মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আজ, মঙ্গলবার রাজ্যে দশম পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election 2023) ভোট গণনা। সমতলের ২০ জেলায় ত্রিস্তরীয় ও পাহাড়ে দুই জেলায় দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটের গণনা শুরু হবে সকাল আটটায়। গণনার জন্য রাজ্যে মোট ৩৩৯টি গণনা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সবচেয়ে বেশি গণনা কেন্দ্র থাকছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২৮টি, মুর্শিদাবাদে ২৬। এরপরই রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে ২৫, পূর্ব বর্ধমানে ২৩টি, বাঁকুড়াতে ২২টি, উত্তর ২৪ পরগনায় ২২টি, পশ্চিম মেদিনীপুরে ২১টি, পুরুলিয়ায় ২০টি, বীরভূমে ১৯টি, নদিয়ায় ১৮টি, হুগলিতে ১৮টি, মালদায় ১৫টি, হাওড়ায় ১৪টি, কোচবিহারে ১২টি, জলপাইগুড়িতে ১০টি, দক্ষিণ দিনাজপুরে ৮টি, ঝাড়গ্রামে ৮টি, পশ্চিম বর্ধমানে ৮টি, উত্তর দিনাজপুরে ৮টি, আলিপুরদুয়ারে ৬টি, দার্জিলিঙে ৫টি, কালিম্পংয়ে ৪টি। গণনা পর্ব মসৃণ ও শান্তিপূর্ণ রাখতে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
গণনা কেন্দ্রের বাইরে ১৪৪ ধারা
গত শনিবার রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে (Panchayat Election 2023) কেন্দ্র করে বিপুল রাজনৈতিক হিংসা ও অশান্তির সাক্ষী থেকেছে রাজ্য। গণনা পর্বে তার পুনরাবৃত্তি আটকাতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন ব্যাপক সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রতিটি গণনা কেন্দ্রেই মোতায়েন করা হচ্ছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। প্রতিটি গণনা কেন্দ্রে এক কোম্পানি করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এছা়ডা রাজ্য সশস্ত্র পুলিশ ও ভিন রাজ্যের পুলিশও গণনা কেন্দ্রের পাশাপাশি আশপাশের এলাকার শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা করবে। প্রতিটি গণনা কেন্দ্রে থাকছে সিসিটিভির নজরদারি। গণনা কেন্দ্রের বাইরে ১৪৪ ধারা জারি থাকবে। তবে ভোটের মতো এক্ষেত্রেও বাস্তবে কী হবে, তা নিয়ে বিরোধীরা যথেষ্ট সন্দিহান। কমিশন জানিয়েছে, প্রথমে ভোটকর্মীদের ভোট গণনা করা হবে। তারপর গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং পরিশেষে জেলা পরিষদের আসনে ভোট গণনা হবে। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা জানান, গণনা পর্ব পুরো শেষ হতে ১২ জুলাই পেরিয়ে যেতে পারে।
প্রেক্ষাপট
শনিবার পঞ্চায়েত ভোটের দিনই (Panchayat Election 2023) বিভিন্ন জেলা রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল। রাজনৈতিক হিংসায় শুধু মাত্র ভোটের দিন প্রাণ হারিয়েছেন ১৮ জন। জায়গায় জায়গায় ভোট লুট, ছাপ্পা, ব্যালট বাক্সে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অনেক বুথে একঘণ্টার মধ্যেই ভোট গ্রহণ শেষ হয়ে যায়। আবার কোথাও কেন্দ্রীয় বাহিনীর দেখাও মেলেনি। বেশ কিছু রাজনৈতিক সংঘর্ষে ভোটদান বন্ধ হয়ে যায়। ভোট শেষের পরেই জেলা প্রশাসনের থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন৷ সেই রিপোর্ট খতিয়ে দেখে কোন জেলায় কতগুলি বুথে পুনরায় ভোট হবে, তার সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রবিবারই তার তালিকা প্রকাশ করে কমিশন। সেই মতো সোমবার রাজ্যের ৬৯৪ কেন্দ্রে শুরু হয় পুনর্নির্বাচন। অন্যদিকে পঞ্চায়েত ভোটে রাজ্যে হানাহানির যে ঘটনা ঘটেছে, তা নিয়েই কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় বিএসএফের আইজি এবং রাজ্য সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে কলকাতা হাইকোর্ট।
কমিশনের নির্দেশিকা
অন্যদিকে কমিশন সোমবার এক নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছে, গণনার (Panchayat Election 2023) সময় যে ব্যালক পেপারের পিছনে প্রিসাইডিং অফিসারের সিল ও স্বাক্ষর থাকবে না, সেই ব্যালটকে বাতিল বলে ঘোষণা করা হবে। গণনা কেন্দ্রে একমাত্র কাগজ আর পেন নিয়ে প্রবেশ করা যাবে। পাশাপাশি বিধানসভা নির্বাচনের পর ভোট পরবর্তী অবস্থায় যে হানাহানির ঘটনা ঘটেছিল, তা ফের আবারও যেন না হয়, সেইজন্য রাজ্য নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, গণনার দশদিন পরেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকবে রাজ্যে। এখন দেখার বিষয় একটাই যে ছাপ্পার মুখে ছাই ফেলতে আদৌ কি কমিশন সত্যিই প্রশংসনীয় হয়ে উঠবে নাকি প্রতিবারের মতো এবারও নিজেদের মুখ পোড়াবে সকলের কাছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।
+ There are no comments
Add yours