RG Kar Protest: শ্যামবাজারে ঋতুপর্ণাকে ‘গো ব্যাক’, আরজি কর কাণ্ডে অদৃশ্য মানব শৃঙ্খল টালা থেকে টালিগঞ্জ...
আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদ। বুধবার আলো নেভালেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ঘড়িতে তখন রাত ৯টা। হঠাতই আঁধার নামল কলকাতায়। পাড়ায়, পাড়ায়, আবাসনে, বাড়িতে, দোকানে আলো বন্ধ। আলো নিভল ভিক্টোরিয়াতে। আলো নিভল রাজভবনেও। প্রতিবাদী কলকাতা। বিপ্লবের শহর ফের সরব। আরজি কর কাণ্ডে (RG Kar Incident) নির্যাতিতার বিচারের দাবিতে সকলে সামিল। রাত নামতেই এক অদৃশ্য মানবশৃঙ্খল তৈরি হল সিঁথির মোড়, টালা, শ্যামবাজার, কলেজ স্কোয়্যার, যাদবপুর-সহ গোটা শহরের নানা প্রান্তে। হাতে হাত রেখে হাজার কণ্ঠে ধ্বনিত হলো, ‘তোমার স্বর আমার স্বর, জাস্টিস ফর আরজি কর’।
বুধবার রাত ৯টা (RG Kar Incident) বাজতেই পাড়ায়, পাড়ায়, আবাসনে, বাড়িতে, দোকানে লাইট বন্ধ হয়ে যায়। বারান্দায় ব্যালকনিতে জ্বলে ওঠে প্রতিবাদের মোমবাতি। অন্ধকার রাত ঢেকে দেওয়ার জোরালো এবং ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা হল প্রতিবাদের সেই আলো জ্বালিয়ে। ৯টা বাজলেই বাড়ির আলো বন্ধ করে, মোমবাতি জ্বালিয়ে মানুষ যেন প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে পড়েন। আরজি করকাণ্ডের প্রতিবাদে জনমানসকে আহ্বান জানিয়েছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। কলকাতায় এহেন প্রতিবাদ অভিনব শুধু নয়, অভূতপূর্বও বটে। রাজনৈতিক দল বা মঞ্চের ডাকে বাংলায় প্রতিবাদ, আন্দোলন, বিক্ষোভ অতীতে বহু হয়েছে। সেই জন্যই তো কলকাতা মিছিল নগরী বলেও পরিচিত। তবে রাজনৈতিক রঙের ঊর্ধ্বে উঠে এ ধরনের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ কলকাতা তথা বাংলায় বেনজির।
আরজি কর কাণ্ডের (RG Kar Incident) প্রতিবাদে এর আগে গত ১৪ অগস্ট রাত দখলে নেমে পড়েছিলেন শহরবাসী। সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ থেকে স্কুল পড়ুয়া শিশু— কেউই বাকি ছিলেন না সেই জমায়েতে। বুধবার রাতে অনেকটা সেভাবেই প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমে পড়লেন হাজার হাজার শহরবাসী। আরজি কর হাসপাতালের সামনে, যাদবপুরে ৮বি বাসস্ট্যান্ডে, বিশ্ববাংলা মোড়ে রাত ৮টা থেকেই জমায়েত শুরু হয়ে গেল। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে আরজি করের শুনানির কথা মাথায় রেখে বুধবার ফের রাত দখলের আহ্বান জানানো হয়। পরে যদিও জানা যায় শুনানির দিন পিছিয়ে গিয়েছে। তাতে কী? দ্রুত বিচারের দাবিতে এক হওয়ার আওয়াজ উঠল রাজপথে। আট থেকে আশি— সন্ধ্যা থেকে পথে। বর্ষীয়ানরা নিজেদের মেয়ে, নাতনির মুখ মনে করে জয়ামেতে এসেছেন বলে জানিয়েছেন। মোমবাতির সঙ্গে চলেছে পথে আঁকা, বার্তা লিখন।
আরও পড়ুন: ৫২ বাড়িয়ে ৮০! কার চাপে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে বাড়ানো হত নম্বর?
এই ভিড়ে মিশে বিচার চেয়েছেন টলিপাড়ার অনেকেই। উপস্থিত ছিলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, তথাগত মুখোপাধ্যায়, দেবলীনা দত্ত, বিবৃতি চট্টোপাধ্যায়, সোহম মজুমদার, সোলাঙ্কি রায়, ঋষভ বসু, রাতাশ্রী দত্তরা। শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে ঋতুপর্ণা জমায়েতে উপস্থিত হতেই ওঠে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান। চার পাশ থেকে উলু ধ্বনি এবং শঙ্খ বাজিয়ে ব্যঙ্গ করা হয় অভিনেত্রীকে। কিছুক্ষণ পর গাড়িতে উঠে শ্যামবাজার ছেড়ে বেরিয়ে যেতে বাধ্য হন ঋতুপর্ণা। অন্য দিকে, দক্ষিণ কলকাতায় সন্ধ্যা থেকেই রাস্তায় জমায়েত বড় হতে শুরু করে। ঢাকুরিয়া, লেক গার্ডেন্স, গড়িয়া মোড়-সহ বিভিন্ন জায়গায় প্রতিবাদে শামিল হন মানুষ। তবে সব থেকে বেশি ভিড় লক্ষ করা যায় যাদবপুরে ৮বি বাসস্ট্যান্ডে। সেখানে আন্দোলনকারীরা (RG Kar Incident) গান, কবিতা এবং নাটকের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানান।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।