BJP: দক্ষিণ দিনাজপুরে নদীর ধারে, মুর্শিদাবাদে বুথে গড়াগড়ি খাচ্ছে বিরোধীদের ভোট দেওয়া বৈধ ব্যালট
বিজেপিকে ভোট দেওয়া ব্যালট পেপার পড়ে রয়েছে নদীর ধারে (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ভোট গ্রহণ এবং গণনা, দুটোই সম্পূর্ণ হয়ে গিয়েছে। এমনকী ফলাফলও ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, তারপরও নদীর ধারে পাওয়া গেল বিজেপি (BJP) ও বামেদের ভোট দেওয়া বৈধ ব্যালট পেপার। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের কুমারগঞ্জ ব্লকের গণনা কেন্দ্র থেকে কুড়ি মিটার দূরে আত্রেয়ী নদীর ধারে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমারগঞ্জের গণনা কেন্দ্র থেকে ২০০ মিটার দূরে নদীর ধারে প্রায় ৪০টি ব্যালট পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সাদা কাগজের এই ব্যালটে অধিকাংশই বিজেপি প্রার্থীর ওপর ছাপ মারা রয়েছে। রেজাল্ট অনুযায়ী এই বুথে বিজেপি ৩৪১টি, তৃণমূল ৬৯৭টি, সিপিএম ৭২টি ভোট পেয়েছে। জয়ী ঘোষণা করা হয়েছে তৃণমূলের প্রার্থীকে। বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্যালট উদ্ধারের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন জেলা পরিষদের বিজেপি প্রার্থী ও স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।
এই বিষয়ে বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, এই ঘটনা থেকে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে স্ট্রং রুমে ব্যালট পরিবর্তন করা হয়েছে। বিজেপিতে ছাপ দেওয়া ব্যালট বক্স থেকে বের করে নদীতে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। এইভাবে মানুষের মতামতকে যেভাবে তৃণমূল কেড়ে নিয়েছে তা মেনে নেওয়া যায় না। তৃণমূলকে খেসারত দিতে হবে।
এবিষয়ে কুমারগঞ্জের বিডিও ছেয়াং তামাং বলেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের দ্বারা কড়া নিরাপত্তার সঙ্গে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। এমনটা হওয়ার কথা না। এটা রাজনৈতিক দলেরই কেউ বানাতে পারে। তবে পুরো ঘটনাটি আমরা যাচাই করে দেখব।
এবিষয়ে কুমারগঞ্জ তৃণমূল ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল বসাক বলেন, ভোট গণনার দুদিন পেরিয়ে গিয়েছে। এতদিন ব্যালট পেপার দেখা যায়নি। দুদিন পরে ব্যালট পেপার উদ্ধার হচ্ছে। আমাদের মনে হয় এটা বিজেপির চক্রান্ত। বিজেপি (BJP) যে অভিযোগ তুলছে সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ ব্লকের তেঁতুলিয়া পঞ্চায়েতের ইন্দ্রডাঙ্গা বেসিক প্রাইমারি স্কুলে ১৬০ নম্বর বুথে বৈধ ব্যালট পেপার গড়াগড়ি খাচ্ছে। ব্যালট পেপারে ভোটারের চিহ্ন দেওয়া জ্বলজ্বল করছে। এই সব বৈধ ব্যালট ছাড়াই কী করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হল, তা নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন।
গত ৮ জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়েছে এবং তার ফলাফল ঘোষণা কার্যত সারা হয়ে গিয়েছে। এরপরেও চারিদিকে গণনা পর্বে হিংসা এবং অনিয়মের অভিযোগ উঠে এসেছে। যার ফলে ভোটের ফল ঘোষণা হওয়া সত্বেও, আদালতের রায়ের দিকে জিতেও তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। ফল ঘোষণার পর তেঁতুলিয়া পঞ্চায়েতের ইন্দ্রডাঙ্গা বেসিক প্রাইমারি স্কুলে ১৬০ নম্বর বুথে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বহু ব্যালট পেপার। বেশ কিছু ব্যালট পেপারে প্রার্থীদেরকে ভোট দেওয়া হয়েছে। আবার কিছু নতুন ব্যালট পেপার যেগুলি ভোটে ব্যাবহার করা হয়নি, সেরকম বহু ব্যালটও পড়ে রয়েছে। কিন্তু, প্রত্যেকটি ব্যালট পেপারে প্রিসাইডিং অফিসারের সই রয়েছে।
সিপিএমের এজেন্ট সফিকুল হাসান বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন এই এলাকার সব বুথ তৃণমূলের দখলে ছিল। বুথে তৃণমূল ছাপ্পা মারে। তখনই কি সিপিএমের প্রার্থীর ব্যালট পেপারগুলি বাইরে বার করে নতুন ব্যালট পেপারগুলিতে ছাপ মেরে ব্যালট বক্সে ভরা হয়। আমাদের প্রশ্ন, কী করে সিপিএম প্রার্থীকে ভোট দেওয়া ব্যালট পেপারগুলি বাইরে এরকম ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে থাকল? তাহলে বিডিও সাহেব গণনার দিন কী করে ব্যালট পেপারের হিসাব ঠিক করলেন। কার ভিত্তিতে ফলাফল ঘোষণা করা হল?
এই বিষয়ে বিডিও প্রসন্ন মুখোপাধ্যায়কে ফোনে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, আমার কাছে এরকম কোনও অভিযোগ নেই। যদি কেউ অভিযোগ করত তাহলে আমি অবশ্যই বলতে পারতাম। তবুও, বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।