মালদহের ইংরেজবাজার ব্লকের আমজামতলা গ্রামে নীল গাই দেখে উপচে পড়ে ভিড়। কোথায় থেকে এসেছিল নীল গাইটি, রাতের অন্ধকারে আবার কোথায় হারিয়ে যায়। যা নিয়ে রহস্য দানা বেঁধেছে এলাকাবাসীর।
মালদহের আমজামতলা গ্রামের আমবাগানে হাজির নীল গাই
মাধ্যম নিউজ ডেস্কঃ আমবাগানে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নীলগাই (Animal)। নিজেদের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না ইংরেজবাজার ব্লকের যদুপুর-২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের আমজামতলা গ্রামের সুকুমার সাহা, নয়ন মণ্ডলরা। মুহূর্তের মধ্যে সেই খবর ভাইরাল হয়ে যায়। আর চোখের দেখা এক পলক দেখতে ভিড় জমালেন এলাকার বাসিন্দা। দিনভর নীলগাইকে নিয়ে মজেছিলেন আমজামতলার বাসিন্দারা। অনেকে কাছে গিয়ে তাকে ধরার চেষ্টা করলেন। কিন্তু, তার নাগাল পেল না কেউ। গত বছর মে মাস নাগাদ মালদহের হরিশচন্দ্রপুরের কনকনিয়া এলাকায় নীলগাই দেখতে পেয়েছিলেন এলাকাবাসী। সাধারণত উত্তরপ্রদেশ এবং মহারাষ্ট্রের জঙ্গলে নীলগাই সব থেকে বেশি দেখা যায়। মালদহের আদিনা ডেয়ার পার্কেও নীলগাই (Animal) রয়েছে। ফলে, বহু আগে থেকে নীল গাইয়ের সঙ্গে এই জেলার মানুষ পরিচিত। তবে, বাড়ির দুয়ারে এভাবে নীলগাই চলে আসবে তা গ্রামের বাসিন্দারা ভাবতেও পারেননি।
আমজামতলা গ্রামের ধার দিয়ে পরই মহানন্দা নদী বয়ে গিয়েছে। নদীর ওপারেই বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকা। বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া ওই এলাকায় বিশাল ঘন জঙ্গল রয়েছে। সেখানে নীল গাই থাকতে পারে। গরম পড়তেই মহানন্দা নদীতে এখন হাঁটু সমান জল। সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়াজাল এই এলাকায় অনেকটা এলাকা জুড়ে নেই বললেই চলে। ফলে, খুব সহজেই বাংলাদেশ থেকে আসা সম্ভব। স্থানীয়দের আশঙ্কা, নদীর জল কম থাকায় বাংলাদেশের ওই জঙ্গল থেকে নীলগাইটি আমজামতলায় চলে আসে। এই গ্রামে সুকুমার সাহার একটি নার্সারি রয়েছে। সেখানেই প্রথম নীলগাইটি (Animal) সকলের নজরে পড়ে। সুকুমারবাবু বলেন, অন্যদিনের মতো আমি নার্সারিতে কাজ করছিলাম। আচমকাই হরিণের মতো একটি প্রাণীকে (Animal) আমবাগানের কাছে ঘোরাঘুরি করতে দেখি। কাছে গিয়ে বুঝতে পারি নীল গাই। স্থানীয় বাসিন্দা বাবলু হালদার, নয়ন মণ্ডলদের মতো গ্রামের প্রচুর মানুষ আম বাগানে ছুটে আসেন। খবর যায় আশপাশের গ্রামে। কেউ টোটো ভাড়া করে, কেউ বাইক নিয়ে আমজামতলায় ভিড় করেন। অনেকে চোখের সামনে নীলগাই দেখে মোবাইলে ছবিও তোলেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, সীমান্ত লাগোয়া গ্রাম। আমাদের জেলায় নীল গাই আদিনা ডেয়ার পার্ক ছাড়া কোথাও নেই। কিন্তু, সেখান থেকে নীল গাই আসার কোনও সম্ভাবনা নেই। এখন সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশ। সেখানকার জঙ্গল থেকে নদী পেরিয়ে এই নীল গাই এখানে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বন দপ্তরকে জানানো হয়। তবে, বন দপ্তরের কর্মীরা আসার আগেই সোমবার সন্ধ্যার পর আর নীলগাইটিকে গ্রামের কোথাও দেখা যায়নি। মঙ্গলবার সকাল থেকে গ্রামের বাসিন্দারা নীলগাইয়ের খোঁজে তল্লাশি চালায়। কিন্তু, কোথাও তার হদিশ মেলেনি। সম্ভবত, সোমবার রাতের অন্ধকারে নীলগাইটি ফের নদী পেরিয়ে বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে। এই বিষয়ে জানতে বন দপ্তরের এক আধিকারিককে ফোন করা হলে তিনি ফোন না তোলায় কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।