তৃণমূল নেতা খুনে পরিবারের এক সদস্য জড়িত, তদন্তে আর কী সামনে এল?
জয়নগর থানা, নিহত তৃণমূল নেতা (ইনসেটে)(সংগৃহীত ছবি)
মাধ্যম নিউজ ডেস্ক: দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের (Joynagar) তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করের খুনের ঘটনা নিয়ে জেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই এই খুনের ঘটনায় মাস্টার মাইন্ড আনিসুর লস্করকে নদিয়া থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার আগে ঘটনাস্থল থেকে শাহরুল নামে আরও এক অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। এরইমধ্যে জয়নগর থানার আইসি রাকেশ চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর জায়গায় বারুইপুর গোয়েন্দা পুলিশের আধিকারিক পার্থসারথি পালকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
তৃণমূল নেতার উপর হামলা ঘটনা পুলিশ আগে থেকে জানত। জানা গিয়েছে, তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্করের উপর হামলার আশঙ্কার বিষয়ে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে মাসখানেক আগে জয়নগর থানাকে সতর্কও করা হয়। তারপরও থানার পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ। সেই কারণেই কী আইসি আচমকাই বদলি করে দেওয়া হল। যদিও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একে লোকসভা নির্বাচনের আগে রুটিন বদলি বলেই বলা হচ্ছে।
ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা গিয়েছে, জয়নগরে (Joynagar) তৃণমূল নেতা খুনের দেড় মাস আগে থেকে এই পরিকল্পনা করা হচ্ছিল। আনিসুরই ছিল পরিকল্পনার মুল মাথা। তবে অর্থ যোগান দেওয়ার ক্ষেত্রে উঠে আসছে আরও দু'জনের নাম, তাঁদের মধ্যে একজন সইফুদ্দিনের পরিবারেই সদস্য। যার সাট্টার ঠেক ছিল বলে জানা গিয়েছে। সেই সাট্টার ঠেক বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছিল সইফুদ্দিনের প্রভাবে। পুলিশ সূত্রের খবর, এ ছাড়া সন্দেহের রয়েছেন বামনগাছি অঞ্চলের একজন ব্যবসায়ী যার ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল সইফুদ্দিনের হুমকি এবং নানা কর্মকাণ্ডে। তবে তাঁরা দু'জনেই ঘটনার পর থেকে পলাতক। তাঁদের সন্ধানে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গিয়েছে আনিসুরের সঙ্গে বড় ভাইয়ের'যোগাযোগ ছিল। দু'জনেই সিপিএমের কর্মী। বড়ভাই খুনের জন্য দক্ষ শাহরুলকে আনিসুরের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেন। গুলি করার পর কিছুটা বাইকে তার পর গ্রামবাসীরা ধাওয়া করলে রাস্তার পাশ দিয়ে ধানক্ষেত ধরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন শাহরুল। তখনই ফোন করে সে আনিসুরকে জানায় যে টার্গেট কমপ্লিট হয়ে গিয়েছে। ঘটনায় তিনজন ধরা পড়লেও আরও ৭-৮ জন এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আছে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৩ নভেম্বর সকালে জয়নগরের (Joynagar) বামনগাছি পঞ্চায়েতের বাঙালবুড়ির মোড়ে নমাজ পড়তে যাওয়ার সময় খুন হন সইফুদ্দিন। মসজিদের সিঁড়িতে সবে পা রেখেছিলেন তিনি, এমন সময়ে তাঁর ঘাড়ে বন্দুক ঠেকিয়ে গুলি চালিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। কিন্তু পালানোর সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ায় দু'জন ধরা পড়ে যান স্থানীয়দের হাতে। অভিযোগ, সাহাবুদ্দিন নামে তাঁদের এক জনকে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে। অন্য জন, শাহরুল শেখকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে গ্রেফতার করা হয় আনিসুর লস্কর এবং কামালউদ্দিন ঢালি নামে আরও দুই অভিযুক্তকে।
দেশের খবর, দশের খবর, সব খবর, সবার আগে পেতে ফলো করুন আমাদের Facebook, Twitter এবং Google News পেজ।