কুড়মি সমাজের আন্দোলনকে বেআইনি ঘোষণা হাইকোর্টের, প্রত্যাহার রেল অবরোধ
হাইকোর্ট (বাঁদিকে), কুড়মি আন্দোলন (ডানদিকে) (ফাইল ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: জঙ্গলমহলে কুড়মি সমাজের বিভিন্ন দাবিতে লাগাতার রেল ও রাস্তা রোকো আন্দোলনকে (Kurmi Agitation) বেআইনি ঘোষণা করল কলকাতা হাইকোর্ট। এই আন্দোলনের নামে জনজীবন স্তব্ধ করা আটকাতে পুরুলিয়া চেম্বার অব কমার্স-এর জনস্বার্থ মামলায় মঙ্গলবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ এই আন্দোলনকে বেআইনি বলে জানায়। আদালতের নির্দেশ মিলতেই আন্দোলন প্রত্যাহার ঘোষণা করে কুড়মি সমাজ।
আদালতের নির্দেশ, এই রেল ও রাস্তা রোকো কোনওভাবে সাংবিধানিক নয়। আন্দোলনের (Kurmi Agitation) নামে এভাবে রেল, রাস্তা বন্ধ করা যায় না। অবিলম্বে তা বন্ধ করতে পদক্ষেপ করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ নিয়ে প্রয়োজনে সেখানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এখনই কেন্দ্রীয় বাহিনীর জন্য কেন্দ্রের কাছে আবেদন করতে পারবে রাজ্য। একই সঙ্গে, প্রয়োজনে প্রতিবেশী রাজ্যের থেকেও এলাকার নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপারে সাহায্য নেওয়া যাবে। এছাড়াও আদালত জানিয়েছে, আরপিএফ ও জিআরপিকে প্রয়োজনে ওই রেলের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখতে হবে। জেলাগুলির গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় আরও বাহিনীর ব্যবস্থা রাখতে হবে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, কোনওভাবে নাগরিকের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করা যাবে না। এই রেল ও রাস্তা অবরোধ শুধু রাজ্যের পুরুলিয়া সহ চার-পাঁচটা জেলায় নয়, দুর্ভোগ বাড়ে প্রতিবেশী রাজ্যেরও। কোনও ভাবে এই নির্দেশ অমান্য করে রেল ও রাস্তা বন্ধের চেষ্টা হলে বা কোনও আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যার পরিস্থিতি হলে সামাল দেওয়ার জন্য বাহিনী রাখতে হবে রাজ্যকে। তবে বল প্রয়োগ না করে কীভাবে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়, সেই 'চেষ্টা করতে হবে রাজ্যকে।
আদালতের নির্দেশ প্রসঙ্গে কুড়মি সমাজের মুখ্য উপদেষ্টা অজিত প্রসাদ মাহাত বলেন, আমরা পুরুলিয়া সহ জঙ্গলমহলের চার জেলায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন (Kurmi Agitation) করতাম। অথচ জলকামান, বিশাল বাহিনী দিয়ে যেন যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছিল পুলিশ। আমরা আপাতত অবরোধ কর্মসূচি এই রাজ্য থেকে তুলে নিচ্ছি। কিন্তু, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশায় যথারীতি কর্মসূচি পালন করব। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর মানবাজারে কেন্দ্রীয় কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব।
কুড়মিদের আন্দোলন (Kurmi Agitation) হবে ধরে নিয়ে বুধবার ৭১টি ট্রেন বাতিল করার কথা জানিয়েছিল দক্ষিণ-পূর্ব রেল। একইসঙ্গে পাঁচটি ট্রেন ঘুরপথে চালানোর কথা ঘোষণা করা হয়েছিল। যদিও কুড়মিদের আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণার পর দক্ষিণ-পূর্ব রেল জানিয়েছে, যেসব ট্রেন বাতিল বা যাত্রা সংক্ষেপের কথা জানানো হয়েছিল, সেগুলি নির্ধারিত রুটে চলাচল করবে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।