বেসরকারি বিএড কলেজ, ডিএলএড কলেজ ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ সংস্থাকে অনুমোদন ও এনওসি পাইয়ে দিতে লক্ষ লক্ষ টাকা নিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মানিক ভট্টাচার্য।
মানিক ভট্টাচার্য
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্যের জামিনের বিরোধিতায় শেক্সপিয়রের (Recruitment Scam) ম্যাকবেথ নাটকের তুলনা টানল ইডি। বুধবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি বলেন, মানিক ভট্টাচার্য ও কুন্তল ঘোষের অপরাধ খুনের সমান। এই সময়ই ম্যাকবেথের নাটকের একটা বিষয়ের উত্থাপন করেন। ইডি-র আইনজীবী বলেন, একটা সময়ে বাংলার শিক্ষাব্যবস্থা ছিল সেরা। কিন্তু বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে দুর্নীতি যেভাবে ঘিরে ধরেছে, এখানকার পড়ুয়ারা ভীত। তাঁরা বাইরে পড়াশোনার জন্য চলে যাচ্ছে। বৃহত্তর সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে কুন্তল-মানিকের ষড়যন্ত্র খুনের সমতুল্য বলে সওয়াল করে, মানিকের জামিনের বিরোধীতা করেন ইডির আইনজীবী।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার মানিক ভট্টাচার্যকে আদালতে পেশ করা (Recruitment Scam) হয়েছিল। তাঁর জামিনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত। ইডির আইনজীবী গতকাল সওয়াল করেননি। বুধবার বেলা ১১টার সময়ে ব্যাঙ্কশালের বিশেষ ইডি আদালতে ফিরোজ এডুলজি মানিকের জামিনের বিরোধিতা করে সওয়াল করেন।
মঙ্গলবার আদালতে ঢোকার সময় সাংবাদিকদের দেখে মেজাজ হারান মানিক। প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহেই নিয়োগ মামলার শুনানিতে মানিকের লন্ডনে বাড়ি আছে বলে দাবি করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। বিচারপতি সেদিন সিবিআই-কেই জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ‘‘কত বার লন্ডনে গিয়েছেন মানিক ভট্টাচার্য? তাঁর বাড়ির ঠিকানা জানেন? আমি বলতে পারি। শুনবেন? লন্ডনে তাঁর বাড়ির পাশে কার বাড়ি জানেন?” সেই প্রসঙ্গের প্রেক্ষিতে মানিকের আইনজীবী মঙ্গলবার বলেন, “আমার মক্কেলের নদিয়ায় বাড়ি আছে। ওটা যদি লন্ডন টেকওভার করে, তবে তাঁর লন্ডনে বাড়ি আছে।”
এদিকে, এদিন আদালতে ভট্টাচার্যর জামিনের বিরোধিতায় বিস্ফোরক দাবি করে ইডি (Recruitment Scam)। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, বেসরকারি বিএড কলেজ, ডিএলএড কলেজ ও শিক্ষক প্রশিক্ষণ সংস্থাকে অনুমোদন ও এনওসি পাইয়ে দিতে লক্ষ লক্ষ টাকা নিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও মানিক ভট্টাচার্য। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর ক্ষেত্রে টাকার অঙ্কটা ছিল ৬-৮ লক্ষ টাকা। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য ২-৫ লক্ষ টাকা নিতেন।
আরও পড়ুন: প্রেম থেকে পরিণয়, রাজস্থানে শাহি আয়োজনে বিয়ে সারলেন সিদ্ধার্থ-কিয়ারা
ইডি-র দাবি, পার্থর কোনও চেনা লোকের হাতে তুলে দেওয়া হত তাঁর টাকা। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, মানিকের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া (Recruitment Scam) একটি সিডি-র একটিমাত্র ফোল্ডারে প্রায় ৪ হাজার চাকরিপ্রার্থীর নাম মিলেছে। এদের মধ্যে আড়াই হাজারেরও বেশি চাকরি পেয়েছেন। অথচ জেরায় মানিক দাবি করেন, তিনি এসবের কিছুই জানেন না।
ইডি তদন্তে জানতে পেরেছে, বাতিল ও ফেল করা চাকরিপ্রার্থীদের পাশ করাতে ১ লক্ষ ও নিয়োগ পাইয়ে দিতে ৫ লক্ষ টাকা নিতেন মানিক। এই সমস্ত অভিযোগ জানিয়েই আজ আদালতে মানিকের জামিনের বিরোধিতা করবে ইডি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।