Bangladesh Border: সীমান্তে কয়েক হাজার খারিজি মাদ্রাসা গত কয়েক বছরে গজিয়ে উঠেছে। রাজ্য সরকার তা চেপে গিয়ে মাত্র ২৩৩টি মাদ্রাসার কথা জানাচ্ছে।
বাংলাদেশ সীমান্তে মাদ্রাসার বিপদ
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ‘জয় বাংলা’, ‘খেলা হবে’-র মতো বাংলাদেশি স্লোগান ধার করে ভোটের বাজার মাতিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। নির্বাচনে সাফল্যও এসেছিল সংখ্যালঘু তোষণের কার্ড খেলে। সেই তোষণ নীতিই এবার রাজ্য সরকারের শিরপীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সম্প্রতি রাজ্য গোয়েন্দা দফতর নবান্নে একটি গোপন রিপোর্ট পাঠিয়ে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা (Bangladesh Border) ৮টি জেলায় সীমান্তের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে খারিজি মাদ্রাসার (Bangladesh Border Madrassas) সংখ্যা তরতরিয়ে বাড়ছে। তার মধ্যে ২৩৩টি মাদ্রাসাকে (Madrassa) রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরটি বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করেছে। সীমান্তের পাঁচটি জেলার ১৫টি মাদ্রাসায় দেশ বিরোধী কাজকর্ম চলছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে।
বিশদে রাজ্য গোয়েন্দা দফতর দুই ২৪ পরগনা এবং মালদহ নিয়ে বিশেষ খোঁজখবর চালাচ্ছে। এই তিনটি জেলা থেকে আরও ভয়ঙ্কর রিপোর্ট আসতে পারে বলে জানাচ্ছেন গোয়েন্দা কর্তারা। নবান্নে রিপোর্ট পাঠিয়ে করণীয় পদক্ষেপ নিয়ে জানতে চাইলেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata) তরফ থেকে কোনও নির্দেশ নেই। গোয়েন্দা কর্তাদের আশঙ্কা, রাষ্ট্রীয় সুরক্ষার বিচারে সীমান্তের জেলাগুলি বারুদের স্তূপের উপর বসে। এখন পদক্ষেপ না হলে পরিস্থিতি আরও গম্ভীর হয়ে যেতে পারে।
আরও পড়ুন: পাচার সহ নানা অপরাধ রুখতে দিনে রাতে এক যোগে টহল দেবে বিএসএফ-বিজিবি!
গোয়েন্দা বিভাগের রিপোর্ট অনুসারে কোচবিহার, রায়গঞ্জ, ইসলামপুর, দক্ষিণ দিনাজপুর এবং মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলাতেই সীমান্তের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে হালফিল ২৩৩টি মাদ্রাসার (Bangladesh Border Madrassas) কাজকর্ম মোটেই সন্তোষজনক নয়। সীমান্তের প্রত্যন্ত এলাকায় নির্মিত হলেও যে পরিমাণ পেট্রো ডলার এখানে আসতে শুরু করেছে তাতে দেশবিরোধী কাজকর্ম চলার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই নয়, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন ইসলামিক দেশ থেকেও নিয়মিত মৌলানারা এখানে আসছেন। বহু সংখ্যক কমবয়সীদের এখানে ধর্মীয় এবং উগ্রচিন্তাধারার শিক্ষাও দেওয়া হচ্ছে। পড়ুয়াদের অনেকেই মাদ্রাসা থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে। রাজ্য গোয়েন্দাদের মতে, এই ২৩৩টি মাদ্রাসার কার্যকলাপ সন্দেহের উপরে নয়।
এর মধ্যেই আবার নির্দিষ্টভাবে ১৫টি মাদ্রাসার (Bangladesh Border Madrassas) খবর রাজ্য গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। এখানে নানা স্পর্শকাতর এবং বিপজ্জনক কাজ চালানো হচ্ছে। কোচবিহারের সাহেবগঞ্জ, কালমাটি, গীতলদহ, ইসলামপুরের ঠিকরিবাড়ি, ভইসপিটা, নমুনিয়া, রায়গঞ্জের বামোইর, মালন, ভাটোলে হাট, দক্ষিণ দিনাজপুরের বেলাসথালি, হাসনগর, দীপখণ্ড, মুর্শিদাবাদের ভৌমিকপাড়া, রামনগর, দাঁইরাতুরিতে সবচেয়ে স্পর্শকাতর ১৫টি মাদ্রাসা চলছে। ঘটনাচক্রে সবগুলি মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির সঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা যুক্ত।
রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের বক্তব্য, সম্প্রতি কলকাতা পুলিশের এসটিএফ একজন আইএস জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে। সে বাংলা থেকে যুবকদের মগজধোলাই করে ইরান বা সিরিয়াতে পাঠাত। নিষিদ্ধ হয়েছে পিএফআই, যদিও রাজ্য পুলিশ কোনও পিএফআই নেতাকে গ্রেফতার করেনি। কারণ, নবান্ন অনুমতি দেয়নি। বাংলাদেশের জেএমবি জঙ্গি ধরা পড়ার আকছার ঘটে চলেছে। এ সবের পিছনে যে সীমান্তঘেঁষা মাদ্রাসাগুলির (Bangladesh Border Madrassas) যোগসূত্র থাকতে পারে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাবাহিনী অবশ্য রাজ্যের এই রিপোর্টকে বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে মনে করছে। তাদের হাতে থাকা নথি অনুযায়ী, সীমান্তে কয়েক হাজার খারিজি মাদ্রাসা (Bangladesh Border Madrassas) গত কয়েক বছরে গজিয়ে উঠেছে। রাজ্য সরকার তা চেপে গিয়ে মাত্র ২৩৩টি মাদ্রাসার কথা জানাচ্ছে। তবে আশার আলো, গত কয়েক বছরে রাজ্য সরকার এ নিয়ে কখনও কোনও উচ্চবাচ্য করেনি। পরিস্থিতি এখন হাতের বাইরে যাওয়ায় অল্প হলেও মানতে বাধ্য হচ্ছে সরকার। এখন রিপোর্ট করার নয় ব্যবস্থা নেওয়ার সময় বলে জানাচ্ছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।