PM Awas Yojana: আবাস যোজনা নিয়ে এবার কড়া বার্তা দিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী
আবাস যোজনা নিয়ে ঘোষণা মুখ্য সচিবের
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পঞ্চায়েত নির্বাচন আসতেই আবাস যোজনা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করল রাজ্য। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে। আর এরই মাঝে আবাস যোজনা নিয়ে আজ বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। অন্যদিকে কেন্দ্রের চাপ তো রয়েছেই। ফলে আজই ঘোষণা করা হল, ৯০ দিনের মধ্যেই আবাস যোজনার অধীনে বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করতে হবে। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে আবাস যোজনা নিয়ে সরকার সবথেকে বেশি যে গুরুত্ব দিতে চলেছে, তা সোমবার জেলাশাসকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করে স্পষ্টভাবেই বুঝিয়ে দিয়েছেন মুখ্য সচিব। নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী তিন মাসের মধ্যে আবাস যোজনায় প্রায় সাড়ে ১১ লক্ষ পাকা বাড়ি তৈরি হবে বাংলায়।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ঘিরে রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক গণ্ডগোল। আর এই আবাস যোজনা নিয়ে এবার কড়া বার্তা দিলেন রাজ্যের মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী (Harikrishna Dwivedi)। নবান্ন সূত্রে খবর, এদিন প্রায় দু'ঘণ্টা বিভিন্ন জেলাশাসক ও জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেন মুখ্য সচিব। এই বৈঠকেই জানানো হয়, আগামী তিন মাসের মধ্যেই সব বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করে ফেলতে হবে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেই আবাস যোজনার অধীনে বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করার জন্য সময়সীমা বেঁধে দিল নবান্ন। মুখ্যসচিব স্পষ্ট জানিয়েছেন, ৩১ মার্চ তথা বর্তমান আর্থিক বছরের মধ্যেই ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার বাড়ি বানানোর কাজ সেরে ফেলতে হবে। যদিও নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মোট ১০ লক্ষ ১৯ হাজার জনকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। আর এই ৮৯% এরও বেশি বাড়ি অনুমোদন করার জন্য বিভিন্ন জেলাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্য সচিব।
গতকাল বৈঠকে জানানো হয়েছে, প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার ৪০ দিনের মধ্যে বাড়ির জানলা পর্যন্ত নির্মাণ করতে হবে। পরবর্তী কিস্তির ৩৫ দিনের মধ্যে কাজ হবে ‘লিন্টেল’ বা জানলার উপরিভাগ পর্যন্ত। তার পরের কিস্তির ১৫ দিনের মধ্যে ঢালাই-সহ বাড়ি তৈরির সামগ্রিক কাজ শেষ করতেই হবে।
এবার কেন্দ্রের চাপেই আবাস যোজনা নিয়ে তৎপর রাজ্য। কারণ, কেন্দ্রের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে উপভোক্তা বাড়ি না-বানালে শেষ পর্যন্ত সমস্যায় পড়তে হতে পারে রাজ্যকেই। কেন্দ্রের থেকেও টাকা আসতেও হতে পারে সমস্যা। এছাড়াও সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন, ফলে রাজ্য তার আগেই আবাস যোজনা নিয়ে সতর্ক হয়ে পড়ছে।
আবার এদিন কোন কোন জেলার কেমন পারফরম্যান্স সেই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্যও জেলাশাসকদের সামনে তুলে দেন মুখ্য সচিব। সেই তথ্য অনুসারে, ৮০ শতাংশের নীচে অনুমোদন হয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায়। ৮০ থেকে ৯০ শতাংশের মধ্যে অনুমোদন হয়েছে কোচবিহার, ঝাড়গ্রাম, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, আলিপুরদুয়ার, মালদা, পূর্ব মেদিনীপুর, জলপাইগুড়ি, নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগনা এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়। ৯১ থেকে ১০০ শতাংশের মধ্যে অনুমোদন হয়েছে হুগলি, পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম, উত্তর দিনাজপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, পশ্চিম বর্ধমান, হাওড়া, পুরুলিয়া এবং বাঁকুড়া জেলায়। সর্বাধিক আবাস যোজনার অধীনে বাড়ি অনুমোদন করা হয়েছে হাওড়ায়।
প্রতিটি ব্লকে কন্ট্রোল রুম রাখতে হবে। আবাস যোজনার উপভোক্তাদের সহায়তার জন্য জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের অফিসে একটি হেল্পলাইনের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিমাসে ‘আবাস সপ্তাহ’ আয়োজন করতে হবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ব্লকের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ খরচের টার্গেট দিতে হবে ও সেগুলো ব্যয় সংক্রান্ত সমস্ত কিছু পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। পাশাপাশি স্টেক হোল্ডারদের ই-প্রশিক্ষণ, ইট প্রস্তুতকারক এবং যারা সরবরাহ করবেন, তাদের সঙ্গেও দিনকয়েকের মধ্যে বৈঠক করে রূপরেখা সাজানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এদিনের বৈঠকে। আগামী ৯ জানুয়ারি থেকে প্রত্যেক মুহূর্তের আপডেট নবান্ন কে দিতে হবে বলেও এদিনের বৈঠকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলাগুলিকে।