Kolkata: পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজিকে নোটিশ জাতীয় মহিলা কমিশনের, আগামী দু’সপ্তাহের মধ্য়ে রিপোর্ট জমার নির্দেশ...
আরজি কর হাসপাতালে জাতীয় মহিলা কমিশনের সাংবাদিক বৈঠক (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল (RG Kar Hospital) পরিদর্শনে যান জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্যরা। হাসপাতালের পরিকাঠামোর অবস্থা খতিয়ে দেখে রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দেন তাঁরা। হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে কার্যত তুলোধনা করেন তাঁরা। নিহত চিকিৎসের নাম নেওয়ায় তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়।
শহরে (Kolkata) আসার পরে প্রথমেই জাতীয় মহিলা কমিশনের দুই প্রতিনিধি সোজা যান লালবাজারে। সেখানে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন তাঁরা। পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন। লালবাজারের (Kolkata) পরে নিহত মহিলা চিকিৎসকের সোদপুরের বাড়িতেও যান তাঁরা। কমিশনের অন্যতম সদস্য ডেলিনা খনডুপ বলেন, ‘‘প্রাক্তন প্রিন্সিপাল (RG Kar Hospital) সন্দীপ ঘোষ নিহত তরুণীর প্রতি যথেষ্ট অসংবেদনশীল মন্তব্য করেছেন। এমনকী, মেয়েটির নামও নেওয়া হয়েছে। সেই কারণে তাঁর বিরুদ্ধে কমিশনের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ করা হবে।’’
মঙ্গলবার, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ডিজিকে নোটিশ দিয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন৷ আগামী দু’সপ্তাহের মধ্য়ে এই নিয়ে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে ওই নোটিশে৷ স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই এই পদক্ষেপ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন৷ কমিশনের সদস্য বলেন, ‘‘আমরা এই নৃশংস ঘটনার তদন্তের গতিপ্রকৃতি ভাল করে খতিয়ে দেখব। পাশাপাশি রাজ্যের গোটা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে কমিশনকে জানাব। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করে আমরা জাতীয় মহিলা কমিশনে জমা দেব। আসল অপরাধীকে আড়াল করছে পুলিশ। শুধু তাই নয়, প্রয়োজন হলে আরও অতিরিক্ত দিন থেকে গোটা ঘটনার সবদিক থেকে খতিয়ে দেখব।’’
আরও পড়ুন: আরজি কর-কাণ্ডে আজ পথে বুদ্ধিজীবীরা, বিচারের দাবিতে নাগরিক মিছিল রুখল পুলিশ
আরজি করের (RG Kar Hospital) জুনিয়র ডাক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় উঠেছে খুন ও ধর্ষণের অভিযোগ। সোমবার সেই আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর সন্দীপ ঘোষ সংবাদমাধ্যমের সামনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কমপক্ষে চার বার নাম উল্লেখ করেছেন মৃত চিকিৎসকের। আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বলেন, 'এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।'
ধর্ষণ বা যৌন হেনস্থার মতো ঘটনায় নির্যাতিতার পরিচয় প্রকাশ্যে এসে গেলে প্রভাব পড়তে পারে বিচার ও তদন্তের ক্ষেত্রে। তাই নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আনা যায় না। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ আছে। পাশাপাশি, ভারতীয় আইনেও বাধ্যবাধকতা আছে। নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যে সব নথিতে নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আসতে পারে, সেগুলি মুখবন্ধ খামেই আদান-প্রদান করতে হয় পুলিশকে। নাম গোপন রাখতে হয় আদালত ও তদন্তকারী সংস্থাকেও। নির্যাতিতার (RG Kar Hospital) মৃত্যু হলে বা অচৈতন্য থাকলে, তাঁর আত্মীয় যদি নাম প্রকাশ করতে চান, তাহলে শুধুমাত্র সেশন কোর্টেই আবেদন জানাতে পারেন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টের গাইডলাইনে আছে, নির্যাতিতা অপ্রাপ্তবয়স্ক হলে, তার পরিচয় যদি প্রকাশ করার প্রয়োজন পড়ে, সে ক্ষেত্রে বিশেষ আদালত অনুমোদন দিতে পারে।
আগে, ভারতীয় দণ্ডবিধি বা 'ইন্ডিয়ান পেনাল কোড' (IPC)- এর ২২৮এ ধারায় ছিল এই সম্পর্কিত বিধান আছে। সেই ধারা অনুযায়ী, ধর্ষিতা বা যৌন হেনস্থার শিকার নির্যাতিতার নাম, পরিচয় প্রকাশ্যে আনলে ২ বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। ধার্য করা হতে পারে জরিমানাও। বর্তমানে ভারতীয় দণ্ডবিধির বদলে আনা হয়েছে 'ভারতীয় ন্যায় সংহিতা'। সেখানেও এই সম্পর্কিত শাস্তির কথা বলা আছে। 'ভারতীয় ন্যায় সংহিতা'র ৭২ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কেউ যদি নির্যাতিতার নাম প্রকাশ্যে আনেন, তাহলে জেল হতে পারে। জেলের মেয়াদ হতে পারে ২ বছর পর্যন্ত। এছাড়া ধার্য করা হতে পারে জরিমানা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।