Agitation: আজ রাত বাড়তেই পথে নেমে গর্জে উঠবেন মহিলারা....
পথে নামছে মেয়েরা (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আর জি কাণ্ড (RG Kar) নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। দেশজুড়ে এই আন্দোলনের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। এবার পথে নামছেন মহিলারাও। কোনও রাজনৈতিক ব্যানার নেই। কোনও ঝান্ডা নেই। কর্তব্যরত অবস্থায় একজন মহিলা চিকিৎসকের শরীরের ওপর নারকীয় অত্যাচার করে খুনের ঘটনা কেউ মন থেকে মেনে নিতে পারছেন না। তাই, রাজ্যজুড়ে অধিকাংশ হাসপাতালেই লাগাতার কর্মবিরতি চলছে। বুধবার সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি বেসরকারি হাসপাতালও কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছে। এরই মধ্যে বুধবার মহিলারা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ মিছিলে সামিল হবেন। আর আন্দোলনের এই কর্মসূচি শুধু কলকাতার রাজপথের গন্ডির মধ্যে আটকে নেই। বরং, রাজ্যজুড়েই এদিন রাতে মহিলারা পথে নামবেন। এই প্রতিবাদ আন্দোলন যে অন্য মাত্রা পেতে চলেছে তা বলা বহুল্য।
আরও পড়ুন: 'ধর্ষণের বাংলা চাইনা চাইনা', কলকাতায় আজ ধিক্কার মিছিলের ডাক বিজেপির
মেয়েদের আন্দোলনের পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছে, 'রিক্লেম দ্য নাইট'। বাংলায় 'মেয়েরা রাতের দখল নাও'। ১৯৭৫ সালে আমেরিকার ফিলাডেলফিয়া শহরে জনৈক মাইক্রো বায়োলজিস্টকে খুনের ঘটনায় ওই আন্দোলন শুরু হয়েছিল। তার পরে নানা ঘটনায় দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে এই আন্দোলনে পথে নেমেছেন মেয়েরা। দিল্লির ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার প্রতিবাদে কলকাতায় কয়েক বার এই নামে আন্দোলনও হয়েছিল। ২০১২ সালের শেষ রাতেও অ্যাকাডেমির সামনে মেয়েরা এই নামে আন্দোলনের ডাক দিয়ে পথে নেমেছিলেন। এখন আরজি করের (RG Kar) ঘটনার প্রেক্ষিতেও সেই আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরজি করের (RG Kar) ইস্তফা দেওয়া অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষকে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ করার নির্দেশের পর থেকেই মধ্যরাতে রাস্তা দখলের আন্দোলনের আহ্বানটি সমাজমাধ্যমে সংক্রমিত হতে শুরু করে। এই আন্দোলনের যাঁরা আহ্বায়ক, তাঁরা রাজনৈতিক দলের কেউ নন। প্রথম যে পোস্টারটি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, তাতে স্বাধীনতা দিবসের আগে অর্থাৎ ১৪ অগাস্ট (বুধবার) রাত ১১টা ৫৫ মিনিট থেকে মেয়েদের রাস্তায় নামার আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু, সোমবার রাত থেকেই সেটি অন্য মাত্রা পেতে শুরু করে। মঙ্গলবার তা গোটা বাংলার মানচিত্র জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকা থেকে দক্ষিণবঙ্গের বৃহত্তর কলকাতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন জেলা শহর এবং মফস্সলে ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকায় নিজেদের মতো করে মহিলারা ওই আন্দোলনে (Agitation) সংহতি জানাচ্ছেন। জমায়েত করতে উদ্যোগী হচ্ছেন। আন্দোলনের প্রাথমিক আহ্বানে ওই জমায়েতের স্থান