Vishva Hindu Parishad: "বাংলায় বিপন্ন সাধু সমাজ"! মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিবাদে বঙ্গীয় সন্ন্যাসী সমাজের মিছিল শহরে
কলকাতার রাজপথে সাধুদের মিছিল।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কয়েক জন সাধুর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তব্যের অভিনব প্রতিবাদ সাধুদের। কলকাতার রাজপথে শুক্রবার এই মিছিলে হাঁটালেন কয়েক হাজার সাধু-সন্ত (Monks Protest Rally)। এদিন দুপুরে বঙ্গীয় সন্ন্যাসী সমাজের (Vishva Hindu Parishad) উদ্যোগে সন্ত অভিযান যাত্রার আয়োজন করা হল মহানগরে। বাগবাজারে অবস্থিত মা সারদার বাড়ি থেকে মিছিল শুরু হয়ে তা শেষ হয় বিবেকানন্দের জন্মভিটে সিমলা স্ট্রিটে।
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মিছিলের সাক্ষী হলেও সাধু-সন্তদের এই ধরনের প্রতিবাদ মিছিল (Monks Protest Rally) আগে কোনওদিন দেখেনি মহানগর। মিছিলে যোগ দেওয়া প্রচুর সাধুকে এদিন খালি গায়ে ও খালি পায়ে হাতে খঞ্জনি এবং শঙ্খ বাজাতে বাজাতে কলকাতায় রাস্তায় হেঁটে যেতে দেখা গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সনাতন ধর্মের অপমান করেছেন বলেই তাঁদের দাবি। এদিন বিকেল ৩টেয় বাগবাজারের নিবেদিতা পার্কে সমাবেশ হয়। এরপর মায়ের বাড়ি থেকে গিরিশ অ্যাভিনিউ, বাগবাজার স্ট্রিট, শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড় হয়ে বিধান সরণী দিয়ে বিবেকানন্দ রোডে স্বামীজির জন্মভিটেয় শেষ হয় সন্তদের পদযাত্রা। কলকাতায় বঙ্গীয় সন্ন্যাসী সমাজের উদ্যোগে আয়োজিত সন্ত অভিযান যাত্রার অংশ নেওয়া সাধুরা তৃণমূল সুপ্রিমোর মন্তব্যের তীব্র নিন্দা করে অবিলম্বে এই বিষয়ে তাঁকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি করেন। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একজন সাধু অভিযোগ করেন, যেভাবে নির্বাচনী জনসভার মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার্তিক মহারাজের মতো মহান একজন সাধুর নামে বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন তা কখনই মেনে নেওয়া যায় না। নির্দিষ্ট একটি সম্প্রদায়ের ভোট ব্যাঙ্ক সুরক্ষিত রাখার জন্য তিনি যে মন্তব্য সাধুদের নামে করেছেন তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এরপরে আরও বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার কথাও জানান সাধু-সমাজ।
আরও পড়ুন: এক মাস ধরে পরিকল্পনা শহরে, বাংলাদেশ সাংসদকে খুনের ঘটনা স্বীকার অভিযুক্তের
এই সন্ন্যাসী সংক্রান্ত ঘটনাপ্রবাহের শুরু গত শনিবার, আরামবাগে। সেখানে মমতা রামকৃষ্ণ মিশন এবং ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কয়েক জন সন্ন্যাসীর বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক বক্তৃতা করেছিলেন। বিশেষত, মুর্শিদাবাদের বেলডাঙার ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজের নাম করে তিনি বলেছিলেন, ‘‘ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম। কিন্তু যে লোকটা বলে, তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্ট বসতে দেব না, সেই লোকটাকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তার কারণ, সে ‘ডাইরেক্ট পলিটিক্স’ করে দেশটার সর্বনাশ করছে।’’ তার পাল্টা হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন কার্তিক। দাবি জানিয়েছেন মমতার ক্ষমা চাওয়ার। এই প্রসঙ্গে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (Vishva Hindu Parishad) বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বভারতীয় নেতা শচীন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, ‘‘এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই, ভোটেরও নয়। তবে, নির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোট পাওয়ার জন্য যে ভাবে হিন্দু সাধু-সন্তদের হুমকি দেওয়া হয়েছে, তাতে বাংলার হিন্দু সমাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিষদ উদ্বিগ্ন। সমস্ত প্রতিষ্ঠান এবং মঠের সন্ন্যাসীরাও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য এবং তার পরেই জলপাইগুড়িতে মিশনের উপর হামলার নিন্দা করেছেন। এর পরেই এই যাত্রার (Monks Protest Rally) সিদ্ধান্ত হয়।’’
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।