যে পরিমাণ টাকা ও সম্পত্তি উদ্ধার করা হয়েছে, তা সামান্য। মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠদের বাড়ি তল্লাশি করলে আরও টাকার খোঁজ মিলতে পারে বলেই ইডির দাবি।
পার্থ ঘনিষ্ঠ অর্পিতা
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: আরও এক "ঘনিষ্ঠের" খোঁজ? রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষ্মমন্ত্রীকে ঘিরে জোর জল্পনা দানা বাঁধছে? তিনিও অধ্যাপিকা। সোস্যাল সাইটে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে নিয়ে হাজারো মিম-মস্করার মাঝেই উঠে এসেছে তাঁর ছবি আর নাম। শিমুরালি বিএস কলেজের এক অধ্যাপিকাকে ঘিরে জোর শোরগোল। অধ্যাপিকা শ্রীমতী চক্রবর্তীকে পেশাগত জীবনের শীর্ষে তুলতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর বিশেষ অবদান আছে।
এর আগেও কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোনালিসা দাসের সঙ্গেও পার্থবাবুর বিশেষ যোগাযোগের কথা শোনা যায়। যদিও মোনালিসা দাস সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, একজন বিভাগীয় প্রধানের সঙ্গে একজন মন্ত্রীর যা সম্পর্ক থাকার কথা ততটাই সম্পর্ক পার্থবাবুর সঙ্গে।
গত শনিবার তল্লাশি চালানোর পর ‘মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ’ এক অভিনেত্রী-মডেল অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের আবাসন থেকে সাড়ে ২২ কোটি টাকা, দেড় কেজি সোনার গয়না,সম্পত্তির দলিল-সহ লক্ষাধিক ডলার মূল্যের বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার করে ইডি।
অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের কাছে এত টাকা এল কি করে? কী করতেন অর্পিতা? পার্থের সঙ্গেই বা তাঁর সম্পর্ক কেমন? এ নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। সোস্যাল সাইটে অর্পিতার দাবি তিনি অভিনেত্রী। ২০০৫-এ কিছু মডেলিং-এর কাজ করতে করতেই অভিনয়ের জগতে পা। ২০১১ সালে একটি সিরিয়ালে কাজ করতে গিয়েই মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে পরিচয়। গত এগারো বছরে দুজনের ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে। বাংলা ছাড়াও ওড়িশা তামিল ছবিতেও অভিনয় করতেন তিনি। নাকতলা উদয়নের পুজোর ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার বা মূল মুখ ছিলেন তিনি। পার্থ অর্পিতা দুজনকে একসঙ্গে একাধিক জায়গায় দেখা যেত। সে সব ছবি এখন প্রকাশ্যে ঘুরছে সোস্যাল সাইটে।
রবিবারে অর্পিতাকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে তোলা হল। শনিবার সন্ধ্যায় অর্পিতাকে বাড়ি থেকে বার করে জোকার ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যায় ইডি। বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় অর্পিতা দাবি করেন, ‘‘আমি কোনও অন্যায় করিনি। বিজেপির চাল। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।’’ রবিবার সকালে আবারও তাঁকে জোকার ওই হাসপাতালে নিয়ে যায় ইডি। তিনটের সময় তাঁকে নিয়ে আসা হয় ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসা 'টাকা কার?' যদিও সে প্রশ্নের উত্তর দেননি অর্পিতা। অর্পিতার মন্তব্য "আইনের প্রতি তাঁর আস্থা রয়েছে" গতকাল সাংবাদিক বৈঠকে যে কথা বলেছিল তৃণমূল মুখপাত্র। তবে অর্পিতা জানিয়েছেন তিনি কোন দল করেন না। প্রায় চারটের সময় শুনানি শেষ হয়। ইডির পক্ষ থেকে সওয়ালে বলা হয়, ‘‘যা পাওয়া গিয়েছে, তা পেঁয়াজের মতো। খোসা ছাড়ালেই পাওয়া যাবে নতুন তথ্য।’’ তাঁর অর্থ আরও বেশি সম্পত্তির সন্ধান থাকতে পারে পার্থ চট্টোপাধ্যায় অর্পিতা মুখোপাধ্যায় যোগ সাজসে।
মডেলিং জীবনে অর্পিতা কিছু বি়জ্ঞাপনেও কাজ করেছেন। পাশাপাশি, নেল আর্ট (নখের উপর নেলপালিশ দিয়ে বিভিন্ন ধরনের নকশা করার কলা) করার বিশেষ প্রশিক্ষণও নিয়েছেন অর্পিতা। তবে ইডি সূত্রে দাবি, এই সমস্ত কাজ করে এই টাকা উপার্জন সম্ভব নয়। কিভাবে কোথা থেকে এল এত টাকা? কত তিনি উপার্জন করেছেন, তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি অর্পিতা।
সব মিলিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা তদন্তকারীরা উদ্ধার করলেও তাঁদের দাবি, যে পরিমাণ টাকা ও সম্পত্তি উদ্ধার করা হয়েছে, তা সামান্য। মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠদের বাড়ি তল্লাশি করলে আরও টাকার খোঁজ মিলতে পারে বলেই ইডির দাবি।