Civic Volunteer: বঙ্গে সিভিকরাজ, কাঠগড়ায় সরকার! বার বার অভিযোগ উঠলেও এতটুকুও কমেনি রাজ্যে সিভিক ভলান্টিয়ারদের বাড়বাড়ন্ত...
আরজি করের ঘটনায় ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: স্রেফ সিভিক ভলান্টিয়ার (Civic Volunteer) হয়েও পরনে কেপি অর্থাৎ কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) লেখা টি-শার্ট, বাইকে পুলিশ লেখা স্টিকার। পুলিশের দাপট নিয়ে রাস্তায় চলাফেরা, লোককে হুমকি। আরজি কর হাসপাতালে (RG Kar Hospital) তরুণী চিকিৎসককে খুন ও ধর্ষণে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়ের গতিবিধি দেখে হতবাক শহরবাসী। শুধু সঞ্জয়ই নন, এই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পূর্ব বর্ধমানের ভাতার স্টেট জেনারেল হাসপাতালে এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে আরজিকরের ঘটনার নাম করে হুমকি দেওয়ার। এরপরই প্রশ্ন উঠছে রাজ্যে সিভিক ভলান্টিয়ারদের দৌরাত্ম্য নিয়ে। কোথা থেকে এত সাহস পান সিভিকরা? হাইকোর্ট একাধিকবার সিভিক নিয়ে রাজ্যকে হুঁশিয়ার করেছে। তার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। পুলিশের ছত্রছায়ায় থেকে শাসক দলের গুন্ডাবাহিনীতে পরিণত হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়াররা, এমনই দাবি বিরোধী দল থেকে আম জনতার।
কাগজেকলমে কলকাতা পুলিশের বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মী। কিন্তু একদিনও সেখানে ডিউটি না-করে রাতারাতি পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির সদস্য হয়ে যান আরজি কর-কাণ্ডে (RG Kar Hospital) ধৃত সঞ্জয় রায়। কীভাবে তাঁর এই উত্থান উঠছে প্রশ্ন। নেপথ্যে কারও প্রশ্রয় রয়েছে? অভিযোগ, কমিটির এক প্রভাবশালী অফিসারের মদতেই সঞ্জয়ের এই বাড়াবাড়ি। পুলিশ সূত্রের খবর, ২০১৯-এ ডিএমজি বিভাগে কাজে যোগ দেওয়ার পর থেকে চতুর্থ ব্যাটালিয়নের বারাকে হামেশাই থাকতে শুরু করে সঞ্জয়, যে অনুমতি বা অধিকার তার ছিল না। করোনার পর থেকে সেটাই হয়ে ওঠে তার পাকাপাকি আস্তানা। তদন্তকারীরা জেনেছেন, সঞ্জয়ের বাড়ি দক্ষিণ কলকাতার শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের কাছে হলেও বেশির ভাগ সময়ে সে আরজি কর হাসপাতালে ঘোরাফেরা করত। রাতেও অবাধ যাতায়াত ছিল হাসপাতালের বিভিন্ন ফ্লোরে। তাকে চিনত না, হাসপাতালে এমন কেউ নেই। শুধু পুলিশের টি-শার্ট পরে ঘোরাঘুরিই নয়, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে বাহিনীর মহিলা কর্মীদের কুরুচিকর মন্তব্য করার অভিযোগও রয়েছে।
আরজিকরেই (RG Kar Hospital) থেমে নেই সিভিকদের এই দাপট। সূত্রের খবর, ভাতারের হাসপাতালে সুশান্ত রায় নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ার শুক্রবার রাতে মত্ত অবস্থায় এক মহিলা চিকিৎসককে গিয়ে রীতিমতো হুমকি দিয়ে বলেছিল, ‘‘আরজি করে কী হয়েছে জানেন তো?’’ পরে ওই সিভিক ভলান্টিয়ারকে (Civic Volunteer) গ্রেফতার করা হয়। তবে এই ঘটনায় ফের সিভিকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজ্য প্রশাসনের প্রচ্ছন্ন মদতেই যে সিভিক ভলান্টিয়ারদের এত বাড়বাড়ন্ত তা মানছেন অনেকে।
আরও পড়ুন: আরজিকর কাণ্ডে জড়িত মমতার পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটি, দাবি সুকান্তর
এই দুই ঘটনা, বিশেষ করে আরজি কর (RG Kar Hospital) কাণ্ডের পর টনক নড়েছে মমতার প্রশাসনের। হাসপাতালে সিভিক ভলান্টিয়ারদের (Civic Volunteer) গতিবিধি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে৷ হাসপাতালের কতটা সীমানা পর্যন্ত যেতে পারা সিভিকরা, সেই নিয়েও বিস্তারিত গাইডলাইন তৈরির পথে কলকাতা পুলিশ৷ ফলে এবার সরকারি হাসপাতালে ভলান্টিয়ারদের গতিবিধি রুখতে সক্রিয় হচ্ছে লালবাজার৷ এই বিষয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের এক উচ্চোপদস্থ আধিকারিক বলেন, "বিষয়টি আমরা ভালোভাবে খতিয়ে দেখে তবেই সম্পূর্ণ বলতে পারব৷" এই বিষয়ে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা বলেন, "ভলান্টিয়ার হল তৃণমূলের পোষা গুন্ডা ৷ এটা হল নিজের পার্টির মস্তানদের ঢুকিয়ে দেওয়ার একটা জায়গা৷ এদেরকে অবাধ আচরণ করতে দেওয়া হয়েছে৷ এরা রাজনৈতিকভাবে পুলিশের সঙ্গে যদি যুক্ত না হত, তাহলে এই প্রকারের ঘটনা ঘটত না৷"
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।