সন্দেশখালিতে শিবিরে অভিযোগ শুনে হতবাক আধিকারিকরা
সন্দেশখালিতে গ্রামবাসীদের অভিযোগ শুনতে সরকারি শিবির (সংগূহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রেশন দুর্নীতির তদন্তে ইডি আধিকারিকরা তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি করতে গিয়ে আক্রান্ত হন। তারপর থেকে বিভিন্ন ঘটনায় গত দেড় মাস ধরে খবরের শিরোনামে সন্দেশখালি। অগ্নিগর্ভ সন্দেশখালি (Sandeshkhali)। পরিস্থিতি সামাল দিতে নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। সাধারণ মানুষের অভিযোগ শোনার জন্য রবিবার থেকে সন্দেশখালির বিভিন্ন প্রান্তে সরকারি ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকছে সেই ক্যাম্প। সরকারি আধিকারিকরা সেখানে থাকছেন। সংগ্রহ করা হচ্ছে অভিযোগ। সকাল সাধারণ মানুষের বক্তব্য সেই অভিযোগের খাতায় নথিভুক্ত করা হচ্ছে।
গত কয়েক দিনের গণআন্দোলনে গোটা দেশ সন্দেশখালির (Sandeshkhali) তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের দৌরাত্ম্যের কথা জেনে গিয়েছে। শাহজাহানের শাগরেদ শিবু হাজরা ও উত্তম সর্দারের অত্যাচারে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, মিষ্টি জলের পুকুরে তাঁরা নোনাজল ঢুকিয়ে দিয়েছেন, জমি কেড়ে নিয়েছেন, লিজের টাকা দেননি, ভেড়িতে কাজ করার টাকা দেননি। কেউ বলছেন, আমি ৪০ হাজার টাকা পাই, কেউ বলছেন ১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা পাই। টাকার কথা বললে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হত। সরকারি অফিসাররাও এমন সব অভিযোগ শুনে চমকে যাচ্ছেন। বিনিময়ে চাকরির দুর্নীতি হয়েছে। দেশবাসী নিশ্চয়ই এগুলি ভুলে যাননি।' অভিযোগ শুনে হতবাক হয়ে যান অফিসাররা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সন্দেশখালির এক বাসিন্দা এদিন ওই ক্যাম্পে হাজির ছিলেন। তিনি বলেন, 'আমার কাছ থেকে উত্তম সর্দার ৬০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন। উত্তম বলেছিলেন, একমাস পরে আমাকে ফেরত দিয়ে দেবেন। তারপর আর আমি সেই টাকা পাইনি।' ওই ব্যক্তির আরও অভিযোগ, জবকার্ডের জন্য তাঁর অ্যাকাউন্টে ২৪ হাজার টাকা ঢুকেছিল। তার মধ্যে ২২ হাজার টাকাই উত্তমকে দিয়ে দিতে হয়েছিল।
সন্দেশখালি (Sandeshkhali) বিডিও অফিসের এক আধিকারিক বলেন, 'কলকাতা শহরের থেকে সামান্য দূরত্বে এই সন্দেশখালি। এলাকার মানুষের এত দুর্দশা! অথচ আমরা এতদিন তা জানতামই না। এবার সব বুঝতে পারছি। সকাল থেকে একের পর এক অভিযোগ এসেছে। ওই সব অভিযোগ শুনে আমরা অবাক হয়ে যাচ্ছি। সমস্ত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিভাগে জমা দেওয়া হবে।'
শুধু তাই নয়, সন্দেশখালি (Sandeshkhali) এলাকার বিভিন্ন পোশাকের দোকান, মিষ্টি দোকান, মাংসের দোকানে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, সেসব দোকানে শিবু, উত্তম বাহিনীর হাজার হাজার টাকা বাকি রয়েছে। টাকা চাইলেই হুমকি শুনতে হত। ওই দোকানদাররা সেই খাতা নিয়ে ক্যাম্প অফিসে চলে আসছেন। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, 'ক্যাম্প খোলা হয়েছে সাধারণ মানুষের অভিযোগ শোনার জন্য। অভিযোগ জানাতে অনেকেই আসছেন। কেউ বলছেন টাকা পাননি, কেউ বলছেন, টাকা চাইলেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কথা বলতে বলতে অনেকেই কেঁদে ফেলছেন।'
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।