স্বাধীনতা-৭৫ এ দেশজুড়ে যখন বীর শহিদ, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করা জওয়ানদের স্মরণ করা হচ্ছে তখন বাংলায় উপেক্ষিতই থেকে গিয়েছেন একমাত্র শৌর্যচক্র বিজেতা।
শৌর্য চক্র বিজেতা কোবরা কমান্ডো দিলীপ মালিক
মাধ্যম নিউজ ডেস্কঃ তাঁর স্লোগান জয় বাংলা। নির্বাচনে জয়ঢাক বাজিয়ে তিনি দাবি করেন, বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়। কখনও বলেন বাংলার গর্ব মমতা। কিন্তু বাঙালির বিরল কৃতিত্বে তাঁর সাড়া নেই। পশ্চিমবঙ্গের প্রথম শৌর্য চক্র বিজেতা, মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অভিযানে অন্যতম কৃতিত্বের দাবিবার হুগলির বরগাছিয়ার বাসিন্দা দিলীপ মালিকের সঙ্গে দেখা করার সময় পান না তিনি। দুবার চিঠি দিয়েও মুখ্যমন্ত্রীর দর্শন পাননি সিআরপির কোবরা বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডান্ট। স্বাধীনতা-৭৫ এ দেশজুড়ে যখন বীর শহিদ, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াই করা জওয়ানদের স্মরণ করা হচ্ছে তখন বাংলায় উপেক্ষিতই থেকে গিয়েছেন একমাত্র শৌর্যচক্র বিজেতা।
তবে বাংলায় উপেক্ষিত হলেও দেশজুড়ে দিলীপবাবুকে উচ্ছ্বসিত সকলেই। কেন্দ্রীয় বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা জানাচ্ছেন, শৌর্য চক্র পাওয়া এমনিতেই বিরাট কৃতিত্বের। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শৌর্য চক্র প্রাপকেরা মরনোত্তর পদক পান। অর্থাৎ কোনও অপারেশনে গিয়ে বা যুদ্ধ ক্ষেত্রে গিয়ে লড়াইয়ে ময়দানে প্রাণ দিয়ে দেশের সম্মান রক্ষাকারীদের এই পদক দিয়ে সম্মান জানানো হয়। সেনাবাহিনী থেকেই এই পদক প্রাপকের সংখ্যা বেশি। দিলীপবাবুর কৃতিত্ব এই কারণেই আরও বিরল। কারণ, তিনি জীবিত অবস্থা শৌর্য চক্র পেয়েছেন। যার অর্থ, অপারেশনে নেতৃত্ব শুধু নয়, সফল অপারেশনে নিজেকে ও তাঁর জওয়ানদের সুরক্ষিত রাখতে সমর্থ হয়েছিলেন তিনি। দ্বিতীয়ত দিলীপবাবু আধা সামরিক বাহিনী সিআরপির অফিসার।
২০১৯ সালে বিহারের ঔরঙ্গাবাদে বাংলা বাগিচায় মাওবাদীদের বিরুদ্ধে অপারেশনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। কোবরা বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডান্ট হিসাবে সামনে থেকে লড়ে সেই অপারেশনে বিজয় পেয়েছিল সিআরপি। নধরপুষ্ট আম বাঙালির চেহারা যাঁদের মনে থাকে তাঁরা ভেবে দেখবেন হুগলির দিলীপ মালিক কোবরা বাহিনীর মতো ভয়ঙ্কর এক কমান্ডো বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডান্ট ছিলেন।
২০২২ এর মে মাসে রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ তাঁকে শৌর্য চক্র সম্মানে ভূষিত করেছেন। দেশ তাঁকে সম্মান দিয়েছেন। কিন্তু প্রথম বাঙালি শৌর্য চক্র বিজেতা বার বার চেষ্টা করেও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। অনেকে মনে করছেন, ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার আগে মাওবাদীদের সঙ্গে গোপন বোঝাপড়া ছিল তৃণমূলের। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সরকার নন্দীগ্রাম আন্দোলন সম্পর্কে সরকারি অবস্থান জানাতে গিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে পর্যন্ত হলফনামা দিয়ে সে কথা জানিয়েছিল। বিহারে মাওবাদীদের নিকেশ অভিযানে নামা কোবরা বাহিনীর অফিসারের সঙ্গে সেই কারণেই কি দেখা করতে চাইছেন না মুখ্যমন্ত্রী।