Punishment: কলেজ ক্যাম্পাসে যে ধরনের দুর্নীতি হয়, তা নিয়ে নির্যাতিতা একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছিলেন বলেই কি এই ভয়াবহ পরিণতি?
একাধিক অভিযোগ নিয়ে সামনে এসেছে আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ, ফাইল চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ঘটনার পরে কেটে গিয়েছে সাত দিন! কিন্তু একের পর এক প্রশ্ন উঠছেই! আর বারবার প্রশ্নের মুখে পড়ছে কলেজ কর্তৃপক্ষ! আরজি কর (RG Kar) হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসক মৃত্যুর ঘটনায় একাধিক বার উঠে আসছে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা কী ছিল, সেই প্রশ্ন! জুনিয়র চিকিৎসক, বিশেষত ইন্টার্ন এবং স্নাতকোত্তর ট্রেনিদের একাংশের অভিযোগ, নানান অবৈধ লেনদেনে অংশ নিতে না চাওয়ার জেরেই এই পরিণতি (Punishment) ঘটতে পারে! বিশেষত, হাউজস্টাফ এবং স্নাতকোত্তর ট্রেনিদের রেজাল্ট এবং সার্টিফিকেট দেওয়া নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে যে ধরনের দুর্নীতি হয়, তা নিয়ে নির্যাতিতা একাধিকবার প্রশ্ন তুলেছিলেন। তাই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁর নানান সময়ে বচসাও হয়েছিল। এমনটাই জানাচ্ছে স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের একাংশ।
নির্যাতিতার মৃত্যুর পরেই একাধিক অভিযোগ নিয়ে সামনে এসেছে আরজি কর হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ। ওই হাসপাতালের স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের একাংশ জানাচ্ছে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে এমডি কিংবা এমএস কোর্সে থিসিস খুব জরুরি। চিকিৎসক-পড়ুয়া পাশ করবেন কিনা, তার অনেকটাই নির্ভর করে তাঁর থিসিসের ওপরেই। আর এই থিসিস হাসপাতালে করতে হয়। দরকার হয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সই। বিভাগীয় প্রধান ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সাহায্য ছাড়া এই ধরনের থিসিসের কাজ সম্পূর্ণ করা সম্ভব হয় না। আর এখানেই চলে নানান দুর্নীতি। জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, আরজি কর হাসপাতালের সদ্য প্রাক্তন প্রিন্সিপাল সন্দীপ ঘোষ ও হাসপাতালের কয়েকজন চিকিৎসক কার্যত একটি চক্র চালাতেন। বাড়তি অর্থ দাবি করতেন। সেই অর্থ দিলে তবেই স্নাতকোত্তর পড়ুয়ার থিসিসে সই হবে। শুধু স্নাতকোত্তর পড়ুয়া নয়, হাউজস্টাফ এবং ইন্টার্নদের থেকেও অর্থ দাবি করা হত। দাবি মতো অর্থ না দিলে এমবিবিএস কোর্সের ফাইনাল সার্টিফিকেট দেওয়া হবে না, এমন হুমকিও দেওয়া হত বলে অভিযোগ উঠছে।
জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছে, নির্যাতিতা এই অসাধু লেনদেনে নারাজ ছিলেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, কলেজের (RG Kar) একাধিক বেআইনি কাজ নিয়ে তিনি অভিযোগ জানিয়েছিলেন। পাশপাশি, থিসিসে সই পেতে বাড়তি অর্থ দেওয়ায় তিনি অসম্মত হয়েছিলেন। এই নিয়ে বিভাগীয় প্রধান এবং অন্যান্য শিক্ষকদের সঙ্গেও তাঁর মতান্তর হয়েছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষের এই অনৈতিক লেনদেন তিনি মানতে নারাজ ছিলেন। আর তার জেরেই শাসক দলের একাংশের তাঁর প্রতি রাগ ছিল। এমনই অভিযোগ করছে ওই হাসপাতালের জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ।
রাজ্যের সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছে, আরজি কর হাসপাতালের এই দুর্নীতি কোনও ব্যতিক্রম নয়। রাজ্যের একাধিক সরকারি মেডিক্যাল কলেজে এই অসাধু চক্র চলছে। প্রশাসন সব কিছু জানার পরেও অধিকাংশ সময়েই কোনও পদক্ষেপ করে না। এমবিবিএস কোর্সে কে ইন্টার্ন হওয়ার সুযোগ পাবে, কোন বিভাগে কে হাউজস্টাফ হিসেবে কাজ করবে কিংবা স্নাতকোত্তর কোর্সে থিসিসে সই কিংবা নম্বর কতখানি দেওয়া হবে, সব কিছু মেধার দ্বারা নির্ধারিত হচ্ছে না। বরং, এই সব কিছুর জন্য নির্দিষ্ট 'দাম' নির্ধারণ করা হচ্ছে। অভিযোগ জানানোর পরেও অনেক সময়েই কাজ হচ্ছে না। বরং যাঁরা অভিযোগ জানাচ্ছেন, তাঁদের প্রাপ্য হচ্ছে 'শাস্তি' (Punishment)। অনেক সময়েই রাজ্যের স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বহু পড়ুয়া মাঝপথেই পড়া ছেড়ে দিচ্ছেন। পাড়ি দিচ্ছেন ভিন রাজ্যে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।