Sonarpur: পুলিশের জালে সোনারপুরের জামাল, গত চারদিন কোথায় ছিলেন?
জামালউদ্দিন সর্দার (বাঁদিকে), বাড়িতে উদ্ধার হওয়া শিকল (ডানদিকে) (সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) সোনারপুরে জামালউদ্দিন সর্দারের গত চারদিন ধরে পুলিশ টিকি পর্যন্ত ছুঁতে পারেনি। অবশেষে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করেছে। তবে, প্রশ্ন উঠেছে গত চারদিন ধরে পুলিশের চোখে ধূলো দিয়ে কোথায় ছিলেন জামাল? প্রসঙ্গত, বাড়িতে সালিশি সভা বসিয়ে তোলাবাজি, নৃশংস অত্যাচার করার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। তাঁর গ্রেফতারিতে নির্যাতিতারা বেজায় খুশি।
মঙ্গলবার ১৬ই জুলাই গ্রেফতারির আশঙ্কায় দুপুরের দিকে বাড়ি ছাড়েন (South 24 Parganas) জামাল। সন্ধ্যার দিকে পাঁচিল টপকে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান জামালের স্ত্রী ও ছেলে। ওইদিন ঘুটিয়ারি শরিফ এলাকায় শ্বশুরবাড়ির কাছে কোথাও থাকার পরিকল্পনা থাকলেও পুলিশের ঘোরাঘুরির কারণে জঙ্গলের মধ্যে রাত কাটান জামাল। দিনের আলো ফুটতেই মাস্ক মুখে দিয়ে ঘুটিয়ারি ষ্টেশন থেকে ট্রেন ধরে সোনারপুরের ওপর দিয়েই বিধাননগর ষ্টেশনে নেমে বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় এক পরিচিতের কাছে যান তিনি। সেদিনটা ওখানেই ছিলেন। এরইমধ্যে সংবাদমাধ্যমে তাঁর খবর সম্প্রচার হওয়া দেখে মত পরিবর্তন করেন তিনি। আত্মসমর্পণের কথাও ভেবেছিলেন জামাল। এই কারণে বৄহস্পতিবার সোনারপুর থানার কাছাকাছি মিলনপল্লি এলাকায় তিনি চলেও আসেন। কিন্তু, তাঁর আইনজীবী তাঁকে আত্মসমর্পণের বিষয়ে মানা করলে ফের এলাকা ছাড়েন জামাল। এরইমধ্যে নিজের ফোন পরিবর্তন করে নতুন সিম নেন। স্ত্রী ও সন্তানের জন্য চিন্তা হচ্ছিল তাঁর। তাঁদের কোথাও একটা নিরাপদ আশ্রয়ে রাখার পরিকল্পনা করেন। এই কারণে শাশুড়িকে ফোন করেন। এরপরই পুলিশের ট্র্যাকে চলে আসেন। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর শ্যালককে তুলে আনে সোনারপুর থানার পুলিশ। নিজের কাছের লোককেও আর বিশ্বাস করতে পারছিলেন না জামাল। যদিও বৄহস্পতিবার রাতে ডানকুনি এলাকায় তাঁর এক পরিচিতের বাড়িতে ছিলেন তিনি। শুক্রবার স্ত্রী ও সন্তানকে নিরাপদ আশ্রয়ে রাখার ব্যবস্থা করেন। তারপর আগামী ৬ মাসের জন্য তিনি আত্মগোপন করার পরিকল্পনা করে ফেলেন। যদিও শেষ রক্ষা হয়নি। সন্ধ্যা সাতটার দিকে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জামাল ফেরার হওয়ার পর থেকে তাঁর বিশাল বাড়ির সামনের গেটে ঝুলছিল বড় তালা। আগের দিনই তাঁর ৫০টি সিসি ক্যামেরার ঘেরাটোপে থাকা বাড়ির (Sonarpur) সুইমিং পুলে কচ্ছপ মেলে। যা নজরে আসতেই পদক্ষেপ করতে চায় বন দফতর। কিন্তু, বৃহস্পতিবার কচ্ছপ উদ্ধার করতে গিয়েও বাড়ির গেটে তালা দেখে খালি হাতে ফিরে যেতে হয় তাদের। পুলিশ জামালের মোবাইল লোকেশন 'ট্র্যাক' করতে শুরু করে। কিন্তু, মঙ্গলবার দুপুরের পর সেই মোবাইল ফোন ভাঙড়ের কাছে গিয়ে বন্ধ হয়ে যায়। মাস্ক পরে থাকায় কাল হল জামালের। তাতেই পুলিশের সন্দেহ হওয়ায় তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বাসন্তী হাইওয়ে থেকে সোনারপুর যাওয়ার রাস্তায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।
জামালকে গ্রেফতার করতে পুলিশের একাধিক টিম তৈরি করা হয়েছিল। সোনারপুর থানার আইসি আশিস দাসের নেতৄত্বে একটি টিম শুক্রবার সারাদিন নানান জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায়। তারাই শেষ পর্যন্ত জামালকে গ্রেফতার করে। জামালের গ্রেফতারির পর বারুইপুর পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার পলাশ চন্দ্র ঢালি বলেন, জামালকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হবে। তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত করা হবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।