Government Hospitals: পরিষেবা ভাল নয়, তাই সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করান না খোদ মুখ্যমন্ত্রী!

রাজ্যের চিকিৎসক মহলের দাবি, খোদ মুখ্যমন্ত্রী যদি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা নিতে না পারেন, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবেন? 
mamata
mamata

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: তিনি এলেন, দেখলেন ও বললেন! আর তারপরেই যত বিপত্তি! বিতর্ক যেন থামছে না। সরকারি হাসপাতাল (Government Hospitals) নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের পরে বিস্মিত ও আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। বিরক্ত চিকিৎসক মহল থেকে স্বাস্থ্য কর্মী সকলেই। 

এসএসকেএম হাসপাতালের (Government Hospitals) ট্রমা কেয়ার কাণ্ডের পরে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য বিতর্ক উস্কে দিয়েছে। রোগীর চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার সেন্টারে তাণ্ডব চালায় এক রোগীর পরিজনেরা। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, সরকারি হাসপাতালে স্যালাইন ঢোকাতে হলেও হাত ফুলে যায়, রক্ত পরীক্ষা করাতে গেলেও যে ইঞ্জেকশন দিতে হয়, তাতে হাতে কালসিটে দাগ পড়ে যায়। ভয়ে তিনি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে যান না। এখানেই শেষ নয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ারে ভর্তি হওয়ার প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। অনেকটাই দেরি হয়। সরকারি হাসপাতালে জরুরি চিকিৎসা পেতেও অনেকটাই সময় লাগে। যা রোগীর পরিবারের কাছে বিরক্তিকর। 

মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের পরেই বিতর্ক মাত্রা ছাড়িয়েছে। রাজ্যের চিকিৎসক মহলের দাবি, খোদ মুখ্যমন্ত্রী যদি সরকারি হাসপাতালে (Government Hospitals) চিকিৎসা পরিষেবা নিতে না পারেন, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবেন? 

রাজ্যের ৭৫ শতাংশ মানুষ সরকারি হাসপাতালের (Government Hospitals) উপরে নির্ভরশীল। এই ৭৫ শতাংশের মধ্যে ৫৫ শতাংশ কলকাতার বিভিন্ন সরকারি মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসা করান। তার মানে এই সব জায়গায় ঠিকমতো চিকিৎসা হয় না? সামান্য রক্ত পরীক্ষার জন্য রক্ত সংগ্রহ করতে কিংবা স্যালাইন দিতেই যদি মুখ্যমন্ত্রীর অসুবিধা হয়, তাহলে রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য কাঠামো কি ভেঙে পড়েছে?

দায় কার? 

বিভিন্ন জনসভা কিংবা প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এই রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নতি, বিশেষ করে স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের কথা বলেন। নিখরচায় চিকিৎসার কথা জানান। যদি সরকারি হাসপাতালে (Government Hospitals) সামান্য চিকিৎসাও না হয়, তাহলে এ রাজ্যের স্বাস্থ্য খাদে এত বরাদ্দের বিজ্ঞাপন কেন? প্রশ্ন তুলেছেন বিশেষজ্ঞেরা। 

স্বাস্থ্য প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত কর্তাদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, সরকারি স্বাস্থ্য (Government Hospitals) ব্যবস্থায় দীর্ঘদিন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীর ঘাটতি রয়েছে। প্রয়োজন মতো নিয়োগ করা হয় না। এই মূল সমস্যাগুলো সমাধান না করলে সরকারি হাসপাতালের পরিকাঠামো উন্নতি সম্ভব নয়। সেটা মুখ্যমন্ত্রীও জানেন। কিন্তু তারপরও কোনও অদৃশ্য কারণে বাস্তব সমস্যাগুলোর সমাধান হয় না। 
চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তিতে দালাল চক্রের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। রাজ্যের শাসক দলের একাংশও এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত। মুখ্যমন্ত্রী এই হাসপাতালে (Government Hospitals) ভর্তির জটিলতা নিয়ে নানান কথা বললেও দালাল চক্র রুখতে সরকারের কড়া অবস্থান নিয়ে কোনও স্পষ্ট বার্তা কেন দিলেন না? সেই প্রশ্ন ও উঠছে।

আরও পড়ুন: হিন্দু মহিলাদের বিরুদ্ধে বিতর্কিত মন্তব্য করার জের, আসাম মহিলা কমিশনের নোটিস বদরুদ্দিন আজমলকে 

সর্বোপরি, মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি স্বাস্থ্য (Government Hospitals) ব্যবস্থা সম্পর্কে মন্তব্য একদিকে যেমন রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য অবহেলাকে স্পষ্ট করে দিলো, আরেকদিকে চিকিৎসক হেনস্থার ঘটনাকেও ইন্ধন জোগালো বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। সরকারি হাসপাতালে নূন্যতম পরিষেবা ঠিকমতো দেওয়া না হলে, তার দায় সরকার তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী এড়িয়ে যেতে পারেন না। তেমনি, পরিষেবায় কোনও ত্রুটি থাকলে স্বাস্থ্য কর্মী বা চিকিৎসককে নিগ্রহ করা যায় না। তার জন্য আইন আছে। মুখ্যমন্ত্রী কখনোই সেটা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে চাইছেন না। এতে রোগী পরিষেবা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেই আশঙ্কা করছেন চিকিৎসক মহল।

দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ। 

Share:

Facebook
Twitter
WhatsApp
LinkedIn

You may also like

+ There are no comments

Add yours

Recent Articles