কালিয়াগঞ্জে পৌঁছে কী করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন?
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা মৃত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কালিয়াগঞ্জে (Kaliaganj) পুলিশের গুলিতে মৃত বিজেপি কর্মীর বাড়িতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন পৌঁছাল। মৃত্যুঞ্জয়ের মৃত্যুর কারণ জানতে পরিবারের সদস্যদের বক্তব্য শুনলেন কমিশনের সদস্যরা। পরিবারের দাবি পুলিশের উপর আমাদের কোনও বিশ্বাস নেই। আর তাই দোষীদের ফাঁসি দিতে কমিশনের কাছে সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছে পরিবার।
সোমবারেই কমিশনের সদস্যরা কালিয়াগঞ্জের (Kaliaganj) রাধিকাপুরে নিহত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাড়িতে গিয়ে, স্ত্রী গৌরি বর্মনের সঙ্গে দেখা করে, মৃত্যুর ঘটনা সম্পর্কে বিষদ তথ্য সংগ্রহ করলেন বলে জানা গেছে। এরপর মৃত্যুঞ্জয়ের দাদা মৃণাল কান্তি বর্মন এবং খুড়তুতো দাদা বিষ্ণু বর্মনকে দীর্ঘক্ষণ জিজ্ঞাসাবাদ করে বয়ান রেকর্ড করেন মানবাধিকার কমিশনের সদস্যরা। শুধু বয়ান রেকর্ডই নয়, পুরো তদন্ত প্রক্রিয়াটি ভিডিওগ্রাফি করা হয়। পরিবারের প্রত্যেকের বয়ান রেকর্ডের পর প্রত্যেকের কাছেই স্বাক্ষর করে নিয়েছে বলে কালিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি সদস্য দাদা বিষ্ণু বর্মন জানিয়েছেন। এরপর ওই দিন রাতেই নিহত মৃত্যুঞ্জয়ের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় তদন্তকারী দলটি। তবে সংবাদমাধ্যমের সামনে কোনও প্রতিক্রিয়া দেননি তদন্তকারী জাতীয় মানবাধিকার কমিশন দলের সদস্যরা।
উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কালিয়াগঞ্জ (Kaliaganj) ব্লকের সাহেবঘাটা এলাকার গাঙ্গুয়া গ্রামের এক নাবালিকাকে ধর্ষন করে খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে উঠেছিল গোটা এলাকা। ঘটনার প্রতিবাদে কালিয়াগঞ্জ থানায় বিক্ষোভ দেখাতে গেলে ধুন্ধুমার কান্ড ঘটে। উত্তেজিত জনতা পুলিশকে মারধোর এবং থানায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়। গত ২৬ এপ্রিল রাতে বিষ্ণু বর্মনকে গ্রেফতার করতে তাঁর বাড়ি চাঁদগাঁ গ্রামে যায় পুলিশ। পুলিশ বিষ্ণু বর্মনকে না পেয়ে, তাঁর বাবা এবং জামাইকে গ্রেফতার করতে গেলে, পরিবারের সদস্যরা এবং গ্রামবাসিরা পুলিশকে বাধা দেয়। পুলিশ বেগতিক দেখে গুলি চালালে বিজেপি কর্মী মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলে। পরে এই ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়ে উঠেছিল।
মৃত্যঞ্জয়ের (Kaliaganj) বাবা রবীন্দ্রনাথ বর্মন বলেন, এখানকার থানার পুলিশ অফিসার নিজে মাথায় ব্যান্ডেজ করে হাসপাতালে শুয়ে নাটক করছেন। প্রকৃত দোষীদের পুলিশ গ্রেফতার করেনি। সিআইডি তদন্তের নামে রোজ বিরক্ত করছে আমাদের। তিনি আরও বলেন, যদি পুলিশের গুলিতে মৃত্যঞ্জয়ের মৃত্যু না হয়ে অন্য কিছু দিয়ে হতো, তাহলে আমাদের পরিবারের মানুষকে আগে গ্রেফতার করত পুলিশ। মৃত্যঞ্জয়ের বাবার একটাই দাবি, আমরা সিবিআই তদন্ত চাই। পুলিশের উপর কোনও আস্থা নেই। মৃত্যঞ্জয়ের স্ত্রী গৌরি বর্মন বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উপর আমার বিশ্বাস রয়েছে। মৃত্যুর তদন্ত সিবিআই করবে বলেই আশা রাখি। সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেন, মূল দোষীর ফাঁসি চাই। মৃত্যুঞ্জয়ের খুনীদের শাস্তি কবে হয়, সেটাই এখন দেখার।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।