South 24 Parganas: কুলতলির সাদ্দামের ধাতব ব্যবসার আরও পাচারচক্র ফাঁস!
সাদ্দামের বাড়িতে রহস্যজনক সুড়ঙ্গ। সংগৃহীত চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সুন্দরবনে (South 24 Parganas) খোঁজ মিলেছে সাদ্দামের (Saddam) রহস্যজনক সুড়ঙ্গ! চলত সেখানে ধাতু গালানোর কাজ। রাইস পুলার-অস্ত্র-সোনা-অ্যান্টিকের কারবার ছিল অতি সক্রিয়! সুড়ঙ্গ পথেই কি চলত চোরাকারবার? উত্তর খোঁজে এলাকায় তাল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। কিন্তু সদ্দামের উত্থান কীভাবে হয়েছে? আসুন জেনে নিই তাঁর চোরাকারবারের ইতিকথা।
সূত্রে জানা গিয়েছে, সাদ্দাম দীর্ঘ ২০ থেকে ২২ বছর ধরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) কুলতলি, পাথরপ্রতিমা, দক্ষিণ বারাসত এলাকায় বিভিন্ন দুষ্কৃতীদের সঙ্গে নিয়ে একটি বৃহৎ প্রতারণার চক্র তৈরি করেছিলেন। সেই সময় খুব জনপ্রিয় ছিল রাইস পুলিং স্ক্যাম। কথিত আছে ব্রিটিশ আমলে সরকারি জমি জরিপ করার জন্য এক ধরনের তামার দণ্ড ব্যবহার করা হতো। সেই দণ্ড মাটিতে পোঁতা থাকত জমি জরিপের নিশান হিসেবে। এই তামার দণ্ড বা পাতগুলি বজ্রপাতের ফলে ধাতব পরিবর্তন হয়ে ইরিডিয়ামে পরিণত হতো। এই পাতে নাকি আবার অলৌকিক ক্ষমতার সঞ্চয় হতো। তবে বাজারে তামা থেকে পরিবর্তিত ধাতু ইরিডিয়ামের বিরাট মূল্য রয়েছে। এই ধাতুতে নির্মিত বাসনপত্রে অদ্ভুত যাদু ক্ষমতা থাকে বলে, বিশ্বাস রয়েছে। ধাতু আসল না নকল তা বোঝা যায় পাশে চাল রাখলে। লোহা যেমন চুম্বককের সঙ্গে আকর্ষণ-বিকর্ষণ করে, তেমনি এই ধাতু চালকে আকর্ষণ করে। সেখান থেকে ধাতুর নাম রাইস পুলার। এই রাইস পুলারের ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন সাদ্দাম।
বৈজ্ঞানিক ভাবে এই ধাতুর সম্পর্কে এই ভাবনার অবশ্য বাস্তব দৃষ্টান্ত মেলেনি বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু চোরা বাজারে এই ধাতুর কথিত গল্পের ভিত্তিতে ধাতুর চাহিদা ব্যাপক। ১ ফুট লম্বা এবং ২ ইঞ্চি ব্যাসার্ধের এরকম ধাতুর দাম প্রায় ৫০ থেকে ৬০ লক্ষ টাকারও বেশি। এই ধাতু নির্মিত কয়েন দিয়ে গোচরণ (South 24 Parganas), দক্ষিণ বারাসত, কুলতলি এলাকায় বিভিন্ন ক্রেতাদের মধ্যে অবৈধ কারবারের কাজ চলত। সিআইডি এবং কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা দফতর এখনও পর্যন্ত মোট কুড়িটির বেশি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
আরও পড়ুনঃ খাটের নীচেই মিলল গোপন সুড়ঙ্গ, কুলতলিতে সাদ্দামের পর্দাফাঁস
রাইস পুলার কম দামে বিক্রি করার লোভ দেখিয়ে এই রাজ্যের অনেক চোরাকারবারিরা অন্য রাজ্যেও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে প্রতারণার কাজ করে চলেছে। অনেক সময় মুক্তিপণ নিয়ে একাধিক ব্যসায়ীরা ছাড়া পেয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। আবার পাল্টা ব্যবসায়ীরা পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতেন না, কারণ পুরো ক্রয়-বিক্রয় করাই আইনত নিষিদ্ধ। কিন্তু তারপরেও পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতেন কেউ কেউ। এরপর পুলিশ এবং গোয়েন্দা বিভাগ এই চক্রের একাধিক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছিল। আবার অনেকে জামিন পেলেও সক্রিয় থেকেছে এই চক্র। প্রতারণার ব্যবসাও সময়ের সঙ্গে বদলে গিয়েছে। রাইস পুলার নিয়ে যখন সতর্ক হয়েছে মানুষ, সেই সময় অ্যান্টিকের ব্যবসায় ফুলেফেঁপে ওঠেন সাদ্দাম। এই ভাবেই সাদ্দাম এলাকায় বিরাট চোরাকারবারের সাম্রাজ্য নির্মাণ করেছিলেন। ১৫ বছর ধরে নকল সোনার মূর্তির কারবারে হাত পাকিয়ে ফেলেছিলেন সাদ্দাম। ক্রেতাদের টোপ দিয়ে কুলতলির ডেরায় ডেকে মারধর করে টাকা লুট করায় সিদ্ধহস্ত হয়ে উঠেছিলেন তাঁর (Saddam) পরিবার (South 24 Parganas)। সেই সঙ্গে ছিল তাঁর জাল নোটের কারবারও। গ্রেফতারের পর এই সব তথ্য স্বীকার করেছেন সাদ্দাম ও সায়রুলের স্ত্রী।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।