Doctor Rape Murder: থাকে না পর্যাপ্ত পুলিশ, বহু জায়গায় নেই সিসিটিভি! কেন নিরাপদ নয় রাতের আরজি কর?
রাতের আরজি কর হাসপাতাল।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরজি করে চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় (Doctor Rape Murder) পরতে পরতে রহস্য। ইতিমধ্যেই একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু অনেকেই দাবি করছেন, এই ঘটনায় একাধিক জন জড়িত থাকতে পারে। কলকাতার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে (RG Kar Incident) এক ৩২ বছর বয়সি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় স্তম্ভিত দেশ। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে সঞ্জয় রায় নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকরা এই ঘটনার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন। ফেডারেশন অফ রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়া (ফোর্ডা) জানিয়েছে, সারা দেশে হাসপাতালের নির্বাচনী সেবা বন্ধ থাকবে। সব মেডিক্যাল কর্মীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তারও দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
আর জি কর (RG Kar Incident) মেডিক্যাল কলেজের রেসিডেন্ট ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (আরডিএ) ঘোষণা করেছে যে, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা প্রতিবাদ বন্ধ করবে না। হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানান, "আমরা চারটি দাবি তুলেছি: বিচার বিভাগীয় তদন্ত, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত ক্ষমা প্রার্থনা, মহিলার পরিবারের জন্য ক্ষতিপূরণ, পুলিশকে তদন্তের অগ্রগতি নিয়মিত প্রকাশ করতে হবে।" কলকাতার ২৬ একর জুড়ে এই প্রতিষ্ঠানটি পশ্চিমবঙ্গের বৃহত্তম মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে একটি। এখানে এরকম ঘটনায় বাকরুদ্ধ বাংলা তথা দেশ।
AIIMS Delhi RDA and SU have gone on strike to condemn the horrible rape and murder of female doctor at RG KAR medical college, Kolkata.#bengalhorror#WeWantJustice pic.twitter.com/pZHgPaJ5VI
— venu dasari (@Dasari_venu_18) August 12, 2024
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন যে, হাসপাতালের সংবেদনশীল স্থানে সিসিটিভি ক্যামেরার অভাব রয়েছে। ডাক্তারদের জন্য আলাদা শৌচালয় নেই। যে কোনও লোক রাতে হাসপাতালে প্রবেশ করে যান। যা রাতের হাসপাতালকে বিপজ্জনক করে তোলে। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, যে সেমিনার রুমে চিকিৎসকের দেহ মিলেছিল সেখানে কোনও সিসিটিভি নেই। ফ্লোর ওয়ার্ড বা করিডরেও কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা থাকলে অপরাধী অপরাধ করার আগে ভাবত। এনআরএস হাসপাতালের সিনিয়র রেসিডেন্ট ফিজিশিয়ান শুভেন্দু মুখোপাধ্যায় আগে আরজি কর-এ (RG Kar Incident) কর্মরত ছিলেন। তাঁর কথায়, "শুধুমাত্র ভবনের মূল ফটকে সিসিটিভি আছে। আপনি যে বেশিরভাগ সিসিটিভি দেখেন তা কাজ করে না।"
আরজি করের (RG Kar Incident) জুনিয়র ডাক্তারদের মতে, মহিলা ডাক্তারদের জন্য কোনও নির্দিষ্ট জায়গা না থাকায় নির্যাতিতা সেমিনার রুমে গিয়ে বিশ্রাম নিতে বাধ্য হয়েছিলেন। সেমিনার রুমে কোনও ওয়াশরুম নেই। রাতের ডিউটিতে বেশিরভাগ সময় চিকিৎসকরা সেমিনার রুম বা সোনোগ্রাফি রুম ব্যবহার করেন।
একজন চিকিৎসকের মতে আরজি করের (RG Kar Incident) "সবচেয়ে বড় সমস্যা" হল বিনা অনুমতিতে মাঝে মাঝেই লোক হাসপাতালে প্রবেশ করেন। তিনি বলেন, "প্রায়শই একজন রোগী ১১-১২ জন আত্মীয়ের সঙ্গে আসে। শুধুমাত্র আইডি কার্ডধারীদেরই ওয়ার্ডে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া উচিত। এসএসকেএমের উডবার্ন ওয়ার্ড দেখুন, যেখানে ভিআইপি ও রাজনীতিবিদরা থাকেন। সেখানে প্রবেশের ক্ষেত্রে কঠোর নিয়ম রয়েছে।" এছাড়াও চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রাতে হাসপাতালের বাইরে কোনও নিরাপত্তা নেই। একজন মহিলা সাফাইকর্মী জানান, "একজন রোগীর সঙ্গে ১৫-২০ জন পর্যন্ত জরুরি বিভাগে ঢুকে পড়ে। আমরা জরুরি বিভাগে মাতাল লোকদেরও দেখতে পাই।"
আরও পড়ুন: একজনের কাজ নয়, দাবি চিকিৎসকদের! আরজি কর কাণ্ডে কাকে আড়ালের চেষ্টা হচ্ছে?
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে, হাসপাতালে (RG Kar Incident) পর্যাপ্ত পুলিশ থাকা উচিত। তাঁদের মতে, রাতে ফ্লোরে কোনও নিরাপত্তাই থাকে না। এই হাসপাতালটিতে আঘাতজনিত রোগীর প্রচুর ভিড় হয়। ডাক্তার-রোগীর অনুপাত খুব কম। যদি কেউ চিকিৎসককে অপমান করে, তবে তাঁর পাশে দাঁড়ানোর কেউ থাকে না। হাসপাতালের নিজস্ব প্রাইভেট সিকিউরিটি রয়েছে ঠিকই তবে জুনিয়র চিকিৎসকরা দাবি করেছেন যে, রাত ৯টার পর প্রাইভেট সিকিউরিটি গায়েব হয়ে যায়। রাতে হাসপাতালের মহিলা চিকিৎসক বা নার্স এমনকী ছেলেরাও অন্ধকার, নির্জন জায়গা দিয়ে হাঁটতে ভয় পান। কারণ হাসপাতাল চত্বরে নানা ধরনের বেআইনি কাজ হয়। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে অনেক সময়ই মত্ত যুবকদের উৎপাত লক্ষ্য করা যায় হাসপাতাল চত্বরে। করিডর থেকে শুরু করে সিঁড়ি, রোগীদের ওয়ার্ড সর্বত্রই ঢিলেঢালা নিরাপত্তা। তাই সবসময়ই নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। অনেকবার অভিযোগ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তারই মূল্য চোকাতে হল নির্যাতিতাকে (Doctor Rape Murder)।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।