শুভেন্দুর অভিযোগ, নলের মুখে যে ফেরুল লাগানো হয় তাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারা ৫০০ কোটি টাকার 'কাটমানি' নিয়েছে
শুভেন্দু অধিকারী।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে টেন্ডার দুর্নীতির অভিযোগ আনলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। কেন্দ্রের জল জীবন মিশন (Jal Jeeban Mission) নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন তিনি। এই প্রকল্পের আওতায় কাজের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ১ হাজার ৮৬ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। প্রায় ৫০০ কোটি টাকার কাটমানি নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর।
শুভেন্দুর চাঞ্চল্যকর অভিযোগ, ‘‘রাজ্য সরকার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি নলের মধ্য দিয়ে জল পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্পে বড়সড় দুর্নীতি করেছে।’’ শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, নলের মুখে যে ফেরুল লাগানো হয় তাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথম সারির নেতারা ৫০০ কোটি টাকার 'কাটমানি' নিয়েছে হাওড়া সদর ও সাঁকরাইলের নির্দিষ্ট চারটে এজেন্সির কাছ থেকে। এদিন নিজাম প্যালেসে সাংবাদিক সম্মেলন করে শুভেন্দু বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন সব ঘরে পরিশ্রুত জল যাবে। জল জীবন মিশন নামে কেন্দ্রের যোজনা আছে। কিন্তু রাজ্য এটা কোথাও উল্লেখ করে না। এই নিয়ে আমি আগের রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছিলাম। এদিকে জল জীবন মিশনে ১০০ শতাংশ ফান্ড দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। এতে রাজ্য সরকারের কোনও ফান্ড থাকে না।”
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর চিঠি! রাতারাতি ৬টি মেডিক্যাল কলেজের উদ্বোধন বাতিল রাজ্যের
হাওড়া জেলার একাধিক সংস্থা ফেরুল সাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে একচ্ছত্র আধিপত্য খাটিয়েছে বলে অভিযোগ শুভেন্দুর। তালিকায় রয়েছে বালাজি ট্রেডার্স, এ কে ইন্ডাস্ট্রিজ, ইলেকো এন্টারপ্রাইজ, সাইবাবা এন্টারপ্রাইজ, প্রীতি এন্টারপ্রাইজ নামে কয়েকটি সংস্থাকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, টেন্ডার দেওয়ার যে নিয়ম তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ শুভেন্দুর। সেখানে কিছু গোলযোগের অভিযোগ করেছেন তিনি।
নলবাহিত জলের ট্যাপের মুখে ফেরুল লাগানো হয়। এই ফেরল কেনার সময়েই বড় দুর্নীতি হয়ে গিয়েছে বলে দাবি শুভেন্দুর। রীতিমতো একাধিক ডকুমেন্ট হাতে নিয়ে শুভেন্দুর দাবি, ফেরুলের এক একটির বাজারের দাম ২১৩ টাকা। কিন্তু, নথিতে দেখা যাচ্ছে কেনা হয়েছে ৫৭০ টাকায়। একাধিক টেন্ডারের তথ্য হাতের সামনে এনে শুভেন্দুর দাবি, ৩২ টা টেন্ডারে কোথাও ২৭ হাজার ইউনিট, কোথাও ৩২ টেন্ডারে ২৪ হাজার ইউনিট, ৩২টি টেন্ডারে ৭৩ হাজার ইউনিট ফেরুল কেনা হয়েছে। প্রতিটাই কেনা হয়েছে ৫৭০ টাকা দরে। এভাবে তৃণমূল নেতারা প্রায় ৫০০ কোটি টাকা দলের শীর্ষস্তরে পৌঁছে দিয়েছে। তিনি বলেন, গরু, কয়লা, পাথর পাচারের টাকা যেখানে পৌঁছয়, সেখানেই পৌঁছেছে এই টাকাও।
শুভেন্দু দাবি করেন, ২জি স্পেকট্রাম, কমনওয়েলথ গেমসের মতো দুর্নীতি হয়েছে। আমি আজই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র শেখাওয়তকে চিঠি লিখব। এই দুর্নীতির তদন্তের অনুরোধ করব তাঁকে। ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত শুরু না হলে আদালতে জনস্বার্থ মামলা করব।