দিল্লি গেলে যে সমস্যা হবে এবং তাতে সমস্যা যে রাজ্য সরকারেরও, এই ঘটনার ফলে সেটাই কার্যত প্রমাণিত হচ্ছে। এ ভাবে দিল্লি যাওয়া ঠেকানোর চেষ্টা করলে সমস্যা বাড়তেই থাকবে।
পুলিশ হেফাজতে অনুব্রত মণ্ডল।
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: ডাকাতকে বাঁচাতে চোরেদের সরকার যা করছে তাতে তাদের বিপদ বাড়ছে বই কমছে না। বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) পুলিশ হেফাজতে নেওয়া প্রসঙ্গে এমনই মন্তব্য করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মঙ্গলবার দিল্লি থেকে ফিরে কলকাতা বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু বললেন, ‘‘ শাসক দলের নেতারা যারা দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত তারা কেউ পার পাবে না। তিহার জেল যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। অপেক্ষা করুন।’’ প্রসঙ্গত, বিরোধীদের অভিযোগ, অনুব্রত মণ্ডলের দিল্লি যাত্রা আটকাতেই পুরনো ঘটনায় এফআইআর দায়ের করে অনুব্রতকে হেফাজতে নিয়েছে রাজ্য পুলিশ।
সোমবারই অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য ইডিকে ( ED ) অনুমতি দিয়েছিল দিল্লির রাউস অ্য়াভিনিউ কোর্ট। আর ঠিক সেইদিনই এক বছর আগের খুনের চেষ্টার অভিযোগে অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে মামলা করেন এই তৃণমূলকর্মী। যার প্রেক্ষিতে বীরভূমের ( Birbhum ) জেলা তৃণমূল সভাপতিকে মঙ্গলবার ৭ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠিয়েছে আদালত। এর ফলে আপাতত অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে যেতে পারছে না ইডি।
দিল্লি এড়ানোর চেষ্টা করতে গিয়ে কি নিজের জালে নিজেই ক্রমশ জড়িয়ে পড়ছেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা, এমনটাই মত আইনজীবীদের। তাঁদের পর্যবেক্ষণ, পুলিশি হেফাজতে থাকলে অনুব্রতকে এখনই দিল্লি নিয়ে যেতে পারবে না ইডি। এবং সেই সময়ের ফাঁকে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানাতে পারবেন অনুব্রতের কৌঁসুলিরা। তবে এর ফলে কার্যত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতেই অস্ত্র তুলে দেওয়া হল বলে আইনজীবী শিবিরের বড় অংশের অভিমত। তাঁদের মতে, অনুব্রত যে প্রভাবশালী, সেটা বোঝাতে এ বার কোর্টে এই ঘটনাকেই হাতিয়ার করতে পারেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কৌঁসুলিরা। এটাও বলা হবে যে, তাঁকে ঠেকাতে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসনও তৎপর! দিল্লি গেলে যে সমস্যা হবে এবং তাতে সমস্যা যে রাজ্য সরকারেরও, সেটাই কার্যত প্রমাণিত হচ্ছে। তবে এ ভাবে দিল্লি যাওয়া ঠেকানোর চেষ্টা করলে সমস্যা বাড়তেই থাকবে। এতে কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থারই হাত শক্ত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: পুলিশের আড়ালে পুলিশমন্ত্রীই কী এবার সান্টা ক্লজ অনুব্রত মণ্ডলের?
গরুপাচারকাণ্ডে রাউস অ্যাভিনিউ আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ফের দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হলেন অনুব্রত মণ্ডল। সোমবার অনুব্রতকে দিল্লি নিয়ে গিয়ে জেরা করার অনুমতি দেয় রাউস অ্যাভিনিউ আদালত। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ফের দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল অনুব্রত। কিন্তু এতে খুব একটা লাভ হবে না বলেই মনে করছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
পুলিশ হেফাজতে থাকা অনুব্রতকে কীভাবে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হবে? পুরো বিষয়টা নিয়ে আইনি পরামর্শ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইতিমধ্যে আসানসোল জেল কর্তৃপক্ষকে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের নির্দেশ জানানো হয়েছে। সেই নির্দেশনামার কপি আসানসোল জেলে পৌঁছে দেওয়া হবে। ২৭ ডিসেম্বর, ফের দুবরাজপুর আদালতে তোলা হবে অনুব্রতকে। ওইদিন ইডি-র অফিসাররা আদালতে উপস্থিত থাকবেন কি না, তা নিয়েও আইনি পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে বলে ইডি সূত্রে জানানো হয়েছে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook এবং Twitter পেজ।