SSKM: মদন বাণে বিদ্ধ মমতা, কী বললেন কামারহাটির বিধায়ক?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মদন মিত্র (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কলকাতা এসএসকেএম হাসপাতালে দুর্ঘটনায় জখম এক রোগী ভর্তি করা নিয়ে কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্রের (Madan Mitra) সঙ্গে সংঘাতের সূত্রপাত। আর তার জের কালীঘাট পর্যন্ত পৌঁছে যাবে শনিবার তা দলের কর্মীরাও আঁচ করতে পারেননি। শুক্রবারের ঘটনার জেরে এদিন মদন বাণে বিদ্ধ হয় এসএসকেএম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং মদন মিত্র একে অপরের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিবৃতি পাল্টা বিবৃতি দিয়ে তোপ দাগে। শনিবার দিনভর এই ঘটনা রাজ্য রাজনীতিতে ঝড় তুলে দিয়েছে। কারণ, মদনের বাণে বিদ্ধ শুধু এসএসকেএম নয়, তৃণমূল সুপ্রিমোও।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে হাসপাতালের ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "হাসপাতাল চত্বরে কোনওরকম অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। আর এই বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীও আমাদের পাশে রয়েছেন"। মদন মিত্রের (Madan Mitra) নাম না করে তিনি আরও বলেন, "শুক্রবার রাতে হাসপাতালে যা ঘটেছে, তা অনভিপ্রেত। ইচ্ছাকৃতভাবে চিকিত্সক, স্বাস্থ্যকর্মী, নার্সদের হেনস্থা এবং গালিগালাজ করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে আমার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর কথা হয়েছে। আমি তাঁকে ঘটনার কথা বিস্তারিত জানিয়েছি। তিনি এক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতির কথা বলেছেন।" হাসপাতালের ডিরেক্টর আরও বলেন, "যে কোনও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা হাসপাতালে কেউ হামলা করলে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হয়। এসএসকেএম হাসপাতালের ক্ষেত্রেও সেই একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। কাল যাঁরা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন, তাঁদের সকলের ছবি সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে। সেই ফুটেজ দেখে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে"।
মুখ্যমন্ত্রীর নাম করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কড়া বার্তায় মদন মিত্রের ক্ষোভের আগুনে কার্যত ঘি ঢেলেছে। পাল্টা সাংবাদিক সম্মেলন করে মদন মিত্র বিধায়ক পদ ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। মূলত তাঁর এই ক্ষোভ যতটা না হাসপাতালের বিরুদ্ধে তার থেকে অনেক বেশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, "তৃণমূল দলটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেকের একার দল নয়। আমাদের মতো সকলকে নিয়ে তৃণমূল গঠিত হয়েছে। তৃণমূল ব্যক্তিগত কারও হলে প্রাইভেট লিমিটেড লেখা থাকত, সেটা তো কোথাও লেখা নেই। আর এই দল করতে গিয়ে কারও শরীরে যদি আঘাতের চিহ্ন লেগে রয়েছে, তো আমারও ২৩ মাস জেল খাটার আঘাত শরীরে রয়েছে। দরকার হলে আমি বিধায়ক পদ ছেড়ে দেব। আমি সোনালি গুহ, দীনেশ ত্রিবেদী, মুকুল রায় নই। আমি মদন মিত্র (Madan Mitra)। উনি আমাকে কী দিয়েছেন?" তিনি আরও বলেন, "ওই তো বিধায়কের মাইনে। যদি ছেড়ে দিতে বলেন, তা ছেড়ে দেব। তেমন হলে রাজনীতি ছেড়ে দেব। যা পড়াশুনা জানি তাতে টিউশন পড়িয়ে মাসে ৩০ হাজার রোজগার করতে পারব।" এরপর তিনি অনুরোধ করে বলেন, "আমার পরিবারের প্রতি প্রতিহিংসামূলক আচরণ করবেন না। আর আমি বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করলে এক মাসের মধ্যে ভোট করাবেন। আমি নির্বাচিত কামারহাটি থেকে। তৃণমূল আমাকে জেতায়নি। আমাকে জিতিয়েছে কামারহাটির মানুষ।"
বিধায়ক পদ ছেড়ে দিলে কামারহাটির বিধায়ক (Madan Mitra) টিউশন করার কথা বলেছেন। একইসঙ্গে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, "আমি বই লিখব। আর সেই বই বেস্ট সেলার হবে। সারদা মামলায় ২৩ মাস জেলে ছিলাম। আমার বইয়ে সেই সময়করার ঘটনা তুলে ধরব। আমার বিশ্বাস, আমার বই বেস্ট সেলার হবে। আমেরিকার মানুষও পড়বে আমার বই।"
তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, মদনদা (Madan Mitra) বাম আমল থেকে পিজি হাসপাতালে প্রভাবশালী। দলমত নির্বিশেষে তিনি মানুষের চিকিত্সার ব্যবস্থা করে এসেছেন। কোনও একটি ঘটনায় তাঁর রাগ হয়েছে। তবে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যেটা বলেছে সেটাও একটি দিক।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।