img

Follow us on

Sunday, Jan 19, 2025

West Bengal Day: ১৯৪৭ সালে আজকের দিনে পাশ হয় পশ্চিমবঙ্গ গঠনের প্রস্তাব, কী ঘটেছিল সেদিন?

Creation of West Bengal: বঙ্গীয় আইনসভায় হওয়া ভোটাভুটিতে কারা কারা ছিল পক্ষে? আর কারা ছিল বিপক্ষে? ফিরে দেখা ইতিহাসের পাতা...

img

১৯৪৭ সালের বঙ্গবিভাগ (আর্কাইভ থেকে)

  2022-06-20 18:22:17

মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ১৯৪৭ সালের বঙ্গভাগ বাংলার রাজনৈতিক ভূগোলে একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তনের অধ্যায়। এই বিভাজন করা হয়েছিল মূলত সাম্প্রদায়িক সংখ্যাতত্ত্বকে ভিত্তি করেই। হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলার পশ্চিমাঞ্চলকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পূর্বাঞ্চল অন্তর্ভুক্ত হয় পূর্ব পাকিস্তানে।

১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গকে ভারতীয় জাতীয়তাবাদী হিন্দু প্রত্যাখ্যান করলেও কংগ্রেসবিরোধী মুসলমান বিশেষ করে পূর্ববাংলার জনগণ, তার প্রতি সমর্থন জানিয়েছিল। কিন্তু, ১৯৪৭ সালে বঙ্গভাগের প্রস্তাব করেছিল হিন্দুরা, বিশেষ করে হিন্দু মহাসভা। মুসলিম নেতৃত্ব প্রথমে প্রস্তাবের বিরোধিতা করলেও পরবর্তী সময়ে তারা তা গ্রহণ করেছিল।

১৯৩৭ থেকে ১৯৪৭ সালের মধ্যে অবিভক্ত বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সুরাওয়ার্দির নেতৃত্বাধীন মুসলিম লিগ শাসনকালে অকথ্য ও বর্বরোচিত অত্যাচারের সাক্ষী থেকেছিল হিন্দুরা। সেই সময়ই ঘটেছিল ৪৬-এর দাঙ্গা, নোয়াখালির দাঙ্গা এবং 'দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং'-এর ঘটনাপ্রবাহ।

অচিরেই, হিন্দুদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছিল। হিন্দুরা বুঝতে পারছিলেন যে, বাংলা অবিভক্ত থাকলে সেখানে সংখ্যাধিক্যের কারণে মুসলমানদেরই আধিপত্য থাকবে এবং হিন্দুরা নিপীড়নের শিকার হবে। হিন্দুরা চাইছিল ভারতের অঙ্গরাজ্য হিসেবে থাকতে। অন্যদিকে, মুসলিমরা চাইছিল পাকিস্তানে যোগ দিতে।

হিন্দুদের সেই আতঙ্ক যে অমূলক ছিল না, তার প্রমাণ মেলে বঙ্গভাগের পর। ইতিহাস সাক্ষী আছে, বঙ্গ বিভাজনের পর এপারে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় বসবাসকারী মুসলিমরা বিশাল সংখ্যায় যে ওপারে চলে গিয়েছেন, এমন নিদর্শন পাওয়া যায়নি। অথচ অন্যদিকে, অন্তত ৭০ লক্ষ থেকে ১ কোটি হিন্দু এপারে চলে এসেছিলেন উদ্বাস্তু হয়ে। এর থেকেই পরিষ্কার ছিল যে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় হিন্দুদের কী অবস্থা ছিল।

আরও পড়ুন: পশ্চিমবঙ্গ দিবসের শপথ: আমি ভয় করব না, ভয় করব না

শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও অন্যান্যদের একান্ত চেষ্টায় ১৯৪৭ সালের ৩ জুন, বঙ্গ বিভাজন এবং ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য নীতি ও পরিকল্পনা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, ওই বছরের ২০ জুন বঙ্গভাগের প্রস্তাব বঙ্গীয় আইনসভার সদস্যদের দ্বারা গৃহীত হয়েছিল। তিন দফা ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

প্রথম ভোটাভুটি হয় অবিভক্ত বাংলার আইনসভার সকল সদস্যদের নিয়ে। প্রস্তাব ছিল ভারতে যোগদান নিয়ে। হিন্দুরা ছিলেন প্রস্তাবের পক্ষে। অর্থাৎ, ভারতে যুক্ত হতে। মুসলিমরা ছিলেন বিপক্ষে। অর্থাৎ, তারা পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকে ছিলেন। যৌথ অধিবেশনের ভোটাভুটিতে বিপক্ষে ১২৬টি এবং পক্ষে ৯০টি ভোট পড়েছিল। অর্থাৎ, প্রস্তাবটি গৃহীত হয়নি। 

দ্বিতীয় ভোটাভুটি হয় মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকার সদস্যদের নিয়ে। ভোটাভুটির প্রস্তাব ছিল বঙ্গ ভাগ করা। তাঁরা প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেন। একইসঙ্গে, তাঁরা পাকিস্তানে যোগদানের জন্য একটি প্রস্তাব পাশ করেছিলেন। ভোটাভুটির ফল ছিল ১০৬-৩৫। 

এর পর তৃতীয় ভোটাভুটি হয় হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকার সদস্যদের নিয়ে। প্রস্তাব ছিল পূর্ব পাকিস্তান ভেঙে পৃথক পশ্চিমবঙ্গ গঠন। হিন্দু সদস্যদের ভোটে পাশ হয়ে যায় প্রস্তাব। ভোটাভুটির ফল ছিল ৫৮-২১। তৃতীয় ভোটাভুটিতে পৃথক পশ্চিমবঙ্গ গঠনের পক্ষে একজোট হয়ে ভোট দিয়েছিলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ও জ্যোতি বসু। 

নথি বলছে, পৃথক পশ্চিমবঙ্গ গঠনের পক্ষে যাঁরা ভোট দিয়েছেন, তাঁরা সকলেই হিন্দু বা অমুসলিম। অন্যদিকে, এই প্রস্তাবের বিপক্ষে যাঁরা ভোট দিয়েছিলেন, তাঁরা সকলেই আইনসভার মুসলিম সদস্য।  এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কারা কারা পৃথক পশ্চিমবঙ্গ গঠনের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন এবং কারা বিপক্ষে। 

আরও পড়ুন: 'পশ্চিমবঙ্গ দিবস' পশ্চিমবঙ্গের অস্তিত্ব রক্ষার ঘোষণা





Tags:

West Bengal Day

West Bengal Day Special

West Bengal Foundation Day

Atrocities on Hindu Bengali

West Bengal Situation

Bengali Hindu Homeland

West Bengal creation resolution

Creation of West Bengal

Bengal Partition 1947


আরও খবর


ছবিতে খবর