Sukanta Majumdar: ‘‘ছিঃ! দেবীপক্ষের সূচনাতেও নিস্তার নেই বাংলার মেয়েদের...’’, জয়নগরের ঘটনায় মমতাকে তীব্র আক্রমণ সুকান্তর
নাবালিকাকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় রণক্ষেত্র জয়নগর (বাঁদিকে)। সুকান্ত মজুমদার (ডানদিকে)। ছবি— সংগৃহীত।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ন'বছরের বালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগকে ঘিরে রণক্ষেত্র দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) জয়নগর। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে শনিবার মহিষমারি এলাকায় ধুন্ধুমারকাণ্ড বাঁধে। রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দারা। ঝাঁটাহাতে পুলিশকে ধাওয়া থেকে, পুলিশকে ঝাঁটাপেটা করার ঘটনা ঘটে। মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় গুরুত্বপূর্ণ নথি। এমন পরিস্থিতিতে প্রাণভয়ে লুকিয়ে পড়েন পুলিশ কর্মীরা। ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয় এলাকায়। পরিস্থিতি সামাল দিতে র্যাফ নামানো হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে জয়নগর থানা থেকে বিশাল পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পাল্টা লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। এই ঘটনায় ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার দুপুরে কোচিং সেন্টারে পড়তে গিয়েছিল এক নাবালিকা। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মেয়েটি কোচিং থেকে আর বাড়ি ফেরেনি। এদিকে, মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন পরিবারের সদস্যেরা। অভিযোগ, তাঁদের কথায় প্রথমে গুরুত্ব দেয়নি পুলিশ। তাঁদের বলা হয়েছিল, জয়নগর থানায় অভিযোগ জানাতে হবে। পরিবারের দাবি, অভিযোগের কথা শুনেই পুলিশ তৎপর হয়ে উঠলে মেয়েকে হয়তো বাঁচানো যেত। বাড়ি থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যেই মহিষমারি (South 24 Parganas) এলাকায় পুকুর থেকে শিশুর দেহ খুঁজে পায় পুলিশ। তার পর এদিন সকালে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। দোষীর কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে পরিবার। সেই সঙ্গে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ উগরে দিয়েছে তারা।
আরও পড়ুন: কর্মবিরতি উঠল, বৃহত্তর আন্দোলন চলবে বলে জানালেন জুনিয়র ডাক্তাররা
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, পরিবারের লোকজন (South 24 Parganas) মেয়েকে খুঁজে না পেয়ে পুলিশের (Police) কাছে সহযোগিতা চেয়েছিলেন। কিন্তু, পুলিশ কোনও সহযোগিতা করেনি। উল্টে হেনস্থা করেছে। তাই, পরিবারের ক্ষোভ পুলিশের ওপর গিয়েছে পড়েছে। এলাকার মানুষও তাতে সামিল হন। আর সেই কারণে এদিন ঝাঁটা, লাঠি, বাঁশ নিয়ে মহিষমারি পুলিশ ফাঁড়িতে চড়াও হন মানুষ। এখন মানুষের রোষের মুখে পড়ে পুলিশ তৎপর হয়েছে। পাশাপাশি, এলাকার মানুষকে বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টাও চলছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রূপান্তর গোস্বামী বলেন, "অভিযুক্তকে আমরা গ্রেফতার করেছি। এখনও পর্যন্ত এক জনই গ্রেফতার। তদন্তের মাধ্যমে আরও কেউ জড়িত কি না, দেখা হবে। আপাতত এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চলছে। সেটাই আমাদের অগ্রাধিকার।”
এই ঘটনায় ফের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে কাঠগড়ায় তুলেছেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। তিলি লিখেছেন, ‘‘স্তম্ভিত! শিহরিত! কুলতলী থানা এলাকার কৃপাখালী এলাকায় টিউশন পড়ে ফেরার পথে বলপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে নৃশংসভাবে খুন করা হলো চতুর্থ শ্রেণীর একজন নাবালিকা ছাত্রীকে। পরে নদীর চর থেকে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করলেন ছোট্ট মেয়েটির নিথর দেহ। মহিলাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ বাংলার অপদার্থ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমার প্রশ্ন, দেবীপক্ষের সূচনাতেও নিস্তার নেই বাংলার মেয়েদের! আপনার অপশাসনে আর কতগুলি বাংলার মেয়ের এই পরিণতি হবে!! ছিঃ’’
স্তম্ভিত! শিহরিত! কুলতলী থানা এলাকার কৃপাখালী এলাকায় টিউশন পড়ে ফেরার পথে বলপূর্বক তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে নৃশংসভাবে খুন করা হলো চতুর্থ শ্রেণীর একজন নাবালিকা ছাত্রীকে। পরে নদীর চর থেকে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করলেন ছোট্ট মেয়েটির নিথর দেহ। মহিলাদের সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ বাংলার… pic.twitter.com/AlSsWh48lY
— Dr. Sukanta Majumdar (@DrSukantaBJP) October 5, 2024
ঘটনায় তৃণমূলকে আক্রমণ করেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, “মহিলাদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে। একজনও সাজা পায় না। শাসক দলের ঝাণ্ডার নীচে থাকলে এই অপরাধ কোনওদিনই বন্ধ হবে না।”
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।