Saltlake: সল্টলেকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত শিশুকে নিয়ে হাসপাতালের দরজায় দরজায় মা
চিকিৎসার অপেক্ষা। প্রাণ গেল দুর্ঘটনাগ্রস্ত স্কুল ছাত্রের। সংগৃহীত চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দুর্ঘটনার পর রেফারের জেরে এ হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতাল, প্রাণ গেল ১১ বছরের কিশোরের। পুত্রহারা মায়ের কান্নাই বলে দিল, রাজ্যে চিকিৎসা ব্যবস্থা কোথায় এসে নেমেছে। ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে নিজেই স্কুটি চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন নুরজাহান পাইক। সল্টলেকের ২ নম্বর গেটের কাছে একটি বাস এসে সজোরে ধাক্কা মারে স্কুটিতে। টাল সামলাতে পারেননি। রাস্তায় ছিটকে পড়েন তিনি। কিছুটা দূরে ছিটকে পড়ে ছেলে আয়ুষ পাইকও (১১)। ছেলে আয়ুষের আঘাত গুরুতর ছিল। ওর জ্ঞান ছিল না। নুরজাহান জানান, কাছাকাছি পুলিশ থাকলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। ছেলে প্রায় ১৫ মিনিট রাস্তায় পড়ে ছিল।
সদ্য পুত্রহারা মা নুরজাহান বলেন, "স্থানীয় এক জন অটোচালক আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন। তাঁর অটোয় করে ছেলেকে প্রথমে উল্টোডাঙার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ওর মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু ওই নার্সিংহোমে ছোটদের আইসিইউ নেই। তাই তারাই অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা করে দেয়। সেখান থেকে ছেলেকে নিয়ে আমরা ফুলবাগানের বি সি রায় শিশু হাসপাতালে যাই। কিন্তু সেখানে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা কিছুতেই ছেলেকে ভর্তি নিতে চাননি। ওঁরা জানিয়েছিলেন, ছেলের মাথায় যে ধরনের আঘাত লেগেছে, সেই ধরনের আঘাতের চিকিৎসার পরিকাঠামো বি সি রায়ে নেই।"
আরও পড়ুনঃ নিমেষে ধ্বংস হবে হাজার কিমি দূরের যুদ্ধজাহাজ, ডিআরডিও-র নয়া মিসাইলের পরীক্ষা শীঘ্রই
নুরজাহান বলেন, ‘ওকে শিশু হাসপাতালে যখন নিয়ে গিয়েছি, ও তখনও বেঁচে ছিল। কিন্তু কেউ দেখল না। একজন পুলিশ আধিকারিককে ফোন করেছিলাম যাতে ওখানে ভর্তি করানো যায়, কিন্তু তাও কেউ এগিয়ে এল না। শেষে বেলেঘাটার একটি নার্সিংহোমে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে জানান, ছেলে আর নেই। আমার বাচ্চাটা চলেই গেল।’ প্রথম থেকে চিকিৎসা পেলে হয়তো বাঁচানো যেত আয়ুষকে, এমনই দাবি পরিবারের। কিন্তু রাজ্যে চিকিৎসা ব্যবস্থা বেহাল। কোন হাসপাতালে কী রয়েছে তা জানতে জানতেই সময় চলে যায়। পরিষেবা পেতে হয়রানির শিকার হতে হয়। শুধু স্বাস্থ্যক্ষেত্রই নয় প্রশাসনও নিরুত্তর। যে এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটে, সেখানে কোনও স্পিড ব্রেকার নেই। গাড়ি খুব দ্রুত গতিতে চলে। ট্র্যাফিক পুলিশকেও তেমন দেখা যায় না। মাঝেমধ্যে সিভিক ভলান্টিয়ারদের দেখা যায়। দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশে একাধিক স্কুল রয়েছে। রাস্তার পাশে কোনও ফুটপাত নেই। তাই পথচারীদের বাধ্য হয়ে রাস্তার উপর দিয়ে হাঁটতে হয়। রাজ্যে এখন জীবন বাজি রেখেই পথে বেরোতে হয় সাধারণ মানুষকে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Whatsapp, Facebook, Twitter, Telegram এবং Google News পেজ।