প্রাইমারি চাকরি ছেড়ে হাইস্কুলে চাকরি পেয়েছিলেন হুগলির কার্তিক ধারা, কোর্টের রায়ে এবার সেই চাকরিও গেল
কার্তিক ধাড়া (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: বাবা সেলুন চালিয়ে সংসার চালান। বাম আমলে প্রাথমিকে চাকরি পান। কিন্তু, হাইস্কুলের চাকরি পেয়ে হুগলির কার্তিক ধাড়া এসে ওঠেন শিলিগুড়িতে। ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তিনি প্রাথমিকের চাকরি ছেড়ে হাইস্কুলে যোগ দেন। ৭ বছরের বেশি সময়ের নিশ্চিত চাকরি ছেড়ে, বাড়ি ছেড়ে এসেছিলেন শিলিগুড়ি। এসএসসির নিয়োগ দুর্নীতি (SSC Recruitment Scam) মামলায় হাইকোর্টের রায়ে এবার গেল সেই চাকরিও। মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল কার্তিকের। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, কার্তিকবাবুর বাড়ি হুগলির চন্দননগরে। বাড়িতে বয়স্ক বাবা-মা। বাবার সেলুন আছে। কার্তিক গ্র্যাজুয়েশন করার পর বাবা বলেছিলেন, এবার একটু কাজের খোঁজ করতে। সেলুন চালিয়ে আর তিনি একা এত কিছু টানতে পারছিলেন না। কার্তিকবাবু টিউশন করে এম কম করেন। পরে, ফর্ম ফিলআপ করে হরিপালে প্রাইমারি স্কুলে চাকরি পান তিনি। ২০১১ সালে চাকরিতে যোগদান করেন তিনি। পরে, এডুকেশনে আবার এম.এ করেন। কমার্সে দু'বার নেট ক্লিয়ারও করেছেন তিনি, দাবি পরিবারের সদস্যদের। ইচ্ছা ছিল কলেজেও পড়ানোর। বিভিন্ন পরীক্ষার ফর্ম ফিলআপ করতেন তিনি। ২০১৬তে এসএসসির ফর্ম বেরোল। লিখিত পরীক্ষায় বসলেন তিনি। ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন, ভাইভা সবেতেই পাশ করে ২০১৮ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর প্রাথমিকের চাকরি ছেড়ে হাইস্কুলে যোগ দেন। প্রাথমিকের প্রায় সাড়ে সাত বছরের চাকরি ছেড়ে এসএসসি দিয়ে হাইস্কুলে পড়াতে শিলিগুড়ি এসেছিলেন তিনি। সোমবার কলকাতা হাইকোর্ট ২০১৬ সালের এসএসসি নিয়োগের (SSC Recruitment Scam) গোটা প্যানেল বাতিল করে দেওয়ার পর তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন।
আরও পড়ুন: ১৭টি বিভিন্ন উপায়ে নিয়োগে দুর্নীতি করেছে এসএসসি! কী বলল হাইকোর্ট?
কার্তিক বলেন, "তালিকায় নিশ্চয়ই কিছু গোলমাল হয়েছে। তা নিয়ে কোনও বক্তব্য নেই। কিন্তু, যারা কিছু করেনি, তাদের কথা কোর্ট একবারও ভাবল না। আমার তো মাথাই কাজ করছে না, কী করব। এখন মনে হচ্ছে আগের প্রাইমারি চাকরিটা না ছাড়লে আজ আমার এরকম অবস্থা হতো না। পরিবারের চিন্তা, সঙ্গে আবার লোনও নিয়েছেন। বাড়ি থেকে আমাকে ফোনও করেছে। তাঁরা ভয় পাচ্ছেন, আমি যদি কিছু করে বসি। খুব বড় ধাক্কা। আমরা যারা যোগ্য, তাদের কাছে তো এই রায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো। সবাইকে বাতিল করে দিল, তাতে তো আমরাও খাদে পড়লাম। কী করব তো বুঝতেই পারছি না। এবার লোকজনও অন্য চোখে দেখবে। আমি যে যোগ্য কেউ তো বিশ্বাসই করবে না।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।