এসএসসি কেলেঙ্কারি থেকে গরু, কয়লা পাচার। দুর্নীতির পাহাড়ে বসে কিছুদিন আগেও ক্ষমতার আস্ফালন করতে দেখা গিয়েছিল এই নেতাদের।
তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠক
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: একের পর এক দুর্নীতির পর্দা ফাঁস হচ্ছে তৃণমূল (TMC) নেতাদের। আত্মবিশ্বাস তলানিতে এসে ঠেকেছে রাজ্যের শাসক দলের। জনতার রোষে এতটাই জর্জরিত তৃণমূল যে সাংবাদিক বৈঠক করে 'তৃণমূলে সবাই চোর নয়' - এই বিবৃতি দিতে হচ্ছে প্রথম সারির নেতাদের। আর এই সবে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকায় যে মোটেই খুশি নয় তাঁরা সে কথাও জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: তৃণমূলের হয়ে প্রচার অর্পিতার, প্রকাশ্যে ছবি, এর পরেও অস্বীকার করবে শাসক দল?
হাসপাতাল থেকে হাসতাপাল। অভিযুক্ত তৃণমূল নেতাদের দেখলেই এখন ভেসে আসছে একটাই আওয়াজ। কেউ মুখ লুকিয়ে কোনও রকমে পালাচ্ছেন। কেউ আবার বুকে হাত দিয়ে সবকিছু শুনছেন। উপায় নেই। অনেকে বলছেন, পাপের ফল। যে যাই বলুক, একের পর এক কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আসার পর এখন আর কেউ ভয় পাচ্ছে না শাসককে। তাই কেলেঙ্কারির নায়কদের দেখলেই রব উঠছে, চোর চোর চোর। এসএসসি কেলেঙ্কারি থেকে গরু, কয়লা পাচার। দুর্নীতির পাহাড়ে বসে কিছুদিন আগেও ক্ষমতার আস্ফালন করতে দেখা গিয়েছিল এই নেতাদের। এখন সবকিছু সামনে আসতেই লজ্জায় মুখ লুকোনোর জায়গা পাচ্ছেন না তাঁরা। অনুব্রত থেকে পার্থ জনতার 'চোর' বদনাম থেকে রেহাই পাননি কেউ। এমনকি হাসপাতাল চত্বরে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে দেখে জুতোও চুড়ে মারেন এক মহিলা। কেলেঙ্কারি ফাঁস হওয়ার ভয়ে সিঁটিয়ে আছেন আরও অনেকে। সকলেই ভয় পাচ্ছেন, তাঁকেও না শুনতে হয় এই চোর অপবাদ। চায়ের ঠেক থেকে বিধানসভা সব জায়গায় একটাই আলোচনা, 'তৃণমূল সরকারের দুর্নীতি'। আর এতেই বেজায় বিপদে পড়েছে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: কয়লা-পাচার কাণ্ডে আজ সিবিআই আদালতে সাত ইসিএল কর্তা
তাই ঢাক ঢোল পিটিয়ে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে 'চোর' না হওয়ার সাফাই দিতে হচ্ছে। তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ব্রাত্য বসু, ফিরহাদ হাকিমসহ (Firhad Hakim) অন্যান্য নেতারা। ফিরহাদ হাকিম বলেন, "আমি লজ্জিত, পার্থ চট্টোপাধ্যায় যা করেছেন। এই পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিনতাম না। কিন্তু, তার মানে এই নয়, তৃণমূল কংগ্রেস করা মানে সবাই চোর। মানুষের কাজ করার স্বার্থে আমরা কাজ করেছি। তারপরও ব্যক্তিগতভাবে চক্রান্ত করা হচ্ছে। অপমান করা হচ্ছে। একটা মামলা হয়েছে। ২০১৭ সালে। আমাদের সম্পত্তি খুব বেড়ে গিয়েছে। আমরা কোনও ফ্যাক্ট লুকিয়েছি? অনেকে রোজগারের টাকায়, ব্যবসা করেছি? অদ্ভুত লাগে, অর্ধ সত্য প্রকাশিত হচ্ছে।"
শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) বলেন, " আয়বৃদ্ধির ক্ষেত্রে আদালতের দেওয়া তালিকায় তৃণমূলের নেতাদের পাশাপাশি বাম, কংগ্রেস নেতাদের নামও রয়েছে। সেই সব নাম নিয়ে সংবাদমাধ্যমের একাংশ টুঁ শব্দ করছে না। উল্টে সংবাদমাধ্যমের একাংশ ‘ক্যাঙারু কোর্ট’ বা ‘খাপ পঞ্চায়েত’ বসাচ্ছে তৃণমূল নেতাদের সম্পত্তি নিয়ে।"
তাহলে কি এবার ভয় পেতে শুরু করেছেন তৃণমূল নেতারা! এবার কার ডাক পড়বে ইডি দফতরে তার ভয়ে সিটিয়ে যাচ্ছেন! তার তাতেই কি আগাম সাফাই? যাতে এরপর তাঁদের দিকেও না আসে চোর স্লোগান। এমনটাই কিন্তু বলছে রাজনৈতিক মহল।