Strike: পাহাড়ে ১২ ঘণ্টা বন্ধের ডাক দিলেন চা শ্রমিকরা, কেন জানেন?
পাহাড়ে বনধের জেরে উদ্বেগে পর্যটকরা (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ সফরের মাঝেই রবিবার পাহাড়ে বন্ধের ডাক দিয়েছিলেন চা শ্রমিকরা। ৮ বছর পর ফের ১২ ঘণ্টার জন্য পাহাড় বনধের ডাক দেওয়া হয়েছিল। চা বাগান শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ এই বন্ধের ডাক দিয়েছিলেন। পাহাড়ের সকল রাজনৈতিক দলই এই বন্ধকে সমর্থন করেছিল। এমনকী, তৃণমূল কংগ্রেসের শরিক অনীত থাপাও শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেন। মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরকালে দার্জিলিংয়ে (Darjeeling) এহেন বন্ধ রাজ্য সরকারের অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে বলে অভিমত রাজনৈতিক মহলের। ভবিষ্যতে অনীতের অবস্থান কী হবে, সেই নিয়েও জোর চর্চা রাজনৈতিক মহলে।
চা শ্রমিকদের (Darjeeling) কল্যাণে মমতা-সরকার কোনও উদ্যোগই নেয়নি বলে অভিযোগ। বরং, যতদিন দিন গিয়েছে, জুটমিল শ্রমিকদের মতো চা শ্রমিকদের দুর্দশা বেড়েই চলেছে। তৃণমূল সরকার হস্তক্ষেপ করে চা শ্রমিকদের স্বার্থে কোনও উদ্যোগই গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ। ফলে, যতদিন গিয়েছে তৃণমূল সরকারের ভূমিকায় চা শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ তত বেড়েছে। পুজোর আগে ২০ শতাংশ বোনাসের দাবি জানিয়েছিলেন চা শ্রমিকরা। কিন্তু, মালিকপক্ষ জানিয়ে দেয়, ১৩ শতাংশের বেশি বোনাস দেওয়া সম্ভব নয়। এই আবহে রবিবার চা বাগান শ্রমিকদের বোনাসের দাবিতে চতুর্থ বার ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয় দাগাপুরের শ্রমিক ভবনে। তবে, সেই বৈঠক ভেস্তে গিয়েছিল। এই আবহে রবিবারই বন্ধের ডাক দেওয়া হয়েছিল। দার্জিলিং, কার্শিয়াং, কালিম্পং এবং মিরিকে পালিত হয় বন্ধ।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম-শুনানির আগের রাতে কলকাতায় মশাল হাতে মহামিছিল জুনিয়র ডাক্তারদের
আন্দোলনকারী (Darjeeling) নেতা বলছেন, "তরাই-ডুয়ার্সে ২০ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। পাহাড়ে এখনও হয়নি। আমরা রবিবারও মিটিংয়ে বসেছিলাম। কোনও সিদ্ধান্তে আসা সম্ভব হয়নি। তাই বাধ্য হয়েই আটটা শ্রমিক সংগঠন মিলে বন্ধ ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বুঝতে পারছি পর্যটকদের সমস্যা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই।"
পুজোর মুখে পাহাড়ে বেড়াতে গিয়ে মহা ভোগান্তিতে পর্যটকরা। পাহাড়ে ওঠা নামার সমস্ত রাস্তাই বন্ধ করে দিয়েছেন বন্ধ সমর্থকরা। আটকে গিয়েছে সমস্ত গাড়ি। রোহিনীতে গেট আটকে পিকেটিং করছেন বন্ধ সমর্থকরা। আটকে পর্যটকরা। ইতিমধ্যেই কার্শিয়াঙে বিক্ষিপ্ত অশান্তির ঘটনা ঘটে। বন্ধ হঠাতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়ে পুলিশ। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হয় বন্ধ সমর্থকদের। পাহাড়ে (Darjeeling) ওঠার রাস্তা রোহিনী থেকে শুরু হয়, সেই রাস্তা বন্ধ। আটটি শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। আটকে পড়ে এক পর্যটক বলেন, "আমাদের কাছে আর কোনও অপশন নেই, পাহাড় থেকে নামার। শিলিগুড়িতে পৌঁছানোর আর কোনও উপায় নেই।" প্রসঙ্গত, বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে উত্তরবঙ্গে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। রবিবারই উত্তরকন্যায় বৈঠক করেছেন। তার মধ্যেই এই ধরনের বন্ধ রাজনৈতিক দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ।
বন্ধ প্রসঙ্গে অনীতের দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, "আমরা বন্ধের (Strike) বিরোধিতাও করছি না, আবার সমর্থনও করছি না। সোমবার ফের একটা আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। শ্রমিকরা নিজেরাই এই বন্ধ পালন করতে চাইছে না। এতে আখেরে মালিকদেরই লাভ হবে। এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সমস্ত ট্রেড ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। তবে আমরা শ্রমিকদের পাশে রয়েছি।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।