং বিরিবেড়িয়া গ্রামের শশধর মাহাত (৬০) নামের দুই বৃদ্ধের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়াও একটি বাইক ভেঙে ফেলেছে হাতিটি এবং রামেশ্বর-কর্টক রুটের একটি বাসকে ধাক্কা দেয় বলেও জানা গিয়েছে।
খড়গপুর বন বিভাগের ডিএফও শিবানন্দ রাম বলেন, প্রাথমিকভাবে দেখে যা মনে হচ্ছে নদী পারাপারের সময় জলে ডুবে একটি হস্তি শাবকের মৃত্যু হয়েছে এবং হস্তি শাবকটির মা হাতির হানায় ঝাড়গ্রামে (Jhargram) দু'জন গ্রামবাসীরও মৃত্যু হয়েছে। সরকারি নিয়মনীতি মেনে বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ তুলে দেওয়া হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।