সম্প্রতি, নদিয়ার তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে...
ফরাক্কার পাঁচবারের বিধায়ক মইনুল হক (ফাইল ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ছাইয়ের দখল কার? এনটিপিসির ছাই নিয়ে এবার খুনোখুনির আশঙ্কা ফরাক্কায়। তুঙ্গে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। নবান্ন থেকে স্থানীয় থানা- ফরাক্কার ব্লক সভাপতির চিঠি গেল সর্বত্র। একই বিষয়ে চিঠি গেছে জেলাশাসক থেকে শুরু করে এসডিপিও, জেলা পুলিশ সুপারের কাছেও। চিঠিতে তোলাবাজির অভিযোগ প্রাক্তন বিধায়কের বিরুদ্ধে।
চিঠি পাঠিয়েছেন ফরাক্কার তৃণমূলের ব্লক সভাপতি শেখ আজারত আলি। নিজের প্রাণনাশের আশঙ্কা করে চিঠি পাঠিয়েছেন সর্বত্র। চিঠিতে অভিযোগ, প্রাক্তন বিধায়ক মইনুল হকের সিন্ডিকেট দখল রেখেছে এনটিপিসির ফ্লাই অ্যাশের কারবার। শেখ আজরাত আলির অভিযোগ, দৈনিক প্রায় ৭ লক্ষ টাকার কারবার চালাচ্ছেন ফরাক্কার পাঁচবারের বিধায়ক মইনুল হক।
এনটিপিসির ফ্লাই অ্যাশ সাপ্লাইয়ের দখল কার হাতে থাকবে তাই নিয়ে কোন্দল। মুখোমুখি সমরে শেখ আজারাত আর মইনুল হকের দুই গোষ্ঠী। মইনুল পাঁচবারের কংগ্রেস বিধায়ক। একুশের নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রতীকে প্রার্থীও হন বিধানসভায়। হেরে যান তৃণমূলের মনিরুল ইসলামের কাছে। এরপরই ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে দলবদল করে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন মইনুল হক। নব্য-পুরাতনের ঝগড়া তৃণমূলে আছেই। মইনুল যোগ দেওয়ায় সেই ঝগড়া বেড়েছে বই কমেনি। তবে শেখ আজারতের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন মইনুল হক। মাধ্যমকে একান্ত সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, ৫ বারের বিধায়ক থাকাকালীন তোলাবাজি সিন্ডিকেট করলাম না এখন করতে যাব কেন?
মইনুলের পাল্টা অভিযোগ, পুরানো ঈর্ষা থেকেই এমন অভিযোগ শেখ আজারাতের। তিনি বলেন, বাংলার নয় আদতে ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা আজারাত। তাকে ব্লক প্রেসিডেন্ট থেকে সরিয়েও দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের জেলা সভাপতি সাংসদ খলিলুর রহমান সবই জানেন।
সম্প্রতি, নদিয়ার তেহট্টের বিধায়ক তাপস সাহার বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। তাপস সাহা পলাশীপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন। সেই সময় বিধায়ক থাকাকালীন তিনি চাকরি দেবেন বলে বহু মানুষের কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলেছেন বলে অভিযোগ। কিন্তু, কাউকে চাকরি দেওয়া হয়নি, সেই সমস্ত ব্যক্তিদের টাকাও ফেরত দেওয়া হয়নি। এই প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন শাখা। তদন্তকারীদের সামনে টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন তাপসের আপ্ত সহায়ক প্রবীর কয়াল বলে দাবি।
কয়লা থেকে পাথর, গরুপাচারের একাধিক অভিযোগ বারবার উঠেছে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। সিন্ডিকেট তোলাবাজিরও একাধিক অভিযোগ আছে। এবার ঝগড়া ছাই নিয়ে। কার দখল থাকবে ছাই পাচারে? কোন সিন্ডিকেট পাবে বরাত? পারষ্পরিক তরজা চলছিলই। এবার একে অপরকে প্রাণে মারার অভিযোগ দিয়ে চিঠি। দুই গোষ্ঠীর লড়াইয়ে নাভিশ্বাস ফরাক্কার সাধারণ মানুষের। কেউ কেউ অবশ্য আড়ালে বলছেন, 'ছাইয়ের ঝগড়া'!