নিজেরাই ৩০০ রাখি বানিয়ে রাখিবন্ধন উৎসবে হাজির দৃষ্টিহীন ভাইবোনেরা
রাখিবন্ধন উৎসবে দৃষ্টিহীন ভাইবোনেরা। নিজস্ব চিত্র
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দৃষ্টিহীনদের সৃষ্টিশীলতা। পবিত্র রাখিবন্ধন দিবস ছিল বুধবার। আর এই পবিত্র দিনে সমাজের দৃষ্টিহীন ভাইবোনেরাও শামিল হলেন। সাধারণ মানুষদের সঙ্গে মিশে গিয়ে পথচলতি মানুষকে রাখি পরিয়ে উৎসব পালন করলেন তাঁরা। না, বাজার থেকে কিনে আনা নয়। নিজেরাই ৩০০ রাখি বানিয়ে এনে রাখিবন্ধন উৎসবে শামিল হলেন। এদিন হুগলি (Hooghly) জেলার প্রাণকেন্দ্র চুঁচুড়া ঘড়ির মোড়ে নিজেদের তৈরি রাখি নিয়ে উপস্থিত ছিলেন প্রায় ৩৫ জন দৃষ্টিহীন ভাইবোন। এঁদের একত্রিত করে নিয়ে এসেছিলেন রবি পাল নামে এক সমাজসেবী। পুলিশ, সংবাদ জগতের প্রতিনিধি, শিক্ষক, আইনজীবী প্রায় প্রত্যেক পেশার মানুষকে দেখা যায় এদিন হাসিমুখে রাখি পরতে।
সুযোগ থাকলে কাজ দিন, বললেন দৃষ্টিহীন শিবানী
শিবানী পাল (Hooghly) নামে এক দৃষ্টিহীন মহিলা বলেন, আমরা হয়তো দেখতে পাই না আপনাদের মতো। কিন্তু আমরা অনুভব এবং উপভোগ করতে চাই। আজকের এই পবিত্র দিনে রাখি পরানোর পাশাপাশি ভাইদের কাছে তাঁর আবেদন, আমরা দৃষ্টিহীন বলে খুবই অসহায় ভাবে আমাদের দিন কাটে। সুযোগ থাকলে আমাদের কিছু কাজ দিন, যাতে আমরা ভালোভাবে থাকতে পারি। পথচলতি অনেক মানুষই রাখি গ্রহণ করার পর দৃষ্টিহীনদের উপহার স্বরূপ কিছু অর্থ দেন।
এখানেই শেষ নয়, এরপর পুজোয় ঠাকুর দেখা (Hooghly)
রবি জানান, জেলার প্রায় ৭০ জন দৃষ্টিহীনকে তিনি একত্রিত করে তাঁদের নিয়ে বিভিন্ন রকম বিনোদনমূলক ও সমাজসেবামূলক কাজ করে থাকেন। তিনি আরও জানান, এই দৃষ্টিহীন মানুষরা কেউ ট্রেনে হকারি করেন, কেউ ভিক্ষাবৃত্তি করেন। তাঁরা নিজেদের উপার্জিত অর্থ সঞ্চয় করে প্রায় তিনমাস ধরে এই ৩০০ রাখি বানিয়েছেন। তাঁদের একটাই উদ্দেশ্য, সমাজের মুলস্রোতের সঙ্গে মিশে গিয়ে আনন্দ উৎসব উপভোগ করা। ব্যান্ডেল সুভাষনগরের বাসিন্দা রবি ছোটখাট ব্যবসা করেন। তিনি বলেন, আগামী দুর্গাপূজার ষষ্ঠীর দিন এই ৭০ জন দৃষ্টিহীনকে নিয়ে আমি ঠাকুর দেখাবো টোটো করে। এভাবেই সমাজের এই দৃষ্টিহীন, সৃষ্টিশীল মানুষগুলির জীবন আগামী দিনে আরও উপভোগ্য করে তোলার শপথ নিয়েছেন রবি (Hooghly)।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।