অনশনের ৫৬ ঘণ্টা, ধর্নার ৭৭ ঘণ্টা পার। সাদা কাপড় গায়ে দিয়ে শুয়ে নিজেরাই বলছেন, তাঁরা জীবন্ত লাশ!
TET Scam
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের মাঝেই (TET Scam) প্রাথমিক পর্ষদ চত্বরে পুলিশকে ১৪৪ ধারা কার্যকরের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। ৪ নভেম্বর পর্যন্ত হাইকোর্টের অন্তর্বতী নির্দেশ বহাল থাকবে বলে জানানো হয়েছে আদালতের তরফে। বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রাথমিক পর্ষদ অফিসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কর্মীদের অফিসে নিরাপদে ঢোকা-বেরোনো নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
অন্যদিকে সল্টলেকের করুণাময়ীতে টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের (TET Scam) আজ চতুর্থ দিন। অনশনের ৫৬ ঘণ্টা, ধর্নার ৭৭ ঘণ্টা পার। কিন্তু এখনও নিজেদের দাবিতে অনড় ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ নন-ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা। আবার এদিন ২০১৪ সালের টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের পাশাপাশি বিক্ষোভে বসেছেন ২০১৭-র প্রাথমিক টেট চাকরিপ্রার্থীরাও। তাঁরা আজ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসের সামনে যেতে চাইলে তাঁদের বাধা দেয় পুলিশ ও তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও শুরু হয়। ফলে করুণাময়ী যাওয়ার রাস্তায় বসে পড়েই বিক্ষোভ শুরু করেন ২০১৭-র টেট উত্তীর্ণরা।
আরও পড়ুন: ইডির তলবে শেষ পর্যন্ত হাজিরা দিতেই হল তাপস মণ্ডলকে, চলছে জেরা
এর আগেই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে, ২০১৪ টেট উত্তীর্ণদের আন্দোলন অবৈধ। তাঁদের আবার পদ্ধতি মেনে আবেদন ও ইন্টারভিউয়ে বসতে হবে। অন্যদিকে আন্দোলনকারীদের দাবি, তাঁরা দু’বার ইন্টারভিউ দিয়েছেন, ফের ইন্টারভিউ দিতে নারাজ। ফলে এই দাবি নিয়েই তাঁরা আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রায় তিনদিন ধরে তাঁরা অনশনে বসায় একাধিক আন্দোলনকারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তবুও তাঁরা তাঁদের দাবিতে অনড়। তবে আজ আন্দোলনের এক অন্য দৃশ্যই দেখা গেল। দুদিন ধরে তাঁরা মুখে কিছু তোলেননি, আবার আজ তাঁদের রাস্তায় লাশের মত সাদা চাদরে ঢেকে শুয়ে থাকতে দেখা গেল। সাদা কাপড় গায়ে দিয়ে শুয়ে নিজেরাই বলছেন, তাঁরা জীবন্ত লাশ!
আবার ২০১৭-র টেট উত্তীর্ণ ও প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত প্রার্থীরা ২০১৪-এর উত্তীর্ণদের আন্দোলনের বিরোধিতা করে দাবি করেছেন, তাঁদের সঙ্গে ২০১৪ সালের চাকরিপ্রার্থীদের একসঙ্গে পরীক্ষা হলে তাঁরা বঞ্চিত হবেন। ২০১৭ সালের টেট উত্তীর্ণ আন্দোলনকারীদের যুক্তি, ২০১৪-র টেট প্রার্থীরা দু’বার ইন্টারভিউ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন। তাহলে ফের কেন তাদের সুযোগ দেওয়া হবে? ফলে এই দুপক্ষের আন্দোলনের জেরে করুণাময়ী সহ পুরো রাজ্য উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। আবার এই দুই আন্দোলনের ফলে যাতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কর্মীদের কাজকর্মে কোনও ব্যাঘাত না ঘটে, সেটা নিশ্চিত করতেই নির্দিষ্ট এলাকায় বহাল থাকা ১৪৪ ধারা কার্যকরে পুলিশকে ছাড় দেয় কলকাতা হাইকোর্ট।