Anglo-Indians: নীল আকাশ আর অফুরন্ত শান্তি-এই নিয়েই সংসার ম্যাকলাস্কিগঞ্জের! খুব কাছের এই জায়গাটি কোথায় জানেন?
লাল পাথুরে মাটির পথ, দুপাশে শাল, সেগুন, মহুয়ার জঙ্গল...সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বলিউডের ‘আ ডেথ ইন দ্য গঞ্জ’ ছবিটি হয়ত অনেকেই দেখেছেন। কিন্তু সবাই জানেন না, এই ছবির শ্যুটিং হয়েছিল ম্যাকলাস্কিগঞ্জে (Mccluskieganj)। রাঁচি থেকে ৭০ কিমি দূরে ছোটনাগপুর মালভূমির ছোট্ট শহর এটি। ১৯৩৪ সালে রাতুর মহারাজের কাছ থেকে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমি লিজ নিয়ে (যার মধ্যে ছিল কঙকা, হেসাল এবং লাপড়া বস্তি) ভারতে বসবাসকারী অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের জন্য একটি কলোনি তৈরি করেন ই টি ম্যাকলাস্কি। তাঁর নামেই স্থানের নাম হয় 'ম্যাকলাস্কিগঞ্জ'। শুরুতে ছিল ৩০০টি পরিবার। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বেশ জমজমাট ছিল এই জায়গা। যদিও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ক্রমেই পরিবারের সংখ্যা কমতে থাকে। এখন তা (Anglo-Indians) কমতে কমতে ২৫ এরও নীচে নেমে এসেছে।
লাল পাথুরে মাটির পথ, দুপাশে শাল-সেগুন-মহুয়ার জঙ্গল, পাখির কূজন, নীল আকাশ আর অফুরন্ত শান্তি-এই নিয়েই সংসার ম্যাকলাস্কিগঞ্জের। এই অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নক্কি পাহাড় নামের একটি ছোট্ট পাহাড় আর চট্টি নামের একটি ছোট্ট নদী। এখনও এখানে যে কয়েক ঘর অ্যাঙ্গলো ইন্ডিয়ানদের (Anglo-Indians) পরিবার রয়েছে, গাছ-গাছালির ফাঁকফোকর দিয়ে দেখা যায় তাঁদের বাংলোগুলি। আর পথে চলতে গিয়ে দেখা হয়ে যায় আদিবাসী বাচ্চা ছেলেমেয়েদের সঙ্গে। তাদের মুখে সর্বদাই লেগে রয়েছে হাসি। অদ্ভুত সুন্দর আর নিষ্পাপ সারল্যের হাসি।
অন্যান্য স্থানে যখন প্রবল গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত, তখনও এখানে শীতের আমেজ। ভরা বর্ষায় এই মালভূমির রুক্ষতা, আবার একই সঙ্গে শ্যামলিমা ধরা পড়ে এখানে। আর বসন্তে যখন চারদিকে ফুটে ওঠে রক্তলাল পলাশ, তখন মনে হয় যেন চারদিকের অরণ্যে আগুন লেগেছে। এই অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আকর্ষণে এবং দারুণ জলবায়ুর কারণেই এক সময় অনেক কৃতি বাঙালি এই ম্যাকলাস্কিগঞ্জে (Mccluskieganj) বাংলো বাড়ি তৈরি করেছিলেন। এঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন প্রখ্যাত সাহিত্যিক সদ্য প্রয়াত বুদ্ধদেব গুহ। এখানেই তিনি তাঁর 'ছুটি' নামের বাংলোতে বসে লিখেছিলেন বিখ্যাত উপন্যাস 'একটু উষ্ণতার জন্য'।
যাতায়াত-ঝাড়খণ্ডের রাজধানী রাঁচি এবং বেতলা জাতীয় উদ্যান থেকে বাস যাচ্ছে ম্যাকলাস্কিগঞ্জ (Mccluskieganj)। আর কলকাতা থেকে সরাসরি যাচ্ছে শক্তিপুঞ্জ এক্সপ্রেস এবং ভূপাল এক্সপ্রেস।
থাকা-খাওয়া-এখানে হোটেলের সংখ্যা খুবই কম। কিছু কিছু বাড়ি আছে যেগুলো সামান্য অর্থের বিনিময়ে পর্যটকদের ভাড়া দেওয়া হয়। প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন ০৯৮৩১৩৯০৫২৪, ০৮৯৮১৬১২১০০ নম্বরে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।