রাজবাড়ির সদস্য রথের রশিতে টান দেওয়ার পরই শুরু হল মহিষাদলের রথযাত্রা।
মহিষাদলের রথ যাত্রা। নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: পুরী, মাহেশের পর পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মহিষাদলের রাজবাড়ির রথও (Mahishadal Rath Yatra) ঐতিহ্যের দিক থেকে কোনও অংশেই কম সুপ্রাচীন নয়। এই বছর মহিষাদলের রথ পড়ল ২৪৭ বছরে। মহিষাদলের রাজবাড়ির রথের বিশেষত্ব হল, এই রথে জগন্নাথদেবের পাশাপাশি ওঠেন রাজবাড়ির কুলদেবতা মদনগোপাল জিউ। রথকে কেন্দ্র করে এক মাস ধরে মেলা চলে মহিষাদলে। প্রচুর ভক্ত সমাগমে পরিপূর্ণ আজকের এই রথের মেলা।
রথের প্রসঙ্গ উঠলেই প্রথমে আসে পুরী, মাহেশের রথের (Mahishadal Rath Yatra) কথা। কিন্তু জানেন কি পূর্ব মেদিনীপুরের মহিষাদলের রথও ঐতিহ্যের দিক থেকে কোনও অংশেই পিছিয়ে নেই। ইতিহাস ঘাঁটলে অন্তত তেমনই জানা যায়। এই রথ আজও একই রকম ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। মহিষাদল রাজ পরিবারের পৃষ্ঠপোষকতায় এই রথের যাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। উল্লেখ্য এই রাজ পরিবার থেকেই ১৭৩৮ সালে রাজা হন যুবরাজ আনন্দলাল উপাধ্যায়। তিনি ৩১ বছর রাজত্ব করার পরে মারা গেলে, তাঁর স্ত্রী রানী জানকী জগন্নাথ পূজা এবং রথের দায়িত্ব নেন। তিনিই ১৭৭৬ সাল থেকে এই রথযাত্রা শুরু করেন।
কেমন হয় রথযাত্রা
সেই সময় এই রথে (Mahishadal Rath Yatra) ১৭টি চূড়া ছিল। চাকার উচ্চতা ছিল ৬ ফুট। এই রথ তৈরিতে সে সময় খরচ হয়েছিল ৬৪ হাজার টাকা। পরে এই রথের চূড়া কমিয়ে ১৩টি করা হয়। ২০১৭ সালে এই রথকে আরেক বার নতুন ভাবে সাজিয়ে তোলা হয়। তখনও খরচ হয়েছিল প্রায় ২৮ লক্ষ টাকা। এক মাস ধরে এই রথের মেলা চলে মহিষাদলে। রাজ পরিবার ও মহিষাদল সমিতির যৌথ উদ্যোগে এই রথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এই মেলায় হাজার হাজার মানুষের ভিড় হয়। এই মেলায় বিভিন্ন শিল্পীরা ভিড় করেন। নানা রকমের হস্তশিল্প থেকে খাওয়া দাওয়া সব মিলে একেবারে জমে ওঠে মহিষাদলের রথযাত্রা।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ছাড়াও আশপাশের জেলা থেকেও হাজার হাজার ভক্তের তীর্থধাম হয়ে ওঠে এই মহিষাদল। দুপুর তিনটের পর প্রথা মেনে রাজবাড়ির কোনও সদস্য রথের রশিতে টান দেওয়ার পর সেই রথ টানা শুরু হয়। মহিষাদল রথতলা থেকে গুন্ডিচাবাটি পর্যন্ত প্রায় দেড় কিমি রথে করে জগন্নাথদেব গিয়ে থাকেন মাসির বাড়িতে। সাত দিন মাসির বাড়িতে থেকে আবার ফিরে আসেন উল্টো রথে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।