২০০৫-২০০৬ নাগাদ রেলমন্ত্রী ছিলেন লালুপ্রসাদ যাদব, সেসময় বীরভূম জেলাকেন্দ্রিক ১২২ কিলোমিটার নতুন লাইন সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়
প্রতীকী ছবি
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজ্যে মোট ৪৪টি প্রকল্প আটকে রয়েছে রেলের (Indian Railways)। অভিযোগ রাজ্য সরকারের অসহযোগিতা এবং জমি জটিলতার কারণে এই প্রকল্পগুলির বাস্তবায়ন করতে পারছে না রেল। এরমধ্যে ১৩টি প্রকল্প রয়েছে যেগুলিতে নতুন লাইন পাতার কথা। রেল সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পগুলির মোট বাজেট ধরা হয়েছে ৯,২২৫ কোটি টাকা। জানা গিয়েছে, মোট ১০৪৯ কিমির এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত রেল কিন্তু জমি জটের কারণেই নাকি এই প্রকল্পগুলি এগোচ্ছেনা। রেলের দাবি, কয়েকটি প্রকল্পের জন্য জমি কিনতে রাজ্য সরকারকে টাকাও দেওয়া হয়েছিল! কিন্তু রাজ্য সরকার কোনও জমি অধিগ্রহণ করতে পারেনি। রেল আবার রাজ্য সরকারকে চিঠি দেয় ওই টাকা ফেরতের জন্য। রেল (Indian Railways) বলছে, রাজ্য সরকারের এমন অসহযোগিতার কারণে তারা প্রকল্প আপাতত বন্ধ রেখেছে।
২০০৫-২০০৬ নাগাদ রেলমন্ত্রী ছিলেন লালুপ্রসাদ যাদব, সেসময় বীরভূম জেলাকেন্দ্রিক ১২২ কিলোমিটার নতুন লাইন সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়। প্রকল্পের মোট বাজেট ধরা হয় ১৪০২ কোটি টাকা। ঠিক হয় এই প্রকল্পের মাধ্যমে জোড়া হবে চিনপাই-সাঁইথিয়া (৩১ কিমি), চৌরিগাছা-সাঁইথিয়া ভায়া কান্দি (৫৬ কিমি) এবং প্রান্তিক-সিউড়ি (৩৪ কিমি)। গত ১৮ বছর ধরে একমাত্র সম্পন্ন হয়েছে চিনপাই-সাঁইথিয়া প্রকল্পটি। বাকি প্রকল্পগুলি আপাতত বিশ বাঁও জলে! রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিবিজড়িত শহর বোলপুর, এখানকার বিশ্বভারতীর আন্তর্জাতিক খ্যাতি রয়েছে। দেশ বিদেশ থেকে ছাত্র ছাত্রী গবেষকদের ভিড় সারাবছর ধরেই থাকে বোলপুরে। অন্যদিকে সিউড়ি হল জেলার সদর শহর। জেলার এই দুই গুরুত্বপূর্ণ শহরকে রেল মানচিত্রে জোড়ার জন্যই এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু রাজ্য সরকারের জমিনীতির কারনে তা আজ ঠাণ্ডা ঘরে।
সিউড়ি শহরের বাসিন্দা সুব্রত সরকার বলেন, রাজ্য সরকার জমি দিতে পারছেনা বলেই আটকে রয়েছে সিউড়ি থেকে প্রান্তিক অবধি রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ। বীরভূমের সদর শহর সিউড়ি হোক বা বোলপুর, প্রশাসনিক বৈঠক সহ যেকোনও সরকারি অনুষ্ঠানে এই দুই শহরে হাজির থাকেন জেলার দুই সাংসদ , অথচ দুই শহরকে রেল মানচিত্রে জোড়ার কথা কখনও তাঁরা সংসদে দাঁড়িয়ে বলেননি। একমাত্র ব্যতিক্রমি হলেন, সিউড়ি বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। সিউড়ি থেকে শিয়ালদহ অবধি নতুন ট্রেন চালু তিনিই করেছেন, রেলমন্ত্রীকে বলে। তিনি এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন যাতে সিউড়ি-প্রান্তিক প্রকল্প বাস্তবায়িত হয় কিন্তু আসল জট তো জমিতে, অধিগ্রহণের দায়িত্ব রাজ্য সরকারের।
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-১০): আপাতত ঠাণ্ডা ঘরে আরামবাগ-বোয়াইচণ্ডী রেলপথ সম্প্রসারণের কাজ
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-৯): ১৩ বছর ধরে আটকে দিঘা-জলেশ্বর প্রকল্পের কাজ
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-৮): থমকে রয়েছে কালিয়াগঞ্জ বুনিয়াদপুর রেলপ্রকল্প
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-৭): তেরো বছরেও সম্পূর্ণ হয়নি বালুরঘাট-হিলি রেলপ্রকল্প
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-৬): একযুগ অতিক্রান্ত! বিশ বাঁও জলে হাসনাবাদ-হিঙ্গলগঞ্জ রেলপ্রকল্প
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-৫): দক্ষিণ চব্বিশ পরগনায় বিশ বাঁও জলে ৩ প্রকল্প
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-৪): থমকে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ৪ প্রকল্প
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-৩): প্রায় ৪০ বছরেও সম্পূর্ণ হল না উত্তর দিনাজপুর জেলার ৩ প্রকল্প
জটে জমি আটকে রেল (পর্ব-২): প্রায় ৫০ বছরেও শেষ হলনা হুগলির ৩ প্রকল্প
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।
Tags: