পুরানো বহু মামলায় শাহজাহানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ!
শেখ শাহজাহান (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: সন্দেশখালির 'বেতাজ বাদশা' শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকী বহু ক্ষেত্রে পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ পর্যন্ত জমা নিত না। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোট-পরবর্তী হিংসায় সন্দেশখালির ভাঙ্গিপাড়া গ্রামে ৩ বিজেপি কর্মী খুনের ঘটনায় এফআইআরে নাম ছিল শেখ শাহজাহানের (Sheikh Shahjahan)। ন্যাজাট থানায় খুন ও অস্ত্র আইনে শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা হয়। ঘটনায় তৃণমূল ও বিজেপি দু'দলই থানায় এফআইআর করেছিল। বিজেপির পক্ষ থেকে শাহজাহানের নামে অভিযোগ করা হয়েছিল। তৃণমূলের তরফে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছিল, তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট পেশ করা হয়েছে। কিন্তু, বিজেপির অভিযোগপত্রে নাম থাকা শেখ শাহজাহানের নাম নেই চার্জশিটে! এটা নিয়ে ফের চর্চা শুরু হয়েছে।
সন্দেশখালির ভাঙ্গিপাড়া গ্রামে ভোট-পরবর্তী সংঘর্ষে ২০১৯ সালে খুন হয়েছিলেন বিজেপি কর্মী প্রদীপ মণ্ডল। সেই সময় পুলিশের কাছে শাহজাহানের (Sheikh Shahjahan) নামে অভিযোগ করা হয়েছিল। সেই ঘটনার পর থেকে আতঙ্কিত তাদের পরিবার। এখনও পরিবারের লোকজন এখানে বসবাস করে না। তাঁর মা বাড়িতে আছেন। এতটাই আতঙ্কিত তাঁরা কথা বলতে চাইছেন না। প্রদীপ মণ্ডল ও সুকান্ত মণ্ডলের মৃতদেহ পাওয়া গেলেও এত বছর পরও দেবদাস মণ্ডলের মৃতদেহ মেলেনি। নিহত বিজেপি কর্মী দেবদাস মণ্ডলের বোন বলেন, রাজনীতি করতে গিয়ে গন্ডগোল হয়েছিল। দাদা নিখোঁজ। তার আর কোনও হদিশ পাওয়া যায়নি। থানায় অভিযোগ জানানো হলেও পুলিশ কাউকে ধরেনি।
সোমবার হাইকোর্টে সন্দেশখালি সংক্রান্ত একটি মামলায় রাজ্য সরকারের আইনজীবী বলেন, শেষ ৪ বছরে ৪৩টি এফআইআর হয়েছে। যার মধ্যে ৪২টিতে চার্জশিট হয়েছে। ধর্ষণের ধারাও যুক্ত আছে। বাকি তদন্ত চলছে। জমি দখলের অভিযোগে ৭টি এফআইআর হয়েছে। সেগুলিতে চার্জশিট হয়েছে। ৮ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ২৪টি এফআইআর হয়েছে। ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়েছে ১৫ জনকে। যেখানে ১৪৪ ধারা ছিল, সেখানে যাননি রাজ্যের মন্ত্রীরা।
প্রধান বিচারপতি বলেন, 'তার মানে ৪ বছর ধরে এই ঘটনা ঘটছিল। কিন্তু, কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। শেষ পর্যন্ত বিস্ফোরণ ঘটেছে। রাজ্য বলছে, যে জমি দখল করা হয়েছে, সেগুলি ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তার মানে কিছু একটা ঘটেছে। আর কী প্রমাণের দরকার, সরাসরি সাজা দিতে হবে। আদালত বিস্মিত যে, ৪২টা মামলার চার্জশিট দিতে ৪ বছর কেন লাগল? পরে আমরা চার্জশিটও খতিয়ে দেখব। ক্রমাগত মানুষ ওখানে যাচ্ছেন, তার ফলে ভালোও হতে পারে, আবার খারাপও হতে পারে। আইনকে আইনের পথে চলতে দেওয়া হোক।'
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।