Siliguri: শিলিগুড়ি রেল দুর্ঘটনায় বেঁচে ফিরলেন বিশ্বনাথ শর্মা নামে এক যাত্রী, কী বললেন?
রেল দুর্ঘটনা, জখম যাত্রী (ইনসেটে) (নিজস্ব চিত্র)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলাম। বেঁচে আছি বিশ্বাসই হচ্ছে না। নিজের গায়ে চিমটি কেটে দেখছি সত্যিই বেঁচে আছি তো। হাসপাতালের বেডে শুয়ে একথায় বললেন শিলিগুড়ির রাঙাপানিতে রেল দুর্ঘটনায় (Rail Accident) জখম যাত্রী বিশ্বনাথ শর্মা। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন তিনি। তাঁর বাড়ি নদিয়ার কৃষ্ণনগরে।
সোমবার এনজেপির কাছে রাঙাপানি ও নিজবাড়ি স্টেশনের মাঝে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের পিছনে ধাক্কা মারে একটি মালগাড়ি। রেল দুর্ঘটনায় (Rail Accident) বহু যাত্রী জখম হন। সর্বশেষ পাওয়া খবরে, আটজন জন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। সেই অভিশপ্ত কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের যাত্রী ছিলেন বিশ্বনাথ শর্মা। তিনি বলেন, "আমি ট্রেনের পিছনের দিক থেকে দুনম্বর কোচে ছিলাম। ঘুম থেকে ভোরবেলায় উঠেছি। অসম থেকে বাড়ি ফিরছিলাম। এনজেপি স্টেশন ছাড়ার পর চা-বিস্কুট খেয়ে বসেছিলাম। হঠাৎ একটা ধাক্কায় ঝাঁকুনি দিয়ে উঠল আমার বগি। কোনও কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখি ট্রেনের বগির দুধারে দেওয়াল, সিট আমাকে দুদিক দিয়ে চেপে ধরছে। ওপরে তাকাতেই দেখি বগির সিলিং তিন ভাগ হয়ে ত্রিশূলের মতো আকৃতি নিয়ে আমার বুকের ওপর নেমে আসছে। সঙ্গে সঙ্গে দুই হাত দিয়ে তা ঠেকানোর চেষ্টা করি। সেই চেষ্টায় একটা রড ধরতে পারি। সেই রড ধরেই এক ঝটকা মেরে পাশ কাটিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করলাম। কোনওরকমে বাইরে ছিটকে পড়লাম। তারপর আর কিছু মনে নেই। জ্ঞান ফিরতেই দেখি হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছি। যেভাবে সিলিং ভেঙে তিনটি ফলা ত্রিশূলের মতো হয়ে নেমে আসছিল,আমি যদি না ধরতাম তাহলে তার একটি আমার বুকে ঢুকে যেত। ঢুকলেই আমার মৃত্যু নিশ্চিত ছিল।"
আরও পড়ুন: শিলিগুড়িতে ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনা, কাঞ্চনজঙ্ঘায় ধাক্কা মালগাড়ির, মৃত ৮, জখম ৬০
জানা গিয়েছে, বিশ্বনাথ শর্মা পেশায় পাচক। ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন জায়গায় রান্নার কাজ করেন। গুয়াহাটি থেকে অসম, ডিব্রুগড় বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে রান্নার কাজ করে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি বলেন, "এখন হাতে কোনও কাজ ছিল না। তাই বাড়ি ফিরছিলাম। এদিন রাতে শিয়ালদা স্টেশনে নেমে লোকাল ট্রেন ধরে কৃষ্ণনগরে বাড়ি পৌঁছে যাওয়ার কথা ছিল। বাড়িতে সকলে অপেক্ষা করছে, আমি কতক্ষণে বাড়ি যাব। জানি না এখন বাড়ির লোক খবর পেয়েছে কিনা। ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞ, আমার ও আমার পরিবারের কথা ভেবে আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। আমি এখনও ভেবে উঠতে পারছি না, কোন শক্তি দিয়ে, দুর্ঘটনায় ভেঙে পড়া কোচের সিলিং আটকাতে পারলাম।"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।