ইডির তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, তাঁর বেসরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ থেকেই চলত চাকরি বিক্রির কারবার।
Tapas Mondal
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডের তদন্তে এবারে ইডির স্ক্যানারে রয়েছেন মানিক ভট্টাচার্যের ঘনিষ্ঠ সহযোগী তাপস মণ্ডল (Tapas Mopndal)। আজ, বৃহস্পতিবার ইডির দফতরে হাজিরা দেওয়ার কথা। তবে প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছিল যে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত মানিক ভট্টাচার্যর (Manik Bhattacharya) ঘনিষ্ঠ তাপস মণ্ডল (Tapas Mondal) কি বৃহস্পতিবার ইডি দফতরে হাজিরা দেবেন? কিন্তু হাজিরা দেওয়ার আগেই তাপস মণ্ডল ই-মেল করে জানিয়ে দেন যে, তিনি রাজ্যের বাইরে রয়েছেন বলে আজ ইডির দফতরে যেতে পারবেন না। তাই আরও দশদিন সময় চেয়ে নিয়েছেন তিনি।
তাঁর বিরুদ্ধে অনেক তথ্যই উঠে এসেছে। তিনি যে নিয়োগ দুর্নীতির সঙ্গে রয়েছেন, এই বিষয়ে অনেক তথ্যই উঠে এসেছে ইডির হাতে। ফলে এখন নিয়োগ দুর্নীতিতে অভিযুক্ত মানিক ভট্টাচার্যের সঙ্গে কীভাবে তাঁর যোগসাজশ রয়েছে, তা জানতেই আজকে তাঁকে তলব করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই তাঁর ১৭টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের আর্থিক লেনদেন নজর রয়েছে ইডির। আবার এখন ইডির আতসকাচে তাপসের মিনার্ভা টিচার্স ট্রেনিং সংস্থা।
আরও পড়ুন: কামদুনির মৌসুমীও কাজ করতেন তাপসের সংস্থায়! মহিষবাথানের অফিস নিয়ে কী জানালেন তিনি?
জানা গিয়েছে, প্রায় বছর কুড়ি আগে বারাসত পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের কাঠোর রোডের দেবীপুরের একটি টিনের চালাঘরে স্ত্রী এবং দুই ছেলেকে নিয়ে থাকতে শুরু করেন তাপস মণ্ডল (Tapas Mondal)। এরপর হঠাৎ করেই ২০১১ সাল থেকে ফুলে ফেঁপে ওঠেন তিনি ও ধীরে ধীরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ট্রেনিং সেন্টার খুলে বেকার ছেলেমেয়েদের চাকরির লোভ দিতে থাকেন। এখন তাপস মণ্ডলের ৪টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং ৬টি বেসরকারি শিক্ষক প্রশিক্ষণ কলেজ রয়েছে। ইডি’র একাধিক টিম শনিবার সকাল থেকে কলেজ স্কোয়ার, আমহার্স্ট স্ট্রিট, রাজাবাজার, মহিষবাথান, বারাসত, কৈখালি-সহ আটটি জায়গায় অভিযান চালায়। এর মধ্যে বারাসতের দেবীপুরে রয়েছে তাপস মণ্ডলের বাড়ি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। নিউটাউনের মহিষবাথান ও কলেজ স্কোয়ারে রয়েছে দু’টি অফিস। তবে সব জায়গায় শিক্ষক প্রশিক্ষণের ক্লাস নেওয়া হত বলে খবর। তাতে বিপুল টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে তাপস মণ্ডলের বিরুদ্ধে।
ইডির তদন্তকারীরা দাবি করেছেন, এই সব জায়গা থেকেই চলত চাকরি বিক্রির কারবার। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে গুচ্ছ গুচ্ছ নথিও। জেলায় জেলায় বেসরকারি বিএড কলেজ থেকেই প্রার্থী বাছাই করে ছোট ছোট অফিসেই লাখ লাখ টাকার ডিল করতেন নিয়োগ চক্রের এই ‘মিডলম্যান’। আর সব কিছুতেই মানিকের হাত থাকত বলে অভিযোগ। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ ছিল তাপসের বলে অভিযোগ ইডির। ফলে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় জেরা করার জন্যই এদিন তলব করা হয়েছিল তাপসকে। কিন্তু তিনি উল্টে সময় চেয়েছেন ইডির কাছে। তবে এবারে ইডির তরফে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেটাই এখন দেখার।