হিসেবে তিনটি জায়গার কথা বলা হয়েছিল- কলেজ স্ট্রিট, অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টস এবং যাদবপুর এইটবি বাস স্ট্যান্ড। কিন্তু, দেখা যায় সোমবার রাত থেকে উত্তরপাড়া সখের বাজার, সোদপুর বিটি রোড মোড়, চন্দননগর স্ট্র্যান্ড, কৃষ্ণনগর পোস্ট অফিস মোড়ে মধ্যরাতে মেয়েদের দখল নেওয়ার ওই পোস্টার ছড়িয়ে পড়তে থাকে। মঙ্গলবার তাতে যুক্ত হয় বর্ধমান শহরের কার্জন গেট, দুর্গাপুরের সিটি সেন্টার, রায়গঞ্জ, শিলিগুড়ি, মালদা শহর, বহরমপুর, মেদিনীপুর, পুরুলিয়া শহর, ব্যান্ডেল, শ্রীরামপুরের মতো জেলায় জেলায় মফস্সল শহরের মহিলারাও।
'রাত দখলের' কর্মসূচি নিয়ে তৃণমূল সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে। এমনিতেই আরজি কর (RG Kar) কাণ্ডে মুখ পুড়েছে তৃণমূলের। তারপর দেশজুড়ে প্রতিবাদ আন্দোলন। সর্বোপরি মেয়েদের এভাবে পথে নেমে আন্দোলনের ঘটনায় আরও ব্যাকফুটে শাসক দল। তাই, আন্দোলনের লাগাম নিজেদের দখলে রাখতে লোকদেখানো করে মায়া কান্না করে তাঁরা আন্দোলনে সামিল হচ্ছেন বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে। আর তাই, অনেক জায়গাতেই তৃণমূল নেতাদের বাড়ির লোকেরাই সেই কর্মসূচিকে সফল করতে প্রচারে নেমেছেন। রাজ্যসভার সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায়ও আন্দোলনে সামিল হওয়ার কথা জানিয়েছেন। কলকাতা পুরসভার ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর সোমা চৌধুরী ফেসবুকে অন্তত ১৪টি জায়গার জমায়েতের পোস্টার পোস্ট করে লিখেছেন, 'নারীদের সম্মান, প্রাণ বাঁচাতে দলবদ্ধ হোন।' কলকাতা পুরসভার এক তৃণমূল কাউন্সিলরের স্ত্রী মঙ্গলবার মানিকতলা থেকে আরজি কর পর্যন্ত নাগরিক মিছিলে পা মিলিয়েছিলেন। হুগলির এক তৃণমূল বিধায়কের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী তাঁর এলাকায় স্কুটি নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে মধ্যরাতে রাস্তায় নামার আন্দোলনের প্রচার করছেন। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু তাঁর এক্স হ্যান্ডলে লেখেন, "আগামীকাল আমি প্রতিবাদকারীদের সঙ্গে যোগ দিতে যাচ্ছি। কারণ, লক্ষ লক্ষ বাঙালি পরিবারের মতো আমার একটি কন্যা এবং ছোট নাতনি রয়েছে। নারীর প্রতি নিষ্ঠুরতা যথেষ্ট। আসুন এক সঙ্গে প্রতিরোধ করি।"
যদিও বিজেপি এটিকে তৃণমূলের কৌশল হিসাবে দেখাতে চেয়েছে। কেন্দ্রীয় বিজেপির তরফে রাজ্যের পর্যবেক্ষক তথা আইটি সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা অমিত মালব্য বলেন, "সুখেন্দুশেখরকে আন্দোলনে পাঠিয়ে আসলে তৃণমূল তার দখল নেওয়ার ছক করেছে।" তৃণমূলের একটা বড় অংশ রাত দখলের আন্দোলনের (Agitation) আহ্বানকে সমালোচনায় বিদ্ধ করেছেন।
Aparna Sen, now Sukhendu. Mamata Banerjee’s old strategy. Co-opt protesters and compromise protest.
Those seeking justice for the RG Kar MCH rape and murder victim shouldn’t let any Trinamool leader even come close. They are snakes. pic.twitter.com/BWWQIfFjjP
— Amit Malviya (@amitmalviya) August 13, 2024 text-align: justify;">
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।