Sandeshkhali Incident: শাহজাহানের চারপাশে ঘিরে ধরছে একাধিক এজেন্সির জাল...এবার কি ধরা পড়বে?
শেখ শাহজাহান। ছবি— সংগৃহীত।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দেখতে দেখতে ৬ দিন পার! এখনও অধরা সন্দেশখালির (Sandeshkhali Incident) দাপুটে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান (Sheikh Shahjahan)। কোন ডেরায় তিনি ঘাপটি মেরে বসে আছেন, মেলেনি তার খোঁজ। তবে, বসে নেই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ধীরে ধীরে জাল বিছোতে শুরু করে দিয়েছে তারা। আর এই কাজে তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিএসএফ থেকে শুরু করে এনআইএ, এমনকী আয়কর দফতরও।
রেশন দুর্নীতির তদন্তে গত শুক্রবার সন্দেশখালির (Sandeshkhali Incident) সরবেরিয়াতে শেখ শাহজাহানের (Sheikh Shahjahan) ডেরায় অভিযানে গিয়েছিল ইডি। সেখানেই তাদের ওপর হামলা হয়। শাহজাহানের অনুগামীরা বাঁশ, লাঠি ও ইট দিয়ে হামলা চালায় ইডি অফিসার ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ওপর। হামলার জেরে মাথা ফেটে যায় ৩ ইডি আধিকারিকের। ক্ষতিগ্রস্ত হয় তদন্তকারী সংস্থার গাড়ি। সেদিনকার মতো সন্দেশখালি থেকে খালি হাতে চলে এলেও, শাহজাহানকে ধরতে কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে ইডি। নতুনভাবে ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কলকাতায় ইডির ডিরেক্টর, বৈঠক করলেন রাজ্যপালের সঙ্গেও
মঙ্গলবারই, কলকাতায় এসেছিলেন ইডি-র ডিরেক্টর রাহুল নবীন। এখানকার আঞ্চলিক আধিকারিকদের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠক করেন। পরবর্তী পদক্ষেপ কীভাবে করতে হবে, কীভাবে এগোতে হবে তদন্তে, সেই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, নিজেদের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। যে এলাকায় অভিযান হবে আগে সেই এলাকার নিখুঁত গ্রাউন্ড রিপোর্ট তৈরি করারও নির্দেশ দিয়েছেন ডেপুটিদের।
এর পাশাপাশি, দ্বিতীয় বৈঠক রাহুল নবীন করেন অন্যান্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এবং নিরাপত্তা সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে। জানা গিয়েছে, সিজিও কমপ্লেক্সে সিআইএসএফ, সিআরপিএফ, বিএসএফ, আয়কর ও এনআইএ-র প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন ইডি ডিরেক্টর। প্রত্যেক এজেন্সির থেকে বিভিন্নভাবে সাহায্যের অনুরোধ করেন। সূত্রের খবর, প্রত্যেকটি এজেন্সি ইডিকে যথাসাধ্য সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।
আরও পড়ুন: "রাজ্যের হাতে ধরা দিলে পুলিশ শাহজাহানকে লাশ বানিয়ে দিতে পারে", আশঙ্কা শুভেন্দুর
এর পরই, শাহজাহানকে (Sheikh Shahjahan) ধরতে জাল বিছানোর কাজ নতুন করে শুরু করেছে ইডি। তবে, এবার একা নয়। এই কাজে তাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বিএসএফ থেকে শুরু করে এনআইএ, এমনকী আয়কর দফতরও। জানা যাচ্ছে, সন্দেশখালি (Sandeshkhali Incident) হল ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা। তাই সেখানে বিএসএফ-এর বিচরণ। শাহজাহান যাতে স্থল বা জলসীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে না পৌঁছতে পারে, তার জন্য বিএসএফ সতর্ক। শাহজাহানের নামে লুক আউট নোটিশ জারি করা হয়েছে। তা হাতিয়ার করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-কে সতর্ক করা হয়েছে। অন্যদিকে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়া নিয়ে আগে অভিযোগ উঠেছিল শাহজাহানের বিরুদ্ধে। মানব পাচার যোগ খতিয়ে দেখবে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। শাহজাহানের আর্থিক হাল হকিকত নিয়ে তথ্য সংগ্রহে আয়কর দফতর।
ফলে, এজেন্সির ফাঁসে সন্দেশখালির শেখ শাহজাহান (Sheikh Shahjahan)। ধীরে ধীরে তাকে ঘিরে ফেলছে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলি। শেখ শাহজাহানকে তাঁর অনুগামীরা ‘বাঘ’ বলে ডাকেন। অনুগামীদের মতে, শাহাজাহান নাকি হলেন ‘প্রকৃত সুন্দরবনের বাঘ’। আবার স্থানীয় একাংশ মানুষের কাছে, তিনি ছিলেন ‘মূর্তিমান ত্রাস’। আতঙ্কের অপর নাম। তাঁর অত্য়াচার দিনের পর দিন সহ্য করতে হয়েছে সেখানকার গরিব সাধারণকে। এখন সেই ‘বাঘ’, সেই ‘মূর্তিমান ত্রাস’ এখন বেপাত্তা। তবে, বেশিদিন নয়। শেখ শাহাজাহানকে ধরতে এবার সঠিক জাল বিছিয়েছে ইডি। সন্দেশখালির (Sandeshkhali Incident) ‘বাঘের’ ধরা পড়াটা এখন স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।