Sandeshkhali Incident: ‘‘আমার নির্দেশেই ইডির ওপর হামলা’’, শাহজাহানের স্বীকারোক্তির পিছনে কী কারণ?
এখনও কি নির্দেশ দেবেন শেখ শাহাজাহান!
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডির উপর হামলার ঘটনা আদালতে কার্যত স্বীকার করে নিলেন শেখ শাহজাহান (Sheikh Shahjahan)। ‘সন্দেশখালির ত্রাস’ শাহজাহানের মতো এক তথাকথিত দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতা আদালতে এক কথায় স্বীকার করে নিলেন নিজের অপরাধ! অবাক রাজনৈতিক মহল। শাহজাহানের স্বীকারোক্তিই তো পুলিশের কেস শক্ত করে দিল। সহজেই আরও জিজ্ঞাসাবাদের 'অজুহাতে' পুলিশের হেফাজতে চলে গেলেন শেখ শাহাজাহান। তিনি কি নিজেই চাইছেন পুলিশের কাছে থাকতে, বা বলা ভালো, রাজ্যে থাকতে?
মিনাখাঁ থেকে শাহজাহান শেখকে গ্রেফতার করার পর বৃহস্পতিবার সোজা তাঁকে বসিরহাট মহকুমা আদালতে নিয়ে আসে পুলিশ। আদালতে তাঁকে ১৪ দিন নিজেদের হেফাজতে রাখার আবেদন করে পুলিশ। যদিও আদালত শাহজাহানকে (Sheikh Shahjahan) ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। এ দিন পুলিশ আদালতে জমা দেওয়া নথিতে শাহজাহানকে ‘অত্যন্ত প্রভাবশালী’ বলে উল্লেখ করেছে। উল্লেখ করা হয়েছে ৫ জানুয়ারি ইডির ওপর হামলার ‘মাস্টারমাইন্ড’ হিসেবে। তাঁকে জামিন দিলে সন্দেশখালি (Sandeshkhali Incident) এবং ন্যাজাট থানা এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলেও মনে করছে পুলিশ।
নথিতে দেখা যাচ্ছে, পুলিশ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় শাহজাহানের (Sheikh Shahjahan) বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছে। যে সমস্ত সমাজবিরোধী গত ৫ জানুয়ারি সন্দেশখালির সরবেড়িয়া গ্রামে শাহজাহানের বাড়ির সামনে ইডি আধিকারিকদের মারধর, গাড়ি ভাঙচুর এবং লুটপাটে যুক্ত ছিল, তাদের চিহ্নিত করতে শাহজাহানই পথ বলেও নথিতে দাবি করেছে পুলিশ। লুট হওয়া মালপত্রের কিছুই এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ। তার পরেই দাবি করা হয়েছে, শাহজাহান পুলিশকে আশ্বস্ত করেছেন যে, তিনি লুটের মাল উদ্ধার করতে পুলিশকে সহযোগিতা করবেন। তাই পুলিশ হেফাজতেই থাক শহজাহান।
এদিন আদালতে মাত্র ১০ মিনিট সওয়াল জবাব হয়। শাহজাহানের (Sheikh Shahjahan) জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন করেন সরকারি আইনজীবী। তখনই শাহজাহান বলেন, ‘‘সাত সকালে কোনও নোটিশ ছাড়া ইডির আধিকারিকরা আমার বাড়তে এসেছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি ঘিরে ফেলে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আমি গ্রেফতারির আশঙ্কা করে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তাই অনুগামীদের ইডি আধিকারিকদের ওপরে হামলা করার নির্দেশ দিই। তাদের জিনিসপত্র ছিনতাই করে নিতে বলি।’’ এত সহজে দোষ স্বীকার করে নিলেন দোর্দণ্ডপ্রতাপ এই তৃণমূল নেতা! প্রশ্ন উঠছে ইডির হাত থেকে বাঁচতেই এই স্বীকারোক্তি নয় তো? রাজ্য পুলিশের হেফাজতে থাকলে অন্তত কিছুদিন ঠেকানো যাবে ইডিকে।
আরও পড়ুুন: “এটা গ্রেফতার নয়, মিউচুয়াল অ্যাডজাস্টমেন্ট”, শাহজাহান প্রসঙ্গে তোপ শুভেন্দুর
সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখের মামলা আপাতত সিআইডির হাতে দেওয়া হয়েছে। তারাই এই সংক্রান্ত সমস্ত অভিযোগের তদন্ত করতে চলেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। শাহজাহানকে গ্রেফতার করে বসিরহাট থেকে বৃহস্পতিবার নিয়ে যাওয়া হয় ভবানী ভবনে। আগামী ১০ দিন তিনি সেখানেই থাকবেন। আদালত তাঁকে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। ভবানী ভবনে রাজ্য পুলিশের গোয়ান্দারা শাহজাহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন, বলে খবর। পুলিশের আনা অভিযোগ এক প্রকার মেনে নিয়েছেন সন্দেশখালির নেতা। পুলিশকে সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। সামনে লোকসভা নির্বাচন রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ইডি-র ওপর হামলার ঘটনাকে হাতিয়ার করেই শাহজাহানকে ইডি-র হাত থেকে বাঁচাতে চাইছে মমতার পুলিশ? ভোটের আগে ইডি ছুঁলে রক্ষে নেই তাই অন্তত কিছুদিন পুলিশের সেফ কাস্টোডিতে থাকাই ভাল! প্রশ্ন উঠছে তাহলে কি এই গ্রেফতারি সত্যিই ফেক, এই কাস্টোডি মিউচুয়াল অ্যাডজাস্টমেন্ট। যেমনটা বলছে বিরোধীরা।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।