Principal: মাত্র দেড় দিনে বদলে গিয়েছিল বদলির নির্দেশ! আরজি করের প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ এমনই ক্ষমতাবান?
অবশেষে অবশ্য প্রবল চাপের মুখে পড়ে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি, সংগৃহীত চিত্র।
তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় পাল
দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক অভিযোগ। কখনও ছাত্র-ছাত্রীদের একাংশ, কখনও তাঁর অধীনস্থ কর্মকর্তাই তাঁর বিরুদ্ধে নানান গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন! গত দু'বছরে একাধিকবার তাঁকে নিয়ে নানান বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কিন্তু তারপরেও তাঁকে কেউ ক্ষমতা থেকে সরাতে পারেনি। এমনকী বদলিও করা হয়নি। গত শুক্রবার থেকে ফের তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদিও এই সব কিছু নিয়ে তিনি ভাবতে নারাজ ছিলেন! তিনি আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ (RG Kar Hospital) সন্দীপ ঘোষ। অবশেষে অবশ্য প্রবল চাপের মুখে পড়ে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি। বলা যায়, ইস্তফা দিতে বাধ্য হয়েছেন।
আরজি কর হাসপাতালে দুর্নীতির পাহাড়। এমনই অভিযোগ তুলছেন ওই হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, কর্মীদের একাংশ। হাসপাতালে চিকিৎসক পড়ুয়াদের হস্টেলের পরিকাঠামো অত্যন্ত খারাপ, কয়েক বছর আগে এমন অভিযোগ তুলেছেন অধিকাংশ পড়ুয়া। এ নিয়ে অধ্যক্ষকে (Principal) অভিযোগ জানাতে গেলে, তিনি দু্র্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ। এমনকী ছাত্রীদের সঙ্গে অশ্লীল আচরণের অভিযোগও ওঠে! এরপরেই বিক্ষোভ শুরু করেন পড়ুয়াদের একাংশ। যদিও শাসক দলের তৎপরতায় বিক্ষোভকারী পড়ুয়াদের নানান শাস্তি দেওয়া হয় বলেই তাদের অভিযোগ।
আরজিকর হাসপাতালের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন ওই হাসপাতালের সহকারী সুপারদের একাংশ। স্বাস্থ্য ভবনে দেওয়া তাদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, হাসপাতালের নানান যন্ত্রপাতি কেনা, চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রিন্সিপালের (RG Kar Hospital) অবৈধ লেনদেন চলত। এমনকী, মেডিক্যাল কলেজের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য যে টাকা বরাদ্দ হত, সেখানেও অনিয়ম চালানোর অভিযোগ ওঠে।
বছর খানেক আগেই স্বাস্থ্য ভবনের উদ্যোগে আরজি কর হাসপাতালের প্রিন্সিপালের বিরুদ্ধে ভিজিল্যান্স বিভাগের তদন্ত চলে। তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই সন্দীপ ঘোষের বদলি হয়ে যায়। স্বাস্থ্য ভবন থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়, তাঁকে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু বদলির নির্দেশ দেওয়ার দেড় দিনের মধ্যে ফের বদলে যায় নির্দেশ। স্বাস্থ্য ভবনের তরফে নয়া নির্দেশ জারি করে জানানো হয়, তিনি আরজি কর হাসপাতালের দায়িত্বেই থাকবেন।
শুক্রবার আরজি কর হাসপাতালের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেনি ছাত্রীর দেহ উদ্ধারের পর থেকেই রাজ্য জুড়ে নানান প্রশ্ন উঠছে। হাসপাতালের নিরাপত্তা, ছাত্র-ছাত্রীদের নিরাপত্তা কতখানি, সে নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। চিকিৎসক মহলের একাংশ প্রশ্ন তুলছেন, আরজি কর হাসপাতালের অধ্যক্ষ (Principal) এই ঘটনায় নিজের দায়িত্ব এড়িয়ে চলতে পারেন কি? চিকিৎসকদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, প্রিন্সিপাল রাজ্যের শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হওয়ার একাধিক সুবিধা নিচ্ছেন। আর তার জেরেই নানান অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি ক্ষমতায় বসে আছেন।
আরজি কর হাসপাতালে শুক্রবারের ঘটনা প্রসঙ্গে সন্দীপ ঘোষের (RG Kar Hospital) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পুলিশ তদন্ত করছে। তার আলাদা করে কিছুই বলার নেই। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা নানান অভিযোগ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও উত্তর দেননি। পরে অবশ্য তিনি ইস্তফা দিয়ে জোর গলায় বলেন, স্বেচ্ছায় তিনি এই কাজ করলেন। কেউ তাঁকে জোর করেনি।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।