'তৃণমূল নেতাদের ঘুষ দিলেই মেলে আবাস যোজনার টাকা', দাবি উপভোক্তাদের
আবাস যোজনার কাজ দেখতে কেন্দ্রীয় টিম (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (Pradhan Mantri Awas Yojana) মূলত গৃহহীন ও দু'টি ঘরের কাঁচা বাড়িতে বসবাসকারী মানুষের জন্য পাকা বাড়ি তৈরি করতে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। গ্রামসভার প্রাথমিক ভাবে তালিকা তৈরি করার কথা। সেই মতো উপভোক্তাকে টাকা দেওয়া হয়। আর সরকারি প্রকল্পের টাকা পেতে কাটমানি দিতে হয়। অভিযোগ, রাজ্যের একাধিক জেলায় আবাসের বাড়ি পেয়ে ঘুষ দিতে হচ্ছে তৃণমূলের নেতাদের। কেন্দ্রের নিরপেক্ষ সংস্থাকে দেওয়া রিপোর্টে এই তথ্য উঠে এসেছে।
ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল ব্লকের রগড়া গ্রাম পঞ্চায়েত। ওই গ্রামের এক উপভোক্তার অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (Pradhan Mantri Awas Yojana) তালিকায় নাম পেতে তাঁকে ২ হাজার টাকা দিতে বাধ্য করা হয়েছে। ওই মহিলার অভিযোগ, গ্রামে যাঁদের নাম প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার তালিকায় উঠেছে, তাঁদের প্রত্যেককে ২ হাজার টাকা করে তৃণমূলের ‘পার্টি ফান্ড’-এ জমা করতে হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলার ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত। এক ব্যক্তির সরকারি খাতায়-কলমে বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, বাস্তবে এখনও বাড়ি তৈরির কাজ চলছে। বাঁকুড়ার জয়পুর, ইন্দাস ব্লকের তিন গ্রাম পঞ্চায়েতের আধ ডজন বাসিন্দার নামে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় তাঁদের চূড়ান্ত কিস্তির টাকা বরাদ্দ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু, তাঁদের কারও বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হয়নি। জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে আবাসের ঘর পেতে ১০ হাজার টাকা কাটমানি দিতে বলা হয়েছিল। উপভোক্তাদের বক্তব্য, তৃণমূল নেতাদের কাটমানি দিলেই তারা টাকা পেয়ে যাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (Pradhan Mantri Awas Yojana) প্রকল্পে কোন রাজ্যে কেমন কাজ চলছে, তা খতিয়ে দেখতে নিরপেক্ষ সংস্থাকে দিয়ে বিভিন্ন রাজ্যে সমীক্ষা চালিয়েছিল কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। গত বছর তিন দফায় এই সমীক্ষা চালানো হয়। দিল্লির একটি সামাজিক গবেষণা কেন্দ্রকে ‘জাতীয় স্তরের পর্যবেক্ষক’ হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল। তাতে শুধু ‘কাটমানি’-র তথ্য নয়। কোন ব্যক্তির থেকে কে টাকা আদায় করেছেন, কাদের নামে টাকা বরাদ্দ হলেও বাড়ি তৈরি হয়নি, তাঁদের নামও রয়েছে রিপোর্টে। রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর কেন্দ্রের এই রিপোর্ট নিয়ে মুখ খুলতে চায়নি। তবে তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে আগেই বলা হয়েছে যে কোথাও অনিয়ম হয়ে থাকলে তার জন্য গোটা রাজ্যের মানুষের টাকা বন্ধ করে অসুবিধায় ফেলা কেন্দ্রের উচিত হচ্ছে না। সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে,গত বছরের জানুয়ারিতে দেখা গিয়েছিল, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বাঁকুড়া, বীরভূম, উত্তর দিনাজপুর, হুগলি, মালদা, পূর্ব বর্ধমানে সেই তালিকা সরকারি ভাবে ঝোলানো নেই। গত বছরের মে মাসের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দার্জিলিং, দক্ষিণ দিনাজপুর, হাওড়া, ঝাড়গ্রাম,দেখা গিয়েছে, দার্জিলিং, দক্ষিণ দিনাজপুর, হাওড়া, ঝাড়গ্রাম, কালিম্পং, পশ্চিম বর্ধমান, শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদে ওই তালিকা প্রকাশ করা হয়নি। পুরুলিয়ায় দেখা গিয়েছে, যাঁদের নাম উঠেছে, তাঁরা বাছাই প্রক্রিয়া নিয়ে কিছুই জানেন না।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